আজকাল ওয়েবডেস্ক: জয়পুরের সরকারি সাওয়াই মান সিং (এসএমএস) হাসপাতালের আইসিইউতে রবিবার রাতে বিধ্বংসী আগুন লাগার পর মৃত্যু হয়েছে ছ'জনের। তবে হাসপাতাল সুপার সুশীল ভাটির দাবি, আগুন নয়, মৃত্যু হয়েছে কারণ ওই ছ'জন গুরুতর অসুস্থ ছিলেন। খবর অনুযায়ী আগুনের ফলে তাঁদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়, যার জেরেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসার অভাবে তাঁদের প্রাণ যায়।
ভাটি জানান, "এই ছ'জনের কারও মৃত্যু আগুনে হয়নি। তাঁরা সকলেই নিউরোলজিক্যাল সমস্যায় ভুগছিলেন এবং আইসিইউ-র মত সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা ব্যবস্থার মধ্যে ছিলেন। আগুন লাগার ফলে তাঁদের সেখান থেকে সরিয়ে অন্যত্র রাখতে হয়, এই পরিস্থিতির কারণেই তাঁদের মৃত্যু হয়েছে।"
এ বিষয়ে সংবাদ সংস্থা-কে ভাটি আরও বলেন, "আমি আবার বলছি, কেউ আগুনে মারা যাননি। আইসিইউ-তে আগুন লাগে, ফলস্বরূপ প্রচুর ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে চারিদিকে। কাজেই আমরা সঙ্গে সঙ্গে রোগীদের অন্যত্র স্থানান্তর করি। আলাদা করে আগুনে কেউ আহত হননি।"
পুনরায় প্রশ্ন করা হলে তিনি স্পষ্ট বলেন, "ওঁরা আগুনে মারা যাননি। ওঁরা এমনিতেই সঙ্কটজনক অবস্থায় ছিলেন। আগুন এবং গ্যাসের কারণে ওঁদের এক আইসিইউ থেকে আর এক জায়গায় স্থানান্তর করতে হয়েছিল, সেটাই মূল কারণ।"
ভাটির দাবি, যাঁরা বেঁচে আছেন, তাঁদের চিকিৎসা ঠিকঠাকই চলছে। নতুন যে আইসিইউ-তে তাঁদের স্থানান্তর করা হয়েছে, সেখানে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সিলিন্ডার ও ভেন্টিলেটরের ব্যবস্থা রয়েছে
রবিবার গভীর রাতে এসএমএস হাসপাতালে আগুন লাগে।খবর অনুযায়ী, একটি শর্ট সার্কিট থেকেই আগুনের সূত্রপাত।
হাসপাতালের ট্রমা ইনচার্জ, ড: অনুরাগ বাবু জানান, আগুন লাগার সময় আইসিইউ-তে মোট ১১ জন রোগী ছিলেন। তাঁদের সকলেই স্নায়বিক রোগে আক্রান্ত ছিলেন। এমনকী অত্যন্ত আশঙ্কাজনক অবস্থায় ছিলেন তাঁরা।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, শর্ট সার্কিট হওয়ার দরুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে আগুন ও ধোঁয়া। আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু হয় হাসপাতালের অন্যান্য রোগী এবং আত্মীয়-পরিজনদের মধ্যে। অনেকেই অভিযোগ করেছেন, হাসপাতালের কর্মীরা আগুন লাগার আগে থেকেই এই ব্যাপারে অবগত ছিলেন। কিন্তু বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে না দেখে হেলাফেলায় উড়িয়ে দেন।
অভিযোগ আরও, আগুন লাগার পরও সঠিক সময়ে সক্রিয় হয়নি অ্যালার্ম সিস্টেম, ছিল না কোনও অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র। সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ, আগুন লাগার পর হাসপাতালের একাংশ কর্মী নাকি রোগীদের ফেলে রেখে নিজেরাই পালাতে শুরু করেন।
পাশাপাশি বিপরীত দাবিও উঠে এসেছে। এক ওয়ার্ডবয়ের বক্তব্য, "আমরা তখন অপারেশন থিয়েটারে ছিলাম। ভিতরে গিয়ে অন্তত তিন-চারজনকে বের করে আনতে পেরেছিলাম। কিন্তু আগুন ও ধোঁয়া এতটাই ছড়িয়ে পড়ে যে পরে আর ভিতরে ঢোকা সম্ভব হয়নি।"
পরিস্থিতি পরিদর্শনে হাসপাতাল পৌঁছান রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মা। তিনি ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তে উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন। কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন মেডিক্যাল দপ্তরের কমিশনার ইকবাল খান।
