আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিহারে ফের খুন। স্ত্রী তাঁর স্বামীকে নির্মমভাবে হত্যা করে৷ সূত্রে জানা গিয়েছে ৩০ বছর বয়সী এক যুবককে বিহারের সমস্তিপুর জেলার লাগুনিয়া রঘুকান্ত গ্রামে তাঁর স্ত্রী এবং স্ত্রীর প্রেমিক মিলে হত্যা করেছে। মৃত যুবকের নাম সোনু ঝা। শনিবার ভোরে নিজ বাড়িতে তাঁর লাশ পাওয়া যায়। সূত্রে খবর সোনুর বাবা প্রথমে তাঁর মৃতদেহ খুঁজে পান।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটে মুফাসসিল থানার অন্তর্গত অঞ্চলে। পুলিশ জানিয়েছে, সোনুর দেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। পরে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, এই ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার জেরে সোনুর স্ত্রী স্মিতা ঝাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে স্মিতা ঝা স্বীকার করেছেন যে তিনি তাঁর স্বামীকে হত্যা করেছেন। কীভাবে ঘটনাটি ঘটেছে, তা বিস্তারিতভাবে জানিয়েছেন অভিযুক্ত যুবতী। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, স্মিতা বলেন তিনি ও তাঁর স্বামীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। তাঁর প্রেমিক হরিওম তাঁদের ঝামেলায় সহ্য করতে পারতেন না। বিশেষত সোনু তাঁকে মারধর করতেন বলেই দাবি করেন অভিযুক্ত। তাই তাঁরা দুজন মিলে সোনুকে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন।
সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে ঝগড়ার পর স্মিতা হরিওমকে বাড়িতে ডাকেন। দুজন মিলে সোনুকে প্রথমে মাথায় আঘাত করে অচেতন করে দেন। এরপর তাঁরা দুজনে মিলে তাঁকে মারধর করেন। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট করেন এবং শেষ পর্যন্ত বৈদ্যুতিক তার দিয়ে গলা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।
সোনুর বাবা জানান, সোনু পরিবার সামলাতেন। রিকশা চালিয়ে পরিবারের ভরণপোষণের ব্যবস্থা করতেন। শুক্রবার রাতে বাড়ি ফিরে দরজার কাছেই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। পরদিন সকালে তাঁর মৃতদেহ দেখতে পান পরিবারের সদস্যরা। তৎক্ষণাৎ পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
স্মিতা ঝা কে দ্রুত গ্রেপ্তার করা হলেও হরিওম পালিয়ে যায় ঘটনাস্থল থেকে। পুলিশ এখনও তার তল্লাশির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। নিহতের বাবা টুনটুন ঝা মুফাসসিল থানায় একটি এফআইআর দায়ের করেছেন। যেখানে তিনি তাঁর পুত্রবধূ স্মিতা ঝা এবং স্থানীয় এক গৃহশিক্ষক হরিওম কুমারকে হত্যার ষড়যন্ত্র ও বাস্তবায়নের জন্য অভিযুক্ত করেন।
তিনি আরও জানান, সোনু ও স্মিতার দাম্পত্য জীবন দীর্ঘদিন ধরেই সমস্যায় ছিল। তাঁদের দুটি সন্তান রয়েছে এবং প্রায়ই তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হত। এক পর্যায়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত হস্তক্ষেপ করে একটি লিখিত মীমাংসার ব্যবস্থা করে। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি। পরে একদিন সোনু তাঁর স্ত্রী ও হরিওমকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পান। তখন হরিওম কিছুদিন আসা বন্ধ করলেও পরে সোনুর বড় ভাইয়ের ছেলেমেয়েদের টিউশন দেওয়ার অজুহাতে আবারও আসতে শুরু করেন। এর ফলে পারিবারিক উত্তেজনা আবারও বাড়ে।
বর্তমানে স্মিতা ঝা পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন। হরিওম কুমার পলাতক। পুলিশ তাকে ধরার জন্য অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। পুরো ঘটনার তদন্ত জারি রয়েছে।
