আজকাল ওয়েবডেস্ক: মত প্রকাশ ও বাক স্বাধীনতা ঘিরে নানা বিতর্ক। এই আবহেই বাক স্বাধীনতার অধিকার নিয়ে যুগান্তকারী মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অভয় এস ওকা এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভুইয়াঁর বেঞ্চ। শীর্ষ আদলাত স্পষ্ট জানালো যে, মত প্রকাশের স্বাধীনতা একটি সুস্থ সভ্য সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কংগ্রেস সাংসদ ইমরান প্রতাপগড়ীর বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্য়াঙ্গত্মক কবিতা আপলোড করা অভিযোগে এফআইআর দায়ের করেছিল গুজরাট পুলিশ। শুক্রবার সেই এফআইআর খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। শীর্ষ আদালতের মতে, কোনও লেখা বা মন্তব্য 'বিদ্বেষমূলক' বলে বিচার করার মানদণ্ড হতে পারে না। কিছু মানুষের চিন্তাধারাতে সমস্যা আছে, যারা সবকিছুকেই হুমকি বা সমালোচনা বলে মনে করে।

বিচারপতি এস ওকা ও বিচারপতি উজ্জ্বল ভুইয়াঁর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়, 'চিন্তাভাবনা এবং মতামতের স্বাধীন প্রকাশ একটি সুস্থ সভ্য সমাজের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটা ছাড়া, সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদের অধীনে নিশ্চিত একটি মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন করা অসম্ভব। কবিতা, নাটক, শিল্প, ব্যঙ্গ -সহ সাহিত্য জীবনকে সমৃদ্ধ করে,'

এর আগে কংগ্রেস সাংসদ ইমরান প্রতাপগড়ীর বিরুদ্ধে দায়ের এফআইআর বাতিল করতে অস্বাকীর করে গুজরাট হাইকোর্ট । সেই নির্দেশের এ দিন সমালোচনা করেছে সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। পাশাপাশি পুলিশকে সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার জন্য তাদের কর্তব্যের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে এবং জানানো হয়েছে যে, বাকস্বাধীনতা 'সবচেয়ে লালিত অধিকার।'

সম্প্রতি এক কমেডি অনুষ্ঠানে শিবসেনা নেতা একনাথ শিন্ডেকে নাম না করে 'বিশ্বাসঘাতক' বলে উল্লেখ করেছিলেন কমেডিয়ান কুণাল কামরা। যা নিয়ে শোরগোল পড়ে য়ায়। ওই কমেডিয়ানের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করা হয়েছে। পাল্টা হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন জানিয়েছেন কুণাল কামরা। এই প্রেক্ষাপটে মত প্রকাশ ও বাক স্বাধীনতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের মন্তব্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। 

ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে যে, "মৌলিক অধিকার অক্ষুন্ন রাখা এবং প্রয়োগ করা আদালতের কর্তব্য। কখনও কখনও আমরা বিচারকরা, কথিত বা লিখিত শব্দ পছন্দ নাও করতে পারি, কিন্তু সংবিধান এবং সংশ্লিষ্ট আদর্শগুলিকে অক্ষুন্ন রাখারও আমাদের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।"  

মামলা ঠিক কী?
কংগ্রেস সাংসদ ইমরান প্রতাপগড়ী একটি কবিতা সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছিলেন। সেই কবিতার পটভূমিতে বাজছিল 'এ খুন কে প্যাসে বাত সুনো' গানটি। এই কবিতা বিজেপি নশাসিত সরকারের বিরুদ্ধে কটাক্ষ অভিয়োগে এরপরই গুজরাটে প্রতাপগড়ীর বিরুদ্ধে একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। যা বাতিলের জন্য গুজরাট হাইকোর্টে আর্জি জানান সাংসদ। কিন্তু, ১৭ জানুয়ারি, গুজরাট হাইকোর্ট এফআইআর বাতিল করতে অস্বীকৃতি জানায়। জানুয়ারিতে মামলার শুনানি চলে সুপ্রিম কোর্টে। তবে রায় সংরক্ষণ করে শীর্ষ আদালত। শুনানির সময়, শীর্ষ আদালত বলেছিল যে, কবিতাটি ধর্মবিরোধী বা দেশবিরোধী নয়। পুলিশকে সংবেদনশীলতা দেখাতে হবে এবং বাক ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার অর্থ বুঝতে হবে।