আজকাল ওয়েবডেস্ক: মার্কিন জুজু-তে কাঁপছে ভারত? গত মে মাসে ভারত-পাক সংঘর্ষবিরতিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কোনও ভূমিকা নেই বলে দাবি করলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
নিউইয়র্কে নিউজউইকের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় জয়শঙ্কর স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, ভারত-পাক সংঘর্ষ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের মধ্যে যখন কথা হচ্ছে সেই সময়ে তিনিও উপস্থিত ছিলেন। তাই কীভাবে সংঘর্ষবিরতি হয়েছে সেটা পুরোপুরি তাঁর জানা আছে।
বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর বলেছেন, "মোদি এবং ভ্যান্স যখন টেলিফোনে কথা বলছেন তখন আমিও ঘরে ছিলাম। ভ্যান্স জানান, অপারেশন সিঁদুরের পরেই বড়সড় হামলা করবে পাকিস্তান। তবে সেটা আমরা মানতে চাইনি। পাকিস্তান কী করবে সেটা শুনতেই চাননি প্রধানমন্ত্রী। শুধু জানিয়েছিলেন, ভারতও পালটা দেবে।"
এরপরই ৯ মে রাতে, পাকিস্তানিরা ভারতে হামলা চালায়। জবাবে ভারতীয় বাহিনী খুব দ্রুত জবাব দিয়েছিল।
তার পরের দিন সকালবেলা ফের ওয়াশিংটন যোগাযোগ করে নয়াদিল্লির সঙ্গে। সেই অভিজ্ঞতার কথা মনে করিয়ে জয়শংকর বলেন, "আমাকে মার্কিন বিদেশসচিব মার্কো রুবিও বলেন যে- পাকিস্তান আলোচনায় বসতে ইচ্ছুক। সেদিন দুপুরেই পাকিস্তানের ডিজিএমও মেজর জেনারেল কাশিফ আবদুল্লা ফোন করেন ভারতের ডিজিএমও লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব ঘাইকে। সংঘর্ষবিরতির অনুরোধ জানায় পাকিস্তান।"
তবে কথা বলার সময়ে একবারও মার্কিন প্রেসিডেন্টের নাম উল্লেখ করেননি জয়শঙ্কর। কিন্তু, নিজের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা তুলে ধরে জানিয়েছেন, ভারত-পাক সংঘর্ষবিরতিতে কোনও তৃতীয় পক্ষের ভূমিকা ছিল না। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের নির্দেশেই হয়তো পাকিস্তান মাথা নোয়াতে বাধ্য় হয়েছিল।
ট্রাম্পের দাবি:
ভারতের বারবার অস্বীকার সত্ত্বেও, গত বুধবার হেগে এক সংবাদিক বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছিলেন, "আমি বাণিজ্য নিয়ে একাধিক ফোন কলের মাধ্যমে এটি শেষ করেছি। আমি বলেছিলাম, দেখুন, যদি আপনারা একে অপরের সঙ্গে লড়াই করতে চান... আমরা কোনও বাণিজ্য চুক্তি করছি না। ওদের মনে করিয়ে দিয়েছিলাম যে, আপনাদের একটি বাণিজ্য চুক্তি করতে হবে।"
তারপরই জয়শঙ্কর জোর দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি অনুসারে বারত-পাক যুদ্ধবিরতি হয়নি।
কী ঘটেছিল পহেলগাঁও-তে?
এই সাক্ষাতকারে বিদেশমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, পাকিস্তান থেকে ভারতে কয়েক বছর ধরে সন্ত্রাসবাদী হামলা হয়েছে এবং ২২শে এপ্রিলের পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার পর দেশে একটি অনুভূতি তৈরি হয়েছিল যে "যথেষ্ট হয়েছে।" তিনি বলেন, "এটি ছিল অর্থনৈতিক যুদ্ধের একটি পদক্ষেপ। এটি কাশ্মীরে পর্যটন ধ্বংস করার জন্য করা হয়েছিল, যা অর্থনীতির প্রধান ভিত্তি ছিল। এটি ধর্মীয় হিংসা উস্কে দেওয়ার জন্যও করা হয়েছিল কারণ মানুষকে হত্যা করার আগে তাঁদের ধর্মীয় বিশ্বাস জানাতে বলা হয়েছিল।"
জয়শঙ্করের হুঁশিয়ারি, "তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, আমরা সন্ত্রাসবাদীদের আর রেয়াত করব না। তাই অপারেশন সিঁদুর অভিযান করা হয়।
উল্লেখ্য, পাকিস্তান-সমর্থিত লস্কর-ই-তৈয়বার সঙ্গে যুক্ত সংগঠন রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্টের পহেলগাঁও সন্ত্রাসবাদী হামলার দায় স্বীকার করে।
