আজকাল ওয়েবডেস্ক: উৎসবের আমেজে মাতোয়ারা রাজধানী দিল্লি এবার সত্যিই নামের যথার্থতা প্রমাণ করল— দিলওয়ালো কি দিল্লি দিওয়ালিতে মদ খেয়ে উড়িয়ে দিল প্রায় ৬০০ কোটি টাকা! দিল্লি সরকারের কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দীপাবলির আগে মাত্র ১৫ দিনে রাজধানীতে মদের বিক্রির অঙ্ক ছুঁয়েছে ৫৯৪ কোটি টাকা, যা গত বছরের তুলনায় ১৫ শতাংশ বেশি।

দিল্লি সরকারের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, এবছর দীপাবলির আগে যে পরিমাণ মদ বিক্রি হয়েছে, তা গত বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৪ সালে দীপাবলির আগের পাক্ষিকে যেখানে বিক্রির পরিমাণ ছিল ৫১৬ কোটি টাকা, সেখানে এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৯৪ কোটি টাকায়। অর্থাৎ এক বছরে মদের বিক্রিতে ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি ঘটেছে।

আবগারি দপ্তরের হিসাবে, চলতি অর্থবর্ষের প্রথমার্ধে (এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর ২০২৫) দিল্লি সরকার প্রায় ৪,১৯২.৮৬ কোটি টাকার আবগারি রাজস্ব সংগ্রহ করেছে, যা গত অর্থবর্ষের একই সময়ের তুলনায় ১২ শতাংশ বেশি। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের প্রথমার্ধে রাজস্বের পরিমাণ ছিল ৩,৭৩১.৭৯ কোটি টাকা।

কর্তারা জানিয়েছেন, দীপাবলির সময়ে বিক্রির এই লাফ সরকারের জন্য ইতিবাচক ইঙ্গিত বহন করছে। নববর্ষের সময় আরও এক দফা বিক্রির শিখর প্রত্যাশা করা হচ্ছে। সেই অনুযায়ী, ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে ৬,০০০ কোটি টাকার আবগারি রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করার আশাবাদী সরকার।

তবে শুরুতে এই বাজেট বর্ষে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ৭,০০০ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। পরবর্তীতে বাজারের বিক্রয় প্রবণতা ও সম্ভাব্য অনুমানের ভিত্তিতে সেটি সংশোধন করে ৬,০০০ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়।

দিল্লি সরকারের চারটি কর্পোরেশন বর্তমানে রাজধানীতে ৭০০-রও বেশি খুচরো মদের দোকান পরিচালনা করে। আবগারি দপ্তর উৎসব মরশুমে বিক্রয় ব্যাহত না হয় তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্পোরেশনগুলিকে আগাম অর্ডার দেওয়া ও পর্যাপ্ত মজুদ রাখার নির্দেশ দিয়েছে।

দিল্লির আবগারি রাজস্বের এই ঊর্ধ্বগতি সরকারের অর্থনৈতিক পরিকল্পনায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে প্রশাসনিক মহলের একাংশের মত। তবে সামাজিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে— উৎসবের আনন্দে যদি রাজধানীর জনগণ প্রায় ৬০০ কোটি টাকার মদ পান করে, তাহলে তার সামাজিক ও জনস্বাস্থ্যগত প্রভাব কতটা ক্ষতিকর হতে পারে, তা নিয়েও ভাবনা জরুরি।

তবে আপাতত দিল্লি সরকারের জন্য এটি এক ‘দিওয়ালি বোনানজা’। রাজস্ব বৃদ্ধির এই সাফল্যে প্রশাসনিক মহলে উৎসবের আনন্দ যেন আরও খানিকটা বেড়ে গেল।