‌দেবব্রত ঠাকুর, অযোধ্যা:‌ দান কী আসবে, তার কোনও ঠিক নেই। কে কী দান দেবেন, তাও কেউ জানে না। রামলালাকে ভক্তরা সোনা দেবেন, নাকি রুপো, নাকি শুধুই ভক্তি–তাও স্পষ্ট নয়। তবে তার জন্য অপেক্ষা করে নেই মোদি সরকারের অর্থ মন্ত্রক বা রামমন্দির ট্রাস্ট। আগেভাগে সেই দামি ধাতু সংগ্রহ করে গলিয়ে খাদ বাদ দিয়ে সোনা বা রুপোর নিখাদ বাট তৈরির জন্য ডেকে আনা হয়েছে সরকারি বিশেষজ্ঞদের।
শুক্রবার সকালে হঠাৎ দেখা দুই বাঙালি ভদ্রলোকের সঙ্গে। মলয় দত্ত ও সুজয় বড়ুয়া। কলকাতার আলিপুর টাঁকশালের দুই অফিসার। পদাধিকারে তাঁরা বুলিয়ন অ্যাকাউন্ট্যান্ট। কেন এসেছেন তাঁরা?‌ অযোধ্যায় নবরূপে যাঁর প্রাণপ্রতিষ্ঠা করা হবে, সেই রামলালার কাছে প্রণামি হিসেবে যে সোনাদানা পড়বে, তার ওজন, হিসাবপত্র ইত্যাদি করে তাঁরা পাঠাবেন আলিপুর টাঁকশালে। সরকারি নির্দেশে তাঁরা এখানে এসেছেন বলে জানান দু’‌জনেই। মুম্বই থেকে হাজির আরও তিনজন অফিসার। 
মলয়বাবু ও সুজয়বাবুর কথায় জানা গেল, সোনা–রুপোর মতো দামি ধাতু কলকাতার টাঁকশালে প্রথমে গলানো হয়। তার পর তার বিশুদ্ধতা পরীক্ষা করে, সমস্ত খাদ বাদ দিয়ে তৈরি করা হয় সোনা বা রুপোর বাট। এ ক্ষেত্রেও নিয়মানুযায়ী সেই বাট তৈরির পর মুম্বইয়ের রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সেফ ভল্টে তা পাঠানো হবে। কিন্তু রামলালার সম্পদ কেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ভল্টে থাকবে?‌
তাঁদের বক্তব্য, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, অর্থ মন্ত্রক এবং মন্দিরের ট্রাস্টি বোর্ড সেই ধাতুর ব্যবহার কীভাবে হবে তা ঠিক করবে। প্রশ্ন, রামের সোনা সরকারের সোনা হয়ে যাবে না তো?‌ ট্রাস্টের এক সূত্রের বক্তব্য, সোনা রামলালারই। যত দিন না ঠিক হবে তার ব্যবহার কীভাবে করা হবে, তত দিন তা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের হেফাজতে থাকবে। উল্লেখ্য, গুজরাটের সোমনাথ মন্দিরের অভ্যন্তর, গর্ভগৃহ সোনায় মোড়া। একই রকম তিরুপতি মন্দিরের গর্ভগৃহও। ট্রাস্টের লক্ষ্য, এখানেও ধীরে ধীরে নবনির্মিত মন্দিরের অভ্যন্তর সোনায় মুড়ে দেওয়া হবে।