আজকাল ওয়েবডেস্ক: সদ্যোজাত সন্তানের জন্মের কয়েক ঘণ্টা পর মায়ের হাতেই মর্মান্তিক পরিণতি। হাসপাতালের মধ্যে সদ্যোজাত সন্তানকে খুন করার অভিযোগ উঠেছে মায়ের বিরুদ্ধে। সন্তানের জন্মের কয়েক ঘণ্টা পরেই, শ্বাসরোধ করে তাকে খুন করেছে মা। যে ঘটনায় শিউরে উঠেছেন সকলে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে রাজস্থানের চুরু জেলায়। শনিবার পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে ৪০ বছর বয়সি গুড্ডু দেবী নামের এক যুবতী চুরু জেলার সরকারি হাসপাতালে পঞ্চম সন্তানের জন্ম দিয়েছিল। সদ্যোজাতর মুখ দেখে বাড়ির আত্মীয়স্বজন হাসপাতালের অন্য ওয়ার্ডে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। সেই ফাঁকেই সদ্যোজাত সন্তানের শ্বাসরোধ করে খুন করে মা।
পুলিশ আধিকারিক সুখরাম চোটিয়া জানিয়েছেন, আর্থিক অনটনে জেরবার ছিল গুড্ডু দেবী। সংসারের খরচ চালানোর মতো সামর্থ্য ছিল না তার। যা ঘিরে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত ছিল সে। পাশাপাশি গুড্ডু দেবীর স্বামী তারাচাঁদ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে দীর্ঘদিন শয্যাশায়ী। পঞ্চম সন্তানের জন্মের পরেই আত্মীয়স্বজনদের জানিয়েছিল, আরেকটি সন্তানের দেখভাল করার মতো আর্থিক পরিস্থিতি নেই।
শুক্রবার সকালে সদ্যোজাতকে দেখতে যান গুড্ডুর বোন ময়না দেবী। তখনই খেয়াল করেন, সদ্যোজাত নড়াচড়া করছে না। কোনও সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। তার গলায় আঘাতের চিহ্ন চোখে পড়ে। তড়িঘড়ি করে চিকিৎসকদের খবর দেন তিনি। সদ্যোজাতর ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা যায়, তাকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। এরপরেই ঘাতক মায়ের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলেই গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া শুরু করবে তারা।
গত সেপ্টেম্বরে আরেকটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল। ছেলের আবারও মেয়ে হল! পরপর দুই কন্যাসন্তানের জন্মের পর মনে মনে ক্ষুব্ধ ছিল ঠাকুমা। বৃদ্ধা নাতির আশা করেছিল। আশা পূরণ না হওয়ায় চার মাসের নাতনিকেই খুন করল। সবার অলক্ষ্যে নাতনির শ্বাসরোধ করে খুনের কথা সে নিজেই স্বীকার করে নিয়েছে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের নর্মদাপুরম জেলায়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বারখেদি গ্রামেই এক বৃদ্ধা তার চার মাসে নাতনিকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছে। নাতনিকে তার পছন্দ ছিল না। কিন্তু তিনি চেয়েছিলেন সংসারে নাতি আসুক। সেই কারণেই নাতনিকে খুন করেন বৃদ্ধা।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, বৃদ্ধার নাম মীনাবাই আসওয়ারে। গত শুক্রবার বাড়ির পিছনে দোলনায় ঘুমিয়ে পড়েছিল চার মাসে শিশুকন্যা। ঘুমন্ত শিশুকন্যার মুখে তোয়ালে চেপে ধরে বৃদ্ধা শ্বাসরোধ করে খুন করে। সেই সময়েই শিশুকন্যার মা ঘরের ভিতরে কাজে ব্যস্ত ছিলেন।
শিশুকন্যাকে খুনের পর ওই বৃদ্ধা একটি ব্যাগের মধ্যে দেহ ভরে, শুকনো কুয়োয় ফেলে দেয়। কিছুক্ষণ পরেই শিশুকন্যার নিখোঁজের খবরে গ্রামে শোরগোল পড়ে। তড়িঘড়ি পরে পরিবার ও গ্রামবাসীরা পুলিশে খবর দেন। শিশুকন্যাকে খোঁজাখুঁজির সময়েই তার ঠাকুরদা কুয়োর মধ্যে একটি ব্যাগ দেখতে পান। কিন্তু সেই সময় বৃদ্ধা তার স্বামীকে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করে। সে জানায়, ওই ব্যাগে মাসিকের নোংরা কাপড় রাখা আছে।
তিনদিন পর সেই কুয়ো থেকে ব্যাগটি উদ্ধার করে শিশুকন্যার দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এদিকে মৃত শিশুকন্যার বাবা জানিয়েছেন, খুনের তিনদিন পর বৃদ্ধা খুনের ঘটনাটি স্বীকার করে নিয়েছে। তিনিও কড়া শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। পুলিশি জেরায় বৃদ্ধা খুনের কথা স্বীকার করে নেয়। সে আরও জানায়, পরিবারে দ্বিতীয় কন্যাসন্তানের আগমনের পর সে খুশি ছিল না। মন থেকে নাতনিকেও মেনে নিতে পারেনি। সে চেয়েছিল, ছেলের দ্বিতীয় সন্তান ছেলে হোক।
