আজকাল ওয়েবডেস্ক: ১৬ ডিসেম্বর। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে একটি ভিডিও। আর তা নিয়েই উত্তাল হয় রাজনীতি। কী দেখা গিয়েছিল ভিডিওতে? দেখা গিয়েছিল, একটি অনুষ্ঠানের মঞ্চে, মহিলা চিকিৎসককে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়ার পরেই, তাঁর হিজাব টেনে নামিয়ে দেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। জিজ্ঞাসা করেন, 'এটা কী?' স্বাভাবিকভাবেই ওই ঘটনায় বেশ হকচকিয়ে পড়তে দেখা যায় মহিলা চিকিৎসককে। তিনি তৎক্ষণাৎ সরে যান। বিহারের উপ মুখ্যমন্ত্রীকেও, মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে থামিয়ে নিতে দেখা যায়।
তা নিয়ে গত কয়েকদিনে রাজনীতির ময়দানে এই ঘটনা নিয়ে জোর চর্চা হয়েছে। এবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর মন্তব্যে যেন সেই বিতর্ক বাড়ল বহুগুন। সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং, হিজাব-কাণ্ডে নীতীশ কুমারের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি বলেন, 'নীতীশ কুমারজি কোনও ভুল কাজ করেননি'। তাঁর যুক্তি, কেউ নিয়োগপত্র নিতে গেলে, মুখ দেখাবেন না? পাসপোর্ট নিতে গেলে, বিমানবন্দরে গেলে চেহারা দেখাতে হয় বলেও উল্লেখ করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তিনি বলেন, এটি কোনও ইসলামিক দেশ নয়।
নীতীশ কুমার অভিভাবক হিসেবে এই কাজ করেছেন। গিরিরাজ সিং-এর মন্তব্যও ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে নেটপাড়ায়। ছড়িয়ে পড়তেই তীব্র নিন্দা।
উল্লেখ্য, ১৬ ডিসেম্বর, ওই ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই, বিরোধীরা নীতীশ কুমারকে কটাক্ষ করে মন্তব্য করতে শুরু করেন। নীতীশকে একহাত নিয়েছে হাত শিবির। কংগ্রেস নেতারা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে নীতীশ কুমারের 'মানসিক স্থিতি' নিয়ে জোর সওয়াল করেছেন। হাত শিবির সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছে, 'বিহারের সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তি প্রকাশ্যে এমন জঘন্য কাজ করছেন। ভাবুন তো রাজ্যে মহিলারা কতটা নিরাপদ থাকবে?' নীতীশ কুমারের পদত্যাগের দাবিও তুলেছে কংগ্রেস।
কটাক্ষ করতে ছাড়েনি আরজেডি'ও। আরজেডি মুখপাত্র এজাজ আহমেদ বলেন, 'নীতীশ কুমারের হিজাব খুলে ফেলা জেডিইউ-বিজেপি জোটের নারীদের প্রতি মনোভাব প্রকাশ করে।' তিনি বলেন, 'পর্দা পালনকারী একজন মুসলিম মহিলার মুখ থেকে হিজাব সরিয়ে তিনি (কুমার) স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, নারীর ক্ষমতায়নের নামে জেডিইউ এবং বিজেপি কোন ধরণের রাজনীতিতে লিপ্ত হচ্ছে। একজন মহিলার হিজাব এভাবে সরিয়ে ফেলা, একজনের সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা অনুসারে জীবনযাপনের অধিকার কেড়ে নেওয়ার একটি কাজ।'
বিহার ভোটের আগেও, এক বিতর্কে জড়িয়েছিলেন নীতীশ কুমার। নভেম্বরে বিহার নির্বাচনের কয়েক সপ্তাহ আগে, জনসভায় একজন মহিলাকে মালা পরানোর একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। ওই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর, প্রবল বিতর্ক তৈরি হয় বর্ষীয়ান রাজনীতিককে ঘিরে। ওই ঘটনার উল্লেখ করে, জন সূরজের প্রতিষ্ঠাতা, এক সময়ের ভোটকৌশলী প্রশান্ত কিশোর তখনও একবার নীতীশ কুমারের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এবার তাঁর পাশে দাঁড়ালেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
