আজকাল ওয়েবডেস্ক: দেশ জুড়ে ব্যাহত ইন্ডিগো বিমান পরিষেবা। শেষমুহূর্তে বিমান বাতিল হতেই নিজেদের রিসেপশনেই হাজির হতে পারল না নবদম্পতি। তবে অনুষ্ঠান বাতিল হয়নি। ভার্চুয়ালি রিসেপশনে হাজির হলেন নবদম্পতি। নিমন্ত্রিতরা অন্যদিকে হাজির হন সেই অনুষ্ঠানে। 

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে কর্ণাটকের হুব্বালিতে। জানা গেছে, বিয়ের রিসেপশনে হাজির হতে পারেননি নবদম্পতি। কারণ ইন্ডিগো বিমান বাতিল ছিল। নবদম্পতি হাজির হতে না পারলেও অনুষ্ঠান বাতিল হয়নি। নিমন্ত্রিতরা সকলেই উপস্থিত হন‌। অন্যদিকে ভার্চুয়ালি হাজির ছিলেন সেই অনুষ্ঠানে। 

 

জানা গেছে, গত ২৩ নভেম্বর ওড়িশার ভুবনেশ্বরের সঙ্গমা দাস ও হুব্বালির মেধা কেশিরসাগর বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। দু'জনেই পেশায় তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী। বেঙ্গালুরুতে কর্মরত। গত বুধবার নববধূর শহরেই ছোট একটি রিসেপশনের আয়োজন করা হয়েছিল। গুজরাট ভবনে রিসেপশনের অনুষ্ঠান ছিল। তবে সেখানে পৌঁছনোর আগেই নবদম্পতির বিমান বাতিল ঘোষণা করা হয়। এমনকী তাঁদের বহু আত্মীয়ও সেই অনুষ্ঠানে বিমান বাতিলের কারণে পৌঁছতে পারেননি। 

 

জানা গেছে, ৬০০ নিমন্ত্রিত হাজির হন সেই অনুষ্ঠানে। ভার্চুয়ালি সকলের সঙ্গে দেখা করে নবদম্পতি। অনলাইনেই তাঁরা রিসেপশনের বিশেষ সাজে সেজে বসেছিলেন।

 

চালক সংকটে ইন্ডিগোর বিমান বাতিলে চরম বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে দেশজুড়ে। চরম হয়রানির শিকার যাত্রীরা। ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখে অসন্তুষ্ট কেন্দ্র। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় সরকার ইন্ডিগোর সিইও পিটার এলবার্সকে অপসারণের দাবি জানাতে পারে। বিমান পরিবহন মন্ত্রক শনিবার সন্ধ্যায় ইন্ডিগো কর্তৃপক্ষকে তলব করেছে। পাশাপাশি ওই বিমান সংস্থার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের ইঙ্গিত মিলেছে। সূত্রগুলি জানিয়েছে, দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মালিকানাধীন ইন্ডিগো-র উপর আর্থিক জরিমানা চাপানো হচ্ছে। 

 

শুক্রবার এক হাজারেরও বেশি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে আরও শত শত ফ্লাইট বাতিল করা হচ্ছে। যার ফলে বিমানবন্দরে যাত্রীরা আটকা পড়েছেন। শেষ মুহূর্তের জন্য অন্যান্য বিমান সংস্থায় বুকিংয়ের জন্য অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করা ছাড়া যাত্রীদের কাছে আর কোনও উপায় থাকছে না। অনেককেই ভ্রমণ পরিকল্পনা বাতিল করছেন। 

 

শনিবারও একই বিশৃঙ্খলার ছবি উঠে এসেছে। সংকটের পঞ্চম দিনেও আজ সকাল থেকে দিল্লি এবং মুম্বাই বিমানবন্দরে শতাধিক ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অন্যান্য সংস্থার বিমানের টিকিটের দাম হুহু করে বাড়ছে। ফলে নাভিশ্বাস অবস্থা যাত্রীদের। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্র হস্তক্ষেপ করেছে। আইন মেনে বিমান ভাড়া নেওয়ার জন্য হুঁশিয়ারি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। 

 

সরকার এখন 'ফ্লাইট ডিউটি টাইম লিমিটেশন' আদেশ স্থগিত রেখেছে। আশা করছে যে, তিন দিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। বিমান পরিবহন মন্ত্রী বলেছেন যে, ইন্ডিগোর সংকট এখন সমাধানের পথে এবং বিমান সংস্থাটি পূর্ণ ক্ষমতায় কাজ শুরু করতে আরও কয়েক দিন সময় লাগতে পারে। ইন্ডিগোর সিইও এলবার্স শুক্রবারই জানিয়েছিলেন, অবস্থা স্বাভাবিক হতে ১৫ ডিসেম্বর হয়ে যাবে।