আজকাল ওয়েবডেস্ক: পড়াশোনার অতিরিক্ত চাপ! মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলেন পড়ুয়া। অবশেষে হস্টেলের ঘরেই চরম পদক্ষেপ। বাবা-মায়ের উদ্দেশে চিঠি লিখেই আত্মঘাতী ২১ বছরের পড়ুয়া। নিট পরীক্ষার্থীর মৃত্যু ঘিরে এলাকায় ফের ছড়াল শোরগোল। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের কানপুরে। ২১ বছর বয়সি এক নিট পরীক্ষার্থী আত্মঘাতী হয়েছেন। তাঁর ঘর থেকে পাওয়া গেছে একটি সুইসাইড নোট। যেখানে আত্মঘাতী পড়ুয়া লিখেছেন, 'বাবা-মায়ের স্বপ্নপূরণ করতে পারলাম না।' 

পুলিশ জানিয়েছে, মৃত পড়ুয়ার নাম, মহম্মদ আন। তিনি রামপুরের বাসিন্দা ছিলেন। গত চারদিন ধরে রায়াতপুরের এক হোস্টেলে থাকছিলেন। তাঁর রুমমেট ইমদাদ হাসান পুলিশকে জানিয়েছেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁকে প্রার্থনায় যাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু মহম্মদ আন যেতে রাজি হননি। প্রার্থনা থেকে ফিরেই ইমদাদ দেখেন, ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। একাধিকবার দরজা ধাক্কাধাক্কি করে, ডেকেও তাঁর সাড়া পাওয়া যায়নি। এরপরই পুলিশকে খবর দেন ইমদাদ। 

তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঘরের দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে পুলিশ। সেই ঘর থেকে উদ্ধার করে মহম্মদ আন নামের নিট পরীক্ষার্থীর ঝুলন্ত দেহ। সিলিং ফ্যানে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন তিনি। ঝুলন্ত দেহের পাশেই ছিল সুইসাইড নোট। যেখানে তিনি লিখেছিলেন, 'বাবা-মা আমাকে ক্ষমা করো। আমি মানসিকভাবে বিধ্বস্ত। আমি তোমাদের স্বপ্নপূরণ করতে পারব না। আমিই আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী।' পড়ুয়ার দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। ঘটনার তদন্ত জারি রয়েছে। 

গত জুন মাসে এমন আরেকটি ঘটনা ঘটেছিল। ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন ছিল। খেলাধুলা, গল্পগুজব ছেড়ে সারাদিন বইয়ে মুখ গুঁজে পড়াশোনা করত ১৮ বছরের কিশোরী। দিনরাত পড়েও রেজাল্ট খারাপ হয়েছিল। মন মতো নম্বর না পাওয়ায় কিশোরীকে বেধড়ক মারধর করেন বাবা। এর জেরেই মর্মান্তিক পরিণতি তার। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের সাঙ্গলি জেলায়। পুলিশ জানিয়েছে, নীলকরনজি গ্রামে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৮ বছরের এক কিশোরীর। দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া ছিল সাধনা। নিট পরীক্ষার্থীর প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ছোট থেকেই ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন ছিল তার। নিটের জন্য জোরকদমে প্রস্তুতি নিচ্ছিল। 

সম্প্রতি নিটের মক টেস্টের ফলাফল প্রকাশ পায়। সাধনার নম্বর খানিকটা কম ছিল। মেয়ের এই পারফরম্যান্সে প্রবল রেগে যান তার বাবা। পরিবারের সকলের সামনেই বেধড়ক মারধর করেন মেয়েকে।‌ অবশেষে পরেরদিন অচৈতন্য অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। 

পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে কিশোরীর বাবাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এও জানা গেছে, কিশোরীর বাবা ওই এলাকার একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক। মেয়েকে মারধরের পরদিন স্কুলে গিয়ে যোগা দিবসের উদযাপনেও সামিল হন।