আজকাল ওয়েবডেস্ক: সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য মা কতদূর যেতে পারেন? তামিলনাড়ুর পেচিয়াম্মাল যা করেছেন, তা এক কথায় অবিশ্বাস্য। নিজের মেয়েকে সুনিশ্চিত বড় করতে দীর্ঘ ৩৭ বছর পুরুষের ছদ্মবেশে কাটালেন এই লড়াকু মা। এই ঘটনা জানাজানি হতেই চমকে উঠেছে গোটা দেশ।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, থুথুকুড়ি জেলার এক গ্রামে জন্ম পেচিয়াম্মালের। বিয়ের মাত্র কয়েক দিন পরেই স্বামী মারা যান তাঁর। তারপর থেকে কোলের সন্তানকে নিয়ে একা থাকতেন পেচিয়াম্মাল। শুরু হয় তাঁর অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। জানা গিয়েছে, দিনের পর দিন নানা প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়েছেন মহিলা। অভিযোগ, একা নারী দেখে পদে পদে তাঁকে হেনস্থা ও কুপ্রস্তাবের শিকার হতে হতো। অবশেষে একদিন তিনি একটি বড় সিদ্ধান্ত নেন।
নিজের পরিচয় গোপন করে তিনি হয়ে ওঠেন ‘মুথু’। চুল কেটে ছোট করে, ধুতি আর শার্ট পরে নাম লেখান শ্রমিকের কাজে। গ্রামের মানুষের কাছে তিনি হয়ে ওঠেন ‘মুথু মাস্টার’। খবর অনুযায়ী, দীর্ঘ ৩৭ বছর তিনি এমন পুরুষ সেজেই কঠোর পরিশ্রম করেছেন। রান্নার কাজ থেকে শুরু করে দিনমজুরি- সবখানে তিনি নিজেকে পুরুষ হিসেবেই পরিচয় দিতেন, যাতে কেউ তাঁকে বা তাঁর মেয়েকে বিরক্ত করতে না পারে।
শুধু তাই নয়, তাঁর মেয়ে এবং গুটিকয়েক আত্মীয় ছাড়া গ্রামের কেউ ঘুণাক্ষরেও এই সত্যি জানতে পারেনি। মেয়ের বিয়ে হয়ে যাওয়ার পরও পেচিয়াম্মাল তাঁর ‘মুথু’ পরিচয়টি ছাড়তে রাজি হননি। তাঁর মতে, এই পরিচয়ই তাঁকে নিরাপত্তা, মর্যাদা এবং সম্মানের সঙ্গে বেঁচে থাকার অধিকার দিয়েছে। সন্তানের জন্য এক মায়ের এহেন ত্যাগের কাহিনি আজ গোটা দেশের কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে।
