আজকাল ওয়েবডেস্ক: পথ দুর্ঘটনার পর এক ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে রিভলভার তাক করার অভিযোগে এক ট্যাটু শিল্পীকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। ঘটনাটি কেরালায় ঘটেছে। সোমবার পুলিশ সূত্রে এমনটাই খবর পাওয়া গিয়েছে। খবর অনুযায়ী, অভিযুক্তের নাম রবিন জন। তিরুঅনন্তপুরমের মুত্তাতারা এলাকায় তাঁর একটি ট্যাটু স্টুডিও রয়েছে।

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, রবিবার রাত সওয়া ৯টা নাগাদ অ্যারিস্টো জংশনের কাছে একটি হোটেলের সামনে ঘটনাটি ঘটে। জন তাঁর গাড়ি নিয়ে হোটেল চত্বর থেকে বেরোনোর সময় অন্য একটি গাড়িতে ধাক্কা মারেন বলে অভিযোগ।

 

এর পরেই জন এবং অন্য গাড়ির দুই আরোহীর মধ্যে তীব্র বচসা শুরু হয়। পুলিশ জানিয়েছে, উত্তেজনার বশে জন তাঁদের মধ্যে একজনকে কলার ধরে টানেন। তাঁর সঙ্গী এই আচরণের প্রতিবাদ জানালে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এফআইআর অনুসারে, এর পর জন তাঁর গাড়িতে ফিরে যান এবং সেখান থেকে একটি রিভলভার বের করে মুত্তাতারার বাসিন্দা নসুমুদ্দিন নামে ওই ব্যক্তির দিকে তাক করে গুলি করার হুমকি দেন।

 

ঘটনার পরই সেখানে লোকজন জড়ো হতে শুরু করেন। পরিস্থিতি ক্রমে উত্তপ্ত হতে দেখে স্থানীয় পুলিশে খবর দেন তাঁরা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে জন-কে আটক করে। ঘটনার জেরে থামপানোর থানার পুলিশ ভারতীয় ন্যায় সংবিধানের ১০৯ (খুনের চেষ্টা), ২৯৬(খ) (অশ্লীল শব্দ উচ্চারণ) এবং ৩২৩ (সম্পত্তি প্রতারণামূলক ভাবে গোপন করা) ধারার পাশাপাশি অস্ত্র আইনের ২৭ ধারা (অবৈধভাবে অস্ত্র ব্যবহার)-এ একটি মামলা দায়ের করেছে।

 

জানা গিয়েছে, জন পুলিশকে জানিয়েছেন যে তাঁর রিভলভারটির লাইসেন্স রয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত তিনি কোনও নথিপত্র দেখাতে পারেননি বলে জানিয়েছেন এক পুলিশ আধিকারিক। পুলিশ আরও জানিয়েছে, অস্ত্রটির উৎস সন্ধানে তদন্ত চলছে এবং অভিযুক্তকে শীঘ্রই আদালতে পেশ করা হবে।

আরও পড়ুন: দীপাবলির মরশুমে বৃদ্ধা ফেরিওয়ালার সমস্ত প্রদীপ কিনলেন পুলিশ কর্তা, সামাজিক মাধ্যম প্রশংসায় পঞ্চমুখ

 

উল্লেখ্য, সড়ক দুর্ঘটনায় একের পর এক মৃত্যু। এবার মহারাষ্ট্রের থানে শহরে ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনা। এক বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় এক দম্পতির মোটরবাইক উল্টে যায়৷ ঘটনার জেরে ঘটনাস্থলেই এক মহিলা নিহত হন এবং এক ব্যক্তি আহত হয়েছেন বলে পুলিশ সোমবার জানিয়েছে।

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, রবিবার রাত প্রায় সাড়ে ১১টা নাগাদ ঘোড়বান্দার রোডের বিজয় গার্ডেন হাউজিং সোসাইটির কাছে একটি ওভারব্রিজের নিচে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে কাসারভাদাবলি থানার এক আধিকারিক জানান, ওই ব্যক্তি ও মহিলা একটি ঘরোয়া অনুষ্ঠান থেকে ফিরছিলেন। সেই সময় উল্টোদিক থেকে আসা একটি বেপরোয়া গাড়ি তাঁদের দু'চাকার গাড়িকে সজোরে ধাক্কা মারে।

 

আঘাতের ফলে সিটে বসা স্বাতী নামের ওই মহিলা সরাসরি গাড়িটির নিচে পড়েন এবং তাঁর মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয় বলে ওই আধিকারিক জানিয়েছেন। অন্যদিকে, খবর অনুযায়ী, গুরুতর আহত হওয়া ওই ব্যক্তির হাতে ফ্র্যাকচার হয়েছে। তাঁকে দ্রুত স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বর্তমানে তাঁর চিকিৎসা চলছে। নিহত মহিলার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর৷ পুলিশ বর্তমানে অভিযুক্ত গাড়ি ও তার চালকের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে বলে আধিকারিক জানিয়েছেন।

 

প্রসঙ্গত, ভারতে সড়ক পরিবহণ ক্রমে সম্প্রসারিত হচ্ছে। অবকাঠামোগত উন্নতিতে সরকার যথাযথ ভূমিকা পালন করছে। মহাসড়ক এবং এক্সপ্রেসওয়ের এই ক্রমবর্ধমান নেটওয়ার্কের সঙ্গে সঙ্গে আরেক উদ্বেগজনক প্রবণতা দেখা দিয়েছে৷ একাধিক দুর্ঘটনা। বেপরোয়া গাড়ি চালানোয় মৃত্যু সংখ্যা বাড়ছে৷ সম্প্রতি একটি মহাসড়ক দেশের সবচেয়ে অনিরাপদ মহাসড়কের মর্যাদা পেয়েছে বলে জানা গিয়েছে৷ 

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, শ্রীনগর থেকে কন্যাকুমারীকে সংযুক্তকারী জাতীয় মহাসড়ক-৪৪-এর হরিয়ানা-দিল্লি অংশটি সবচেয়ে অনিরাপদ। এই অংশে হরিয়ানার ২৬৬ কিলোমিটার এবং দিল্লির ৩০ কিলোমিটার অংশ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ২০২৩ সালে হরিয়ানার ২৬৬ কিলোমিটার অংশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৭১৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন। গড় প্রতি কিলোমিটারে তিনজনের মৃত্যু। একইভাবে, দিল্লিতে ৩০ কিলোমিটার অংশে দুর্ঘটনায় ৬৩ জন মারা গেছেন। অর্থাৎ গড় প্রতি কিলোমিটারে দুজনের মৃত্যু।

 

দুর্ঘটনার সংখ্যা কমাতে সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। NHAI-এর এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। দেশের দীর্ঘতম জাতীয় মহাসড়ক ৪৪। কাশ্মীরের শ্রীনগর থেকে শুরু করে কন্যাকুমারীতে শেষ হয়। মোট দৈর্ঘ্য ৪,১১২ কিলোমিটার। জাতীয় মহাসড়ক ৪৪ উন্নয়ন এবং সংযোগের প্রতি ভারতের অঙ্গীকারের প্রতীক। বিশ্বের ২২তম দীর্ঘ মহাসড়ক হিসেবে, এটি উত্তর থেকে দক্ষিণে সমগ্র দেশকে বিস্তৃত করে। অসংখ্য স্থান এবং শিল্প শহরগুলিকে সংযুক্ত করে দেশের জীবনরেখা হিসেবে কাজ করে এই মহাসড়ক।