আজকাল ওয়েবডেস্ক: আমরা বলিউডের এমন অনেক সিনেমা দেখেছি যেখানে নায়ক একজন পাকিস্তানি মহিলার প্রেমে পড়েন এবং তার জন্য সীমান্ত পার হয়ে যান। সেখানে তাঁর বাবার সঙ্গে লড়াই করেন এবং ভালবাসার মানুষটিকে নিয়ে বাড়ি ফেরেন। শুনতে খুব রোমান্টিক মনে হলেও বাস্তব জীবনে এমনটা সম্ভব নয়। আমরা এমনই ভাবি। কিন্তু যদি আমরা আপনাকে বলি যে একজন ভারতীয় যুবক তার প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করার জন্য সীমান্ত পার হয়েছিলেন?
না, এটা কোনও কাল্পনিক গল্প নয়। আলিগড়ের বাসিন্দা বাদল বাবু সানা নামের এক পাকিস্তানি মহিলার প্রেমে পড়েছিলেন। তাঁদের প্রেমের গল্প শুরু হয়েছিল ফেসবুক চ্যাট থেকে। বাদল সানার সঙ্গে দেখা করার সিদ্ধান্ত নেন এবং সব সীমা অতিক্রম করে ভিসা ও পাসপোর্ট ছাড়াই তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পাকিস্তানে চলে যান। এরপর কী হয়েছিল, আসুন জেনে নেওয়া যাক।
বাদল কোনও মতে সীমান্ত পার হয়ে পাকিস্তানে প্রবেশ করেছিলেন। তিনি সানা রানির সঙ্গে দেখা করেন এবং তাঁর বাড়ি যান। তবে, বাবু যে অবৈধভাবে পাকিস্তানে প্রবেশ করেছেন তা জানার পর সানার মা তাঁকে বাড়িতে রাখতে রাজি হননি এবং বাবুকে ভারতে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করেন। ভালবাসায় অন্ধ হয়ে বাদল পাকিস্তানেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের মান্ডি বাহাউদ্দিন এলাকা থেকে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। সেই থেকে জেলেই ছিলেন। কিন্তু এখন আদালত তাঁকে মুক্তি দিয়েছে।
সব কিছুর শুরু ২০২৩ সালে। আলিগড়ের খাটিগপুর এলাকার বাসিন্দা বাদল পাকিস্তানের সানার প্রেমে পড়েন। তাঁদের পরিচয় হয়েছিল ফেসবুকে এবং অল্প কিছুদিনেই অনলাইনে চ্যাট করতে শুরু করেন। শীঘ্রই আলাপ প্রেমে পরিণত হয়। বাদলের কাছে পাসপোর্ট বা ভিসা না থাকা সত্ত্বেও তিনি সানার সঙ্গে দেখা করার সিদ্ধান্ত নেন। যেমন ভাবা তেমনই কাজ, ২০২৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক সীমান্ত অতিক্রম করেন।
সানার মায়ের আপত্তির সত্ত্বেও পাকিস্তানেই থেকে যান বাবু। ২০২৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর সদর থানা পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে এবং পাকিস্তানি আদালতে হাজির করে। অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করার অপরাধে তাঁকে জেলে পাঠানো হয়। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। গুপ্তচরবৃত্তির সন্দেহে পাকিস্তানি তদন্তকারী সংস্থাগুলি তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদও করে।
বাদলকে এখন মুক্তি দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার তাঁর বাবা কৃপাল সিং পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে একটি ফোন পান। তাঁকে জানানো হয় যে, তাঁর ছেলেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে এবং সে শীঘ্রই ভারতে ফিরে আসবে। বাদল বর্তমানে একটি ডিটেনশন সেন্টারে রয়েছে। বাদলের পরিবারের জন্য এটি একটি অত্যন্ত সুখবর। তারা বাদলের ফিরে আসার আশা ছেড়েই দিয়েছিল।
জানা গিয়েছে, বাদল সানার ইসলাম ধর্মও গ্রহণ করেছিলেন। জেল থেকে একটি চিঠি লিখেছিলেন তিনি। যা ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়ে যায়। সেই চিঠিতে লিখেছিলেন, সানাকে তিনি বিয়ে করতে চান এবং জানিয়েছিলেন আর কখনও ভারতে ফিরে আসবেন না।
