আজকাল ওয়েবডেস্ক: সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতের নির্বাচনী প্রক্রিয়া কার্যত একটি রাজনৈতিক দলের কবলে চলে গেছে বলে অভিযোগ উঠছে। নির্বাচনের প্রতিটি পর্যায়ে—ভোটের আগেই, ভোটের দিনে এবং ভোটের পরেও—দুই ধরনের পদ্ধতি ব্যবহৃত হচ্ছে জনগণের রায় বিকৃত করতে।

ভোটের আগে:
ভোটার তালিকা থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষের নাম ইচ্ছাকৃতভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। বিশেষ করে মুসলিম, দলিত, আদিবাসী ও নারী ভোটারদের ক্ষেত্রে এই ঘটনা বেশি ঘটছে। দিল্লি ও মহারাষ্ট্রে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ যাওয়া নিয়ে বিরোধীরা সরব হয়েছে। ‘মিসিং ভোটার’ অ্যাপের প্রতিষ্ঠাতারা দাবি করেছেন, ২০১৯ সালে প্রায় ১২ কোটি নাগরিক ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়েছিলেন।

ভোট কেনাবেচা ও ভোটার স্থানান্তর:
নগদ টাকার বিনিময়ে ভোট কেনার প্রবণতা বেড়েছে, এবং নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে শাসকদল বিপুল অর্থ জোগাড় করেছে। পাশাপাশি, একাধিক রাজ্যে বহিরাগত ভোটারদের আনা হয়েছে বলে অভিযোগ, যাদের কাছে নকল ভোটার আইডি ছিল।

ভোটের দিন ও পরে:
ভোটের পরে ‘ভোটার টার্নআউট’ বা ভোটদানের হার কৃত্রিমভাবে বাড়ানো হয়েছে বলে দাবি একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের। ৫৫ মিলিয়ন অতিরিক্ত ভোটের অভিযোগ উঠেছে, যার প্রভাব ৭৯টি আসনে ফলাফল বদলে দিয়েছে। ইভিএমে শতভাগ পেপার ট্রেইল যাচাই না হওয়ায় এই ধরনের কারচুপি ধরা পড়ছে না।

ইভিএম ও এসএলইউ বিতর্ক:
২০১৭ সাল থেকে ভোট মেশিনে ইন্টারনেট সংযুক্ত এসএলইউ ব্যবহৃত হচ্ছে, যার সফটওয়্যার ও মাইক্রোচিপের ডিজাইন কেবলমাত্র সরকারি সংস্থাগুলির ঘনিষ্ঠ কয়েকজনের জানা। এতে ফলাফল পরিবর্তনের সুযোগ তৈরি হচ্ছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

সরকার গঠন পরবর্তী ষড়যন্ত্র:
২০১৫-২০২৪ সময়কালে ১০টি রাজ্যে বিরোধী সরকারকে ভেঙে ফেলেছে কেন্দ্রীয় শাসক দল। বিরোধীদের অভিযোগ, এই কাজটি করা হয়েছে ইডি, সিবিআই এবং পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করে।

ভারতের নির্বাচন ব্যবস্থা কি আজ বিশ্বাসযোগ্যতা হারাচ্ছে? বিরোধীদের প্রশ্ন তোলার পরেও নির্বাচন কমিশন ও শাসকদলের তরফে এখনও পর্যন্ত নিরপেক্ষ তদন্ত শুরু হয়নি। গণতন্ত্রের ভিত্তি যে নির্বাচন, তা যদি এভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়, তাহলে ভারতের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কা থেকেই যায়।