আজকাল ওয়েবডেস্ক: যাদব পরিবারের কহলে এবার মুখ খুললেন লালু প্রসাদের বহিষ্কৃত বড়ছেলে তেজপ্রতাপ। তাঁর বোনের প্রতি ছোট ভাই তেজস্বীর 'অন্যায়' আচরণের পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ হবে বলে সাবধান করে দিয়েছেন তেজ প্রতাপ।

শুক্রবার বিবারের ভোটে আরজেডির ভরাডুবি হয়েছে। শোচনীয় পরাজয়ের কারণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন লালু-কন্যা রোহিণী আচার্য। তাঁর অভিযোগ, সেই সময়ে তাঁকে গালিগালাজ, অপমান, এমনকি আক্রমণ পর্যন্ত করেছেন ভাই তেজস্বী যাদব ও তাঁর ঘনিষ্ঠ, আরজেডি সাংসদ সঞ্জয় যাদব। রোহিণীর দাবি, তাঁর দিকে "চটি তুলেও মারা হয়"!

নিজের অভিমান-ক্ষোভে উগরে সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে লালু-কন্যা লেখেন, "গতকাল এক মেয়ে, বোন, স্ত্রী আর মা-কে অপমান করা হয়েছে। ঘৃণ্য ভাষায় গালাগালি দেওয়া হয়েছে। আমার দিকে জুতো দিয়ে মারার ভঙ্গি করা হয়। আত্মসম্মান বা সত্যের সঙ্গে আপোস করিনি, তার দাম দিলাম। আমাকে হেয় করা হল।"

রোহিণী আচার্য আরও লেখেন, "কাঁদতে থাকা বাবা-মাকে রেখে যেতে হয়েছে। আমার ঘর, অধিকার, সম্মান সব কেড়ে অনাথ বানিয়ে দেওয়া হয়েছে।" নিজের পোস্টের শেষে রোহিণীর আক্ষেপ, "কোনও বাড়িতে যেন রোহিণীর মতো মেয়ে বা বোন না থাকে।"

এসবের আগে শনিবারই রাজনীতি ছেড়েছেন বলে ঘোষণা করেছিলেন রোহিণী। পরিবারের সঙ্গেও বিচ্ছিন্নতার কথা জানিয়েছিলেন। কড়া পদক্ষেপের জন্য দায়ী করেছিলেন ভাই তেজস্বী ও আরজেডি সাংসদ সঞ্জয় যাদবকে। নিশানা করেন তেজস্বী ঘনিষ্ঠ আরজেডি নেতা রামিজকেও।

বর্তমানে সিঙ্গাপুরে রয়েছে রোহিণী আচার্য। ভোটের ফল, সরকার গঠনের পাশাপাশি বিহারজুড়ে চর্চায় লালুর পরিবারের কহল। এবার মুখ খুলেছেন লালুর তেজ্য সন্তান বড়ছেলে তেজ প্রতাপ যাদব। তিনি বলেন, "আমার সঙ্গে যা ঘটেছে তা আমি সহ্য করেছি। কিন্তু আমার বোনকে যে অপমান করা হয়েছে তা যে কোনও পরিস্থিতিতেই অসহনীয়।" 

তেজ প্রতাপ একটি অনলাইন পোস্টে তাঁর বাবা লালু যাদবের তাঁকে পরিবার এবং দল থেকে বহিষ্কারের কথা স্মরণ করে গর্জে ওঠেন। তিনি লিখেছেন, "আমার বোন রোহিণীর উপর চপ্পল ছোঁড়ার খবর শোনার পর থেকেই আমার হৃদয়ের যন্ত্রণা আগুনে পরিণত হয়েছে। যখন জনসাধারণের অনুভূতিতে আঘাত লাগে, তখন বুদ্ধিও ধুলো হয়ে যায়। এই কয়েকটি মুখ তেজস্বীর বুদ্ধিকেও ফিকে করে দিয়েছে।"

ভয়াবহ পরিণতির বিষয়ে সতর্ক করেন এবং পরিবারের মর্যাদা রক্ষা করার জন্য তাঁর বাবার কাছে অনুমতি চেয়েছেন তেজ প্রতাপ। এক্স পোস্টে লেখেন, "এই অন্যায়ের পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ হবে। সময়ের হিসাব খুবই কঠোর। আমি মাননীয় আরজেডি জাতীয় সভাপতি এবং আমার বাবা, আমার রাজনৈতিক গুরু, শ্রী লালু প্রসাদ জি-কে অনুরোধ করছি - বাবা, আমাকে একটি সংকেত দিন... শুধু একটি ইশারা, বিহারের মানুষ নিজেই এই জয়চাঁদদের কবর দেবে। এই লড়াই কোনও দলের নয় - এটা একটা পরিবারের সম্মান, একটা মেয়ের মর্যাদা এবং বিহারের আত্মসম্মানের বিষয়।" 

মে মাসে লালু যাদব তেজ প্রতাপকে "দায়িত্বজ্ঞানহীন" আচরণের জন্য আরজেডি থেকে ছয় বছরের জন্য বহিষ্কার করেন। এক মহিলার সঙ্গে তেজ প্তাপ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি দিতেই বিতর্ক তৈরি হয়। তেজ প্রতচাপ অবশ্য দাবি করেছিলেন যে, তাঁর অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা হয়েছিল।