আজকাল ওয়েবডেস্ক: মেয়ের জন্মদিন বলে কথা। বাড়ি জুড়ে বেলুন দিয়ে সাজানো হয়েছিল। অফিসের কাজ দ্রুত সেরে, উপহার নিয়ে ঘরে ফেরেন বাবা। উপহার হাতে ঘরে ঢুকেই দেখতে পেলেন দুই বছরের মেয়ের নিথর দেহ। জন্মদিনেই মেয়েকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে তাঁর স্ত্রী। শিশুকন্যাকে মাথায় আঘাত করতে করতে খুন করেছে সে। জন্মদিনে যখন উদযাপনে মেতে ওঠার কথা, সেদিনই শোকে মুহ্যমান শিশুর বাবা। ঘটনাটি জেনে আঁতকে উঠেছেন এলাকার বাসিন্দারা। 

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে ইন্দোরের তেজাজি নগর এলাকায়।‌ পুলিশ সূত্রে খবর, জন্মদিনে দুই বছরের শিশুকন্যাকে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে তার নিজের মায়ের বিরুদ্ধে। জানা গেছে, শিশুকন্যা কান্নাকাটি করছিল। সেই কারণেই রাগের মাথায় শিশু কন্যাসন্তানকে বেধড়ক মারধর করে ওই যুবতী। তার জেরেই মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে দুই বছরের শিশুকন্যা। 

 

তেজাজি নগর থানার পুলিশ জানিয়েছে, শিশুকন্যার জন্মদিন উপলক্ষে বাড়িতেই ছিল তার মা। হঠাৎ কান্নাকাটি শুরু করে সে। তার জেরেই বিরক্ত হয় তার মা। রাগের মাথায় ঘর থেকে একটি শক্ত লাঠি নিয়ে শিশুটিকে মারতে শুরু করে। প্রথমেই শিশুকন্যার মাথায় সজোরে লাঠি দিয়ে আঘাত করে সে। সেই আঘাতেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলে শিশুকন্যা। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়েছে। 

 

ঘটনাটির বিষয়ে জানাজানি হয় ওইদিন সন্ধ্যায়। অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পরেই আঁতকে ওঠেন শিশুকন্যার বাবা। মেয়ের নিথর দেহ দেখেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। স্ত্রীর আচরণে‌ সন্দেহ হতেই তড়িঘড়ি পুলিশে খবর দেন ওই ব্যক্তি। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় তেজাজি নগর থানার পুলিশ। শিশুকন্যার দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় তারা। 

 

আরও পড়ুন: এক কোপে ৪ বছরের খুদের যৌনাঙ্গ কেটে নিল পাশের বাড়ির কাকু-কাকিমা, কারণ জানলে আঁতকে উঠবেন

 

পাশাপাশি কন্যাসন্তানকে খুনের অভিযোগে ঘাতক মাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। দাম্পত্য কলহ, মানসিক অবসাদ, নাকি কন্যাসন্তান অপছন্দের, কোন কারণে শিশুটিকে খুন করা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা শুরু করেছে পুলিশ। যুবতীর মানসিক স্বাস্থ্যের কোনও সমস্যা ছিল কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 

 

প্রসঙ্গত, চলতি বছর এপ্রিল মাসেই গুজরাটের আহমেদাবাদের অম্বিকানগর এলাকায় এমন একটি ঘটনা ঘটেছিল। ২২ বছরের তরুণী করিশ্মা বাঘেল পুলিশকে জানিয়েছিল, তার তিন মাসের সন্তানকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এরপর পুলিশ খোঁজ শুরু করে। বাড়ির আশেপাশে খোঁজার পর ভূগর্ভস্থ জলের ট্যাঙ্ক থেকে শিশু সন্তানের দেহ উদ্ধার করেছে তারা। 

 

পুলিশের সন্দেহ হতেই করিশ্মাকে জেরা শুরু করে। প্রথম থেকেই অসংলগ্ন কথা বলছিল সে। একবার জানায়, সে স্নান করতে গিয়েছিল। সেই সময় শিশুটি ঘরেই ছিল। স্নানঘর থেকে বেরিয়ে সন্তানকে আর দেখতে পায়নি। পরে জানা যায়, নিজের সন্তানকে জলের ট্যাঙ্কে চুবিয়ে খুন করে সে। দেহ সেখানে রেখেই পুলিশে তিনি খবর দেয়। 

 

পরিবারের তরফে জানা গেছে, অন্তঃসত্ত্বা থাকাকালীন করিশ্মার মানসিক ও শারীরিকভাবে নানা বদল আসে। ক্ষণে ক্ষণে শরীর খারাপ হত তাঁর। যার জন্য মেজাজ বিগড়ে যেত। সন্তানের জন্মের পরেও মেজাজ হারিয়ে ফেলত। শিশুটি কান্নাকাটি করত বলে, খুব বিরক্ত হত। কিন্তু নিজের সন্তানের সঙ্গে নৃশংস কাণ্ড যে ঘটাবে, তা টের পাননি কেউ।