আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রধান (চিফ অফ দ্য আর্মি স্টাফ – COAS) জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী এবং সেনা স্ত্রী কল্যাণ সমিতির (AWWA) সভানেত্রী মিসেস সুনীতা দ্বিবেদী অঙ্গদান করার অঙ্গীকার করলেন। বুধবার নয়াদিল্লির আর্মি হাসপাতালে এক অনুষ্ঠানে তাঁরা আনুষ্ঠানিকভাবে এই অঙ্গীকারপত্রে স্বাক্ষর করেন। এই মানবিক সিদ্ধান্ত সশস্ত্র বাহিনীর অঙ্গ পুনরুদ্ধার ও প্রতিস্থাপন কর্তৃপক্ষের চলমান প্রচেষ্টায় নতুন গতি ও অনুপ্রেরণা যোগ করবে বলে মনে করছে সেনা সূত্র। বর্তমানে AORTA, যা আর্মড ফোর্সেস মেডিক্যাল সার্ভিসেসের ডিরেক্টর সার্জন ভাইস অ্যাডমিরাল আরতি সারিনের নেতৃত্বে পরিচালিত হচ্ছে, দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে অঙ্গদানের সচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রতিস্থাপনের পরিকাঠামো গড়ে তুলছে।

উল্লেখযোগ্যভাবে, সংস্থার একক প্রচেষ্টায় ইতিমধ্যেই ২৬ হাজারেরও বেশি সেনা সদস্য অঙ্গদান করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সেনাপ্রধান অঙ্গদানকে ‘মানবতার প্রতি চূড়ান্ত সেবা’ বলে আখ্যা দেন। তিনি বলেন, ‘সেনা সদস্যরা জাতির রক্ষাকর্তা। তাঁদের এই অঙ্গীকার সমাজকে মানবিক বার্তা দেয়, সাহস ও আত্মত্যাগের চেতনাকে আরও প্রসারিত করে। আমি সমস্ত সেনা সদস্য এবং তাঁদের পরিবারকে আহ্বান জানাচ্ছি যাতে তাঁরা এই মহৎ উদ্যোগে অংশ নেন এবং সমাজে একটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।’ অনুষ্ঠানে বিশেষভাবে সম্মানিত করা হয় সেনা স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত প্রথম সারির কর্মীদের, যাঁরা অঙ্গ প্রতিস্থাপন সংক্রান্ত পরিষেবায় উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন। সেনাপ্রধান তাঁদের মধ্যে তিনজনকে ‘চিফস রেকমেন্ডেশন কার্ড’ প্রদান করেন। এর মধ্যে একজন হাউসকিপারও ছিলেন, যিনি নিঃশব্দে রোগীদের পরিচ্ছন্নতা ও সুস্থতার জন্য কাজ করে চলেছেন। সবচেয়ে আবেগঘন মুহূর্ত আসে যখন অঙ্গদানের মাধ্যমে জীবনদান করা দাতাদের পরিবারকে সম্মান জানানো হয়। সেনাপ্রধান তাঁদের হাতে স্মারক তুলে দেন এবং তাঁদের সাহস ও মানবিকতার প্রশংসা করেন। এই পরিবারগুলির অবদান অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ হয়ে ওঠে। সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী ও AWWA সভানেত্রী সুনীতা দ্বিবেদীর এই অঙ্গীকার সেনাবাহিনীর অঙ্গদান সচেতনতা আন্দোলনে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করল। তাঁদের এই পদক্ষেপ কেবল সেনা সদস্যদের নয়, গোটা দেশের নাগরিকদেরও অনুপ্রাণিত করবে নিঃস্বার্থভাবে জীবনদানের মহৎ পথে এগিয়ে আসতে।