আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতীয় রেলওয়ে গত ৫১ মাসে গড়ে প্রতি মাসে তিনটি 'গুরুত্বপূর্ণ' বা 'কনসিকুয়েনশিয়াল' ট্রেন দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়েছে। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ২০২১-২২ সাল থেকে শুরু করে এখনও পর্যন্ত মোট ১৫৭ টি এই ধরণের দুর্ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে।
ট্রেন দুর্ঘটনাগুলিকে মূলত দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। কনসিকুয়েনশিয়াল (গুরুত্বপূর্ণ) এবং নন-কনসিকুয়েনশিয়াল (অগুরুত্বপূর্ণ)। কনসিকুয়েনশিয়াল দুর্ঘটনাগুলি সেইসব দুর্ঘটনা যা মানুষের প্রাণহানি বা গুরুতর আহত হওয়া, বিভিন্ন রেল সম্পত্তির ক্ষতি অথবা ট্রেন চলাচলে বড় ধরণের বিঘ্ন ঘটায়। এই ধরণের দুর্ঘটনার মধ্যে সংঘর্ষ, আগুন লাগা, লাইনচ্যুতি এবং লেভেল ক্রসিং দুর্ঘটনা অন্তর্ভুক্ত।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ২০২১-২২ সালের মধ্যে কমপক্ষে ৩৫টি কনসিকুয়েনশিয়াল ট্রেন দুর্ঘটনা হয়েছে। অর্থাৎ গড়ে প্রতি মাসে তিনটি। পরবর্তী বছর ২০২২-২৩ সালে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৮-এ, যা গড়ে প্রতি মাসে চারটি দুর্ঘটনার সমান। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৪০টি গুরুত্বপূর্ণ দুর্ঘটনা ঘটে। অর্থাৎ গড়ে মাসে তিনটিরও বেশি। আবার ২০২৪-২৫ সালে এই সংখ্যা কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৩১-এ। যা গড়ে মাসে প্রায় ২.৬টি দুর্ঘটনার সমান। সর্বশেষ ২০২৫-২৬ সালে (জুন পর্যন্ত) এখনও পর্যন্ত তিনটি দুর্ঘটনার খবর পাওয়া গিয়েছে। অর্থাৎ প্রতি মাসে গড়ে একটি করে দুর্ঘটনা ঘটেছে।
সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, গত তিন বছরে ঘটা (২০২২-২৩ থেকে ২০২৪-২৫ পর্যন্ত) প্রায় সমস্ত দুর্ঘটনার তদন্ত শেষ হয়েছে। শুধুমাত্র একটি দুর্ঘটনার তদন্ত এখনও রেল সুরক্ষা কমিশনার (Commissioner of Railway Safety - CRS) এর তত্ত্বাবধানে চলছে। তদন্ত কমিটি প্রতিটি দুর্ঘটনার বিষয়ে বিশদ বিশ্লেষণ করে তাদের সুপারিশ জমা দেয়। সংশ্লিষ্ট রেলওয়ে প্রশাসন সেই সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
রেল মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, 'ভারতীয় রেলওয়েতে সুরক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। গত কয়েক বছরে গৃহীত বিভিন্ন সুরক্ষা পদক্ষেপের ফলে দুর্ঘটনার সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।'
রেল মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, 'কবচ' নামক একটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর সিস্টেম প্রয়োগ করা হচ্ছে ট্রেন দুর্ঘটনা প্রতিরোধে। খবর মারফত এই 'কবচ' ২০২০ সালের জুলাই মাসে জাতীয় অটোমেটিক ট্রেন প্রোটেকশন (ATP) সিস্টেম হিসেবে গৃহীত হয়। এটি ধাপে ধাপে বিভিন্ন রুটে চালু করা হচ্ছে। ২০২৫ সালের ৩০ জুলাই ‘কবচ’ সফলভাবে দিল্লি-মুম্বাই রুটের কোটা-মথুরা সেকশনে ৩২৪ রুট কিলোমিটার এলাকায় চালু হয়েছে।
এর পাশাপাশি সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ মধ্য রেলওয়ে এবং উত্তর মধ্য রেলওয়ে অঞ্চলে ইতিমধ্যে ১,৫৪৮ রুট কিলোমিটারে 'কবচ' চালু হয়েছে। বর্তমানে দিল্লি-মুম্বাই এবং দিল্লি-হাওড়া করিডোরে প্রায় ৩,০০০ রুট কিলোমিটারে এই প্রযুক্তি চালুর কাজ চলছে।
আরও পড়ুনঃ ‘আপত্তিকর’ পোশাকে বরের ঘুম কাড়লেন মহিলা অতিথি! হিংসায় বিয়ের মণ্ডপেই এ কী করলেন নববধূ?
