আজাকাল ওয়েবডেস্ক: নয়ডায় মঙ্গলবার দুপুরে ভারী বৃষ্টি। যান চলাচলে প্রবল ব্যাঘাত ঘটেছে। মঙ্গলবার দুপুরে নয়ডায় হঠাৎ করে শুরু হওয়া প্রবল বৃষ্টিতে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা চরম বিপর্যস্ত হয়েছে। দুপুর প্রায় ১টা নাগাদ শুরু হওয়া এই ভারী বৃষ্টিতে রাস্তাঘাটে জল জমে যায় এবং যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়। অনেক যাত্রীকে বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়া থেকে বাঁচতে আশ্রয়ের খোঁজ করতে দেখা যায়।
ভারতের আবহাওয়া দপ্তর (IMD) পূর্বাভাসে জানিয়েছে, দিল্লি-এনসিআর সংলগ্ন আশেপাশের বহু অঞ্চলে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত, বজ্রপাত ও বিদ্যুৎ চমকানোর সম্ভাবনা রয়েছে। পূর্বাভাস অনুযায়ী দিল্লি-এনসিআরের পাশাপাশি হরিয়ানার কাইথাল, নারওয়ানা, রাজাউন্ড, আসান্ধ, সাফিদোন, বারওয়ালা, জিন্দ, পানিপত, গোহানা এবং উত্তরপ্রদেশের মুজাফফরনগর, বাগপত, খেকড়া অঞ্চলে বৃষ্টিপাত হবে।
সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, এছাড়াও হালকা বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে হরিয়ানার কুরুক্ষেত্র, কর্নাল, গন্নৌর, সোনিপত, রোহতক, খারখোদা, চারখি দাদরি, ঝাজ্জর, ফরুখনগর, নারনৌল এবং উত্তরপ্রদেশের দেওবন্দ, খতাউলি, বারাউট, খুরজা, হাতরাস, সদরাবাদ ও রাজস্থানের ঝুনঝুনু, নগর, লক্ষ্মণগড় ও রাজগড় অঞ্চলে।
আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে দিল্লির সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৬.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি স্বাভাবিকের তুলনায় ০.২ ডিগ্রি কম। সকালে ৮টা ৩০ মিনিটে আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল প্রায় ৯৭ শতাংশ। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা প্রায় ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে, দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ভারী বর্ষণের ফলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। একাধিক রাজ্যে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে এবং শত শত মানুষ আটকে পড়েছেন। মহারাষ্ট্র সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলির একটি। এখানে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে এবং ২০০-রও বেশি মানুষ আটকে পড়েছেন বলে খবর মিলেছে। খবর অনুযায়ী হিমাচল প্রদেশে একাধিক ভূমিধসের কারণে প্রায় ৪০০টি রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, জম্মু ও কাশ্মীরের কিশ্তওয়ার জেলার মেঘভাঙা বৃষ্টিপ্রবাহে ক্ষতিগ্রস্ত একটি গ্রামে ধ্বংসাবশেষের নিচ থেকে আরও দুইটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ১৪ আগস্টের দুর্যোগে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৪ জনে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলেও পঞ্চম দিনেও সেখানে উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে প্রশাসন।
প্রসঙ্গত, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ শীঘ্রই পরিণত হতে পারে ঘূর্ণিঝড়ে। এর ফলে ধেয়ে আসছে প্রবল দুর্যোগ। এই নিম্নচাপের ফলে অন্ধ্রপ্রদেশের পাঁচটি জেলায় জারি করা হয়েছে লাল সতর্কতা। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ১৯ আগস্ট অর্থাৎ মঙ্গলবার সকালে দক্ষিণ ওড়িশা এবং উত্তর অন্ধ্র প্রদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে এই ঘূর্ণিঝড়। মৌসম ভবনের তরফে জানানো হয়েছে, ‘এই ঘূর্ণিঝড় ১৯ তারিখে দক্ষিণ ওড়িশা এবং উত্তর অন্ধ্রের উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এর প্রভাব হিসেবে অন্ধ্র প্রদেশের বিভিন্ন জেলায় ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে’। আবহাওয়ার এই পরিস্থিতির কারণে বিশাখাপত্তনম, অনাকাপল্লী, ডঃ বি আর অম্বেদকর কোনসীমা, কাকিনাডা ও পশ্চিম গোদাবরী জেলায় লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
পাশাপাশি, শ্রীকাকুলম, পার্বতীপুরম মন্যম, পূর্ব গোদাবরী, আল্লুরি সীতারামারাজু, এলুরু, কৃষ্ণা, বাপতলা, পালনাডু, প্রকাশম ও নন্দ্যাল জেলায় জারি করা হয়েছে কমলা সতর্কতা। কুর্নুল, অনন্তপুর, ওয়াইএসআর কড়পা, নেল্লোর, তিরুপতি ও চিত্তুর জেলায় হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বিশাখাপত্তনমের ঘূর্ণিঝড় সতর্কতা কেন্দ্র জানিয়েছে, উপকূলীয় বিভিন্ন জেলায় বজ্রবিদ্যুৎসহ হালকা ঝোড়ো হাওয়া (ঘণ্টায় ৩০–৪০ কিলোমিটার বেগে) ও ভারী বর্ষণ হতে পারে। বিশেষ করে শ্রীকাকুলম, বিজিয়ানাগরম, বিশাখাপত্তনম, অনাকাপল্লী, কাকিনাডা, কোনসীমা, পূর্ব গোদাবরী এবং ইয়ানাম জেলায় পরিস্থিতি খারাপের দিকে যেতে পারে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট জেলাগুলির বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।
