আজকাল ওয়েবডেস্ক: আইআইটি ভিলাইয়ে ১৮ বছরের এক মেধাবী ছাত্রের আচমকা মৃত্যু। মৃত্যু নিয়ে বড়সড় বিতর্ক। সৌমিল (সোমিল) সাহু নামে প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রটির মৃত্যু হয় চলতি মাসের ১১ নভেম্বর। অভিযোগ উঠেছে, ক্যাম্পাসের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসার ক্ষেত্রে মারাত্মক গাফিলতি হয়েছিল। যার জেরেই সৌমিলকে বাঁচানো যায়নি। এই ঘটনায় পুলিশি তদন্ত শুরু হয়েছে।

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা সৌমিল ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র ছিলেন। ১০ নভেম্বর তাঁর জ্বর আসে। পরের দিন সকালেই তাঁর শারীরিক অবস্থা খুব খারাপ হয়। দ্রুত তাঁকে কাছের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। সৌমিলের পরিবার এই ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে চরম অবহেলার অভিযোগ এনেছেন।

এই মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই ক্যাম্পাসে তীব্র উত্তেজনা দেখা যায়। মঙ্গলবার রাতে শিক্ষার্থীরা বিরাট বিক্ষোভ দেখান, যা চলে ভোর ৩টা পর্যন্ত। বুধবার সন্ধ্যায় তাঁরা মোমবাতি মিছিল করার চেষ্টা করলেও, প্রশাসন মূল ফটকে তা আটকে দেয়।

শিক্ষার্থীদের প্রধান অভিযোগ, আইআইটি ভিলাইয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা খুবই খারাপ। তাদের দাবি, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সময়মতো ডাক্তার বা অ্যাম্বুলেন্স পেলে সৌমিলকে হয়তো বাঁচানো যেত। দীর্ঘদিন ধরেই ক্যাম্পাসের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মীর অভাব ছিল বলেও তাঁরা জানিয়েছেন।

ইতিমধ্যে দুর্গ থানায় মামলা রুজু হয়েছে এবং পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। অতিরিক্ত এসপি সুখনন্দন রাঠোর জানিয়েছেন, ময়নাতদন্ত হয়ে গিয়েছে এবং এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত এগিয়ে চলছে।

এই ঘটনায় আইআইটি ভিলাই কর্তৃপক্ষ গভীর দুঃখ প্রকাশ করে একটি প্রেস বিবৃতি দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, সৌমিলের মৃত্যুতে তাঁরা শোকাহত। একইসঙ্গে তাঁর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছে।

কর্তৃপক্ষ এই ঘটনার পর বেশ কিছু জরুরি পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেছে,
পুলিশ সুপারকে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানের মেডিক্যাল অফিসারকে সঙ্গে সঙ্গে বরখাস্ত করা হয়েছে।
ক্যাম্পাসের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এখন থেকে ২৪ ঘণ্টা ডাক্তার ও অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।
একজন সরকারি ডাক্তার চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল, যা মঞ্জুর হয়েছে।

চিকিৎসার ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে এইমস এবং স্থানীয় সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও ছাত্র প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি ১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেবে।