আজকাল ওয়েবডেস্ক: ইন্ডিগোর এক বিমানে সহযাত্রী যুবককে চড় মেরেছিলেন এক ব্যক্তি। তার পর থেকে নিখোঁজ সেই যুবক। এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেছেন তাঁর পরিবার। ভাইরাল হওয়া ভিডিও দেখে তাঁকে শনাক্ত করেন পরিবারের সদস্যরা। নিখোঁজ যুবকের নাম হুসেইন আহমেদ মজুমদার (৩২), তিনি অসমের কাছাড় জেলার বাসিন্দা।
পরিবারের দাবি, বৃহস্পতিবার মুম্বই থেকে শিলচরগামী ইন্ডিগোর ফ্লাইট ৬ই-২৩৮৭-এ (যার মধ্যে কলকাতা ট্রানজিট) উঠেছিলেন হুসেইন। বিমানে হঠাৎ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন তিনি। ধারণা করা হচ্ছে, তাঁর প্যানিক অ্যাটাক হয়। এমন অবস্থায় দুই কেবিন ক্রু তাঁকে বিমানের দরজার দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন, তখনই পাশে বসা এক সহযাত্রী হঠাৎ তাঁকে চড় মেরে বসেন। ঘটনার ভিডিও অন্য এক যাত্রী মোবাইলে তুলে নেন।
ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, কেবিন ক্রুরা গায়ে হাত দিতে বারবার বারণ করলেও অভিযুক্ত যাত্রী তা অগ্রাহ্য করেন। বিমানের কলকাতা অবতরণের পর সিআইএসএফ ওই অভিযুক্তকে আটক করে। কিন্তু তারপরে হুসেইনের আর কোনও খোঁজ নেই বলে দাবি করেছে তাঁর পরিবার।
হুসেইনের বাবা আবদুল মান্নান মজুমদার জানান, শুক্রবার সকালে পরিবারের সদস্যরা শিলচর বিমানবন্দরে তাঁকে নিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি আসেননি। পরে ভাইরাল ভিডিও দেখে তাঁরা বুঝতে পারেন, ভিডিওতে যে যুবককে চড় মারা হচ্ছে, সে-ই তাঁদের ছেলে। এরপর ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও হুসেইনের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। পরিবার জানিয়েছে, ইন্ডিগো বা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁর অবস্থান সম্পর্কে কোনও তথ্য দিতে পারেনি। তারা বিমানবন্দরে নিযুক্ত কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তা বাহিনী কর্মকর্তাদেরও অবহিত করেছেন।
স্থানীয় উধারবন্দ থানায় নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে।
হোটেল কর্মী হিসেবে মুম্বইতে কাজ করেন হুসেইন। এই রুটে এর আগেও বহুবার তিনি যাতায়াত করেছেন বলে জানান তাঁর পরিবার।
আরও পড়ুন- ২০০৩-এ চাওয়া হয়নি নাগরিকত্বের প্রমাণ: নির্বাচন কমিশনের সাম্প্রতিক দাবি ঘিরে প্রশ্নের ঝড়
ইন্ডিগো সূত্রে জানানো হয়েছে, বিমানে সহযাত্রীর চড় মারার ঘটনায় অভিযুক্ত যাত্রী হাফিজুল রহমানকে কলকাতায় অবতরণের পর আটক করে সিআইএসএফ-এর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তবে অভিযুক্তকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
তবে বিমান সংস্থা নিখোঁজ যাত্রীর বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। হুসেইনের খোঁজে কাছাড় জেলার উদারবন্দ থানায় নিখোঁজ ডায়েরিও করা হয়েছে। পাশাপাশি বিমানবন্দরে থাকা সিআইএসএফ-কে বিষয়টি জানানো হয়েছে বলেও জানিয়েছে পরিবার।
ইন্ডিগো একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের মাধ্যমে জানিয়েছে, "আমাদের একটি ফ্লাইটে শারীরিক সংঘর্ষের ঘটনা সম্পর্কে আমরা অবগত। আমাদের ক্রুরা প্রতিষ্ঠিত স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (এসওপি) অনুসারে কাজ করেছে। জড়িত ব্যক্তিকে অশান্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং পৌঁছানোর পর নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রোটোকল অনুসারে, সমস্ত উপযুক্ত নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে যথাযথভাবে অবহিত করা হয়েছে।" তবে, বিবৃতিতে চড় মারা ব্যক্তি সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
