আজকাল ওয়েবডেস্ক: গ্রেটার নয়ডা পণ কাণ্ডে অভিযুক্ত বিপিনের বিরুদ্ধে আরও বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ্যে। শুধুমাত্র স্ত্রীর উপরেই নয়, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে প্রেমিকাকেও শারীরিক নির্যাতন করার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে! জানা গেছে, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের বিষয়টি নিকি জেনে যাওয়ার পরেই, প্রেমিকাকে অত্যাচার করা শুরু করেন তিনি। অভিযুক্ত বিপিনের বিরুদ্ধে গত বছর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তাঁর প্রেমিকা।
এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত বিপিন বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত ছিলেন। প্রেমিকার সঙ্গে তাঁকে হাতেনাতে ধরে ফেলেছিলেন স্ত্রী নিকি ও বৌদি কাঞ্চন। গত বছর অক্টোবর মাসে নয়ডায় একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। বিপিনের প্রেমিকা থানায় জানিয়েছিলেন, তাঁদের সম্পর্কের বিষয়ে জানতে পারেন নিকি। দুজনকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখেও ফেলেছিলেন। এরপরই তাঁকে বিপিন বেধড়ক মারধর করেন। বিপিনের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তাঁর প্রেমিকা।
পুলিশ তদন্তে নেমে আরও জানতে পেরেছে, গত ২১ আগস্ট নিকিকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর জানানো হয়েছিল, ঘরে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের জেরেই তিনি ঝলসে গেছেন। এদিকে বিপিনের বাড়িতে পৌঁছে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কোনও চিহ্ন পায়নি পুলিশ। নিকির দিদি কাঞ্চন পুলিশকে জানিয়েছেন, নিকিকে জ্বালিয়ে দেন বিপিন ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন দেবেন্দ্র নামের এক প্রতিবেশী।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ১০ ডিসেম্বর একই অনুষ্ঠানে নিকি এবং কাঞ্চন ভাই বিপিন এবং রোহিতকে বিয়ে করেন। কাঞ্চনের অভিযোগের ভিত্তিতে দায়ের করা এফআইআর অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিকিকে তাঁর স্বামী এবং শাশুড়ি দয়া আক্রমণ করে। কাঞ্চন বাধা দিলে তাকেও মারধর করা হয়। বিপিন নিকির উপর দাহ্য পদার্থ ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। কাঞ্চনের রেকর্ড করা মর্মান্তিক দৃশ্যে দেখা যাচ্ছে যে বিপিন নিকিকে আক্রমণ করছে। আরও একটি ক্লিপে দেখা যাচ্ছে যে জ্বলন্ত নিকি হোঁচট খাচ্ছেন সিঁড়ি দিয়ে। তাঁকে দ্রুত নিকটবর্তী একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় যেখানে তাঁকে দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে রেফার করা হয়, যেখানে তাঁর মৃত্যু হয়। কাঞ্চন বলেন যে তিনি অভিযুক্তদের বলতে শুনেছেন, “ওকে মেরে ফেলো, শেষ করে দাও।”
নিকি এবং বিপিনের একটি ছয় বছরের ছেলে আছে। সে তার মায়ের উপর হওয়া নির্যাতন এবং মৃত্যুকে প্রত্যক্ষ করেছে। নিকি মারা যাওয়ার পর কাঁপতে থাকা ছেলেটি বলে, “তারা প্রথমে মায়ের উপর কিছু একটা চাপিয়ে দেয়। তারপর তাকে থাপ্পড় মারে এবং তারপর লাইটার দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।”
নিকির দিদি কাঞ্চন ও বাবা জানিয়েছেন, বিয়ের সময় স্করপিও এসইউভি, রোয়াল এনফিল্ড বাইক, নগদ টাকা এবং সোনার গয়না পণ হিসেবে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারপরেও মন ভরেনি বিপিন ও তাঁর পরিবারের। আরও ৩৬ লক্ষ টাকা দাবি করেছিলেন। সেই টাকা না পাওয়া জীবন্ত অবস্থায় নিকিকে জ্বালিয়ে দেন। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় তরুণীর মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় শনিবারেই বিপিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরিবারের বাকি সদস্যদের রবিবার গ্রেপ্তার করে তারা।
