আজকাল ওয়েবডেস্ক: উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদে এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে৷ ঘটনায় প্রাণ হারালেন এক মহিলা সাব-ইনস্পেক্টর। সোমবার দুপুর প্রায় ২ টোর সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে। খবর পাওয়া সূত্র অনুযায়ী জানা গিয়েছে, নিহত সাব-ইনস্পেক্টরের নাম ঋচা সচান। তাঁর বয়স মাত্র ২৫ বছর। ঘটনা ঘিরে তোলপাড় রাজ্য।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছেছে, মহিলা সাব ইন্সপেক্টর কাবি নগর থানায় ডিউটি শেষ করে বাইকে করে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে আচমকা একটি কুকুরের সঙ্গে ধাক্কা লাগলে তিনি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তায় পড়ে যান। ঠিক সেই সময় পিছন দিক থেকে আসা একটি বেপরোয়া গাড়ি তাঁকে পিষে দেয়।
কাবি নগরের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ভাস্কর ভার্মা সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, আচমকা বাইকটি একটি কুকুরকে ধাক্কা দিলে ঋচা রাস্তায় পড়ে যান। এমন সময়ে পেছন থেকে আসা গাড়িটি তাঁকে চাপা দিয়ে দ্রুত গতিতে বেরিয়ে যায়। সূত্রে জানা গিয়েছে, দু্র্ঘটনার সময় তিনি হেলমেট পরা অবস্থায় ছিলেন। তবুও আঘাত এতটাই গুরুতর ছিল যে তৎক্ষণাৎ তাঁকে স্থানীয় সারবোদয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
সূত্রে জানা গিয়েছে, ঋচা কানপুরের বাসিন্দা ছিলেন। ২০২৩ সালে সাব-ইনস্পেক্টর হিসেবে নিয়োগ পান। বর্তমানে তিনি শাস্ত্রী নগর পুলিশ আউটপোস্টের দায়িত্বে ছিলেন। একইসঙ্গে তিনি ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতিও নিচ্ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। তাঁর পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, আগামী বছর তাঁর বিয়ের পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
আরও পড়ুনঃ অতিবৃষ্টিতে জলমগ্ন রাজধানী দিল্লি! চূড়ান্ত ভোগান্তি, বিপর্যস্ত জনজীবন...
সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার পরে গাজিয়াবাদ পুলিশ লাইনে তাঁকে গার্ড অফ অনার দেওয়া হয় এবং পরবর্তীতে তাঁর ময়নাতদন্ত করা হয়।
প্রসঙ্গত, রাজধানী দিল্লিতে বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চলছে। সম্প্রতি, রাস্তার কুকুরদের মিউনিসিপ্যাল শেল্টারে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, এই রায়ের প্রতিবাদে শতাধিক পশুপ্রেমী কর্মী মঙ্গলবার রাত ১২টায় হনুমান মন্দির ও বাংলা সাহিব গুরুদ্বারে প্রার্থনাসভা আয়োজন করেন।
প্রায় ২০০ জন অংশগ্রহণকারী 'আওয়ারা নয়, আমাদের' শ্লোগান লেখা ব্যানার বহন করে হনুমান চালিসা পাঠ করেন। পরবর্তীতে বাংলা সাহিব গুরুদ্বারে গিয়ে তাঁদের প্রার্থনা চালিয়ে যান। তাঁদের দাবি, রাস্তার কুকুরদেরও এই সমাজে বাঁচার অধিকার রয়েছে। এহেন তাদের জোর করে সরিয়ে নেওয়া অমানবিক।
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ও চলমান প্রতিবাদ একদিকে যেমন প্রশ্ন তোলে রাস্তার পশুদের নিরাপত্তা ও মানবিক আচরণের বিষয়ে, অন্যদিকে তেমনই রাস্তায় চলাচলের সময় নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়েও নতুন করে ভাবনার দরজা খুলে দেয়।
