আজকাল ওয়েবডেস্ক: কোটা বিরোধী আন্দোলনের জেরে বাংলাদেশ ছেড়ে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পালিয়ে যান। তার পর থেকে তিনি ভারতেই রয়েছেন সুরক্ষিত ভাবে। সম্প্রতি ঢাকার আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল ছাত্র আন্দোলনে তাঁর ভূমিকার কারণে মৃত্যুর সাজা ঘোষণা করেছে। ভারতে তাঁর অবস্থান দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। কারণ, ঢাকা ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকবার তাঁকে প্রত্যর্পণের দাবি জানিয়েছে।

২০২৪ সালের অক্টোবরে দ্য প্রিন্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারত সরকারের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনার জন্য নয়াদিল্লির লুটিয়েন্স বাংলো জোনে একটি ‘নিরাপদ বাড়িতে’ থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ৭৮ বছর বয়সী প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে একই ধরণের বাংলো বরাদ্দ করা হয়েছে যা মন্ত্রী, সিনিয়র সাংসদ এবং শীর্ষ আধিকারিকদের জন্য বরাদ্দ করা হয়।

এদিকে, বাংলাদেশ ভারতকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি করার জন্য ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। গত বছর দেশব্যাপী ছাত্র বিদ্রোহের উপর সহিংস দমনপীড়নে তাঁর ভূমিকার অভিযোগে গত ১৭ নভেম্বর বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) শেখ হাসিনাকে সাজা প্রদান করে রায় ঘোষণা করে।

এরপরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল বাংলাদেশের প্রবল চাপে কত দিন ভারতে থাকতে পারবেন হাসিনা। এই বিষয়ে মুখ খুললেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। একটি সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে তিনি এদিন জানান, বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে থাকার সিদ্ধান্ত পুরোপুরি তাঁর ব্যক্তিগত। বাংলাদেশের ‘পরিস্থিতি’র কারণে তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে এসে ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছিলেন।

শনিবার এইচটি লিডারশিপ সামিটে এনডিটিভির সিইও এবং এডিটর-ইন-চিফ রাহুল কানওয়ালের সঙ্গে একটি আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন জয়শঙ্কর। সেখানেই তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, হাসিনা ‘যতদিন চান’ ভারতে থাকতে পারবেন কিনা। এই প্রশ্নের জবাবে জয়শঙ্কর বলেন, “এটি আলাদা বিষয়। তিনি এখানে একটি নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে এসেছিলেন। এবং আমি মনে করি সেই পরিস্থিতি স্পষ্টতই তাঁর সঙ্গে যা ঘটেছে তার একটি কারণ। এটি এমন একটি বিষয় যেখানে তাঁকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার গত মাসে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার জন্য ভারতকে একটি আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠিয়েছিল। ২১ নভেম্বর শুক্রবার নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে ভারতে এই চিঠি পাঠানো হয়েছিল। বাংলাদেশ ইতিমধ্যে তিনবার ভারত থেকে শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের অনুরোধ করেছে। এর আগে, ২০ এবং ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ তারিখে তাকে প্রত্যর্পণের আহ্বান জানিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছিল।