আজকাল ওয়েবডেস্ক: রাজস্থানে বিদ্যালয়ে ছাদ ভেঙে বিপত্তি। জানা গিয়েছে ঝালাওয়াড়ে শুক্রবার সকালে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাদ আচমকা ধসে পড়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে। পিপলোড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত সাতজন শিশু নিহত হয়েছে। আরও অনেকেই ধ্বংসাবশেষের নিচে আটকা পড়েছে সূত্র মারফত খবর। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঘটনার জেরে প্রাথমিকভাবে বিদ্যালয়ের পাঁচজন শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে।

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনাস্থল একটি চার কক্ষবিশিষ্ট বিদ্যালয় ভবন। যার একটি কক্ষের ছাদ ধসে পড়ে। তথ্য অনুযায়ী এই বিদ্যালয়টি ১৯৯৪ সালে গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধ্যমে নির্মিত হয়েছিল। স্কুল চলাকালীন সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ আচমকা ছাদ ধসে পড়ে। তখন শিশুরা ক্লাসরুমের মধ্যে বসে পড়াশোনা করছিল। জানা গিয়েছে বিদ্যালয় ভবনটি বহু বছর ধরেই দুর্বল ও জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সাম্প্রতিককালে ভারি বৃষ্টিপাতের জেরে এর কাঠামোগত স্থায়িত্ব ক্রমশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা ও শিশুর পরিবারের সদস্যরা দ্রুত স্কুলে ছুটে আসেন। জানা গিয়েছে তড়িঘড়ি  নিজেরাই উদ্ধারকার্যে সহায়তা করতে থাকেন। পরবর্তীতে উদ্ধার বাহিনী কে খবর দেওয়া হয়। তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছলে ধ্বংসস্তূপ সরাতে ক্রেনের সাহায্যে উদ্ধারকাজ চালানো হয়। ঘটনায় কয়েকজন শিশু গুরুতর আহত হয়। আহত অবস্থায় শিশুদের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করা হয়। রাজস্থান শিক্ষা দপ্তর নিশ্চিত করেছে যে এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত সাতজন শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মা এক ভিডিও বার্তায় এই মর্মান্তিক ঘটনার জন্য শোক প্রকাশ করেছেন। শোকস্তব্ধ ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, 'এই ঘটনায় নিরপরাধ শিশুদের মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে মর্মাহত। রাজ্য সরকার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে আছে।' তিনি আরও জানিয়েছেন, আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা উন্নতভাবে করা হচ্ছে। এর জন্য স্বাস্থ্য দপ্তরকে সেই অনুযায়ী নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ টানা একবছর লাগাতার ধর্ষণ, এরপর জ্যান্ত কবর! ওড়িশায় তরুণীর সঙ্গে যা ঘটল শুনলে গা শিউরে উঠবে...

সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে রাজ্যের স্বাস্থ্য মন্ত্রী মদন দিলাওয়ারকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, জেলা কালেক্টরদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা সরকারি ভবন দুর্বল বা ভাঙাচোরা অবস্থায় না থাকে। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যেন আর না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। 

অন্যদিকে, দুর্ঘটনার পরে স্থানীয় মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়েন। পুলিশ গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ হালকা বলপ্রয়োগ করে। এমনকি এলাকায় পাথর নিক্ষেপের ঘটনাও রিপোর্ট করা হয়েছে।

সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এই হৃদয়বিদারক ঘটনায় রাজ্য জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শিশুরা যখন শিক্ষা গ্রহণে ব্যস্ত ছিল, তখনই এই বিপর্যয় তাদের জীবন কেড়ে নেয়। সরকারি উদ্যোগ ও তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ পাশাপাশি ভবিষ্যতে যেন এমন দুর্ঘটনা আর না ঘটে, সে দিকেও বিশেষ নজর দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

আরও পড়ুনঃ 'সুখ দিতে পারো না বেঁচে থেকে লাভ কী?' শরীরী খিদে মেটাতে ব্যর্থ স্বামীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়লেন স্ত্রী