আজকাল ওয়েবডেস্ক: মন্দিরে গিয়েছিলেন। আরতি দেখছিলেন। জানতেন না তখনও কী ভয়াবহ পরিস্থিতি আসতে চলছে। জানতেন না। মুহূর্তে বদলে যাবে সব। সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, বারাণসীর এক মন্দিরে, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায়, ঝলসে গিয়েছেন অন্তত সাতজন। ঘটনাটি ঘটেছে, শনিবার রাতে।
জানা গিয়েছে, শনিবার বারাণসীর আত্মবিরেশ্বর মন্দিরে জমায়েত হয়েছিল বহু মানুষের। আরতির সময় সকলের মনযোগ ছিল সেদিকেই। আচমকা লক্ষ করেন, মন্দিরে সাজসজ্জায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। মুহূর্তে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শুরু হয় হুড়োহুড়ি।
আরও পড়ুন: 'যেন দাবার ঘুঁটি সাজানো...', কোন চালে পাক-মাত, অপারেশন সিঁদুরের রণকৌশল এল সামনে...
অন্তত সাতজন আগুনে ঝলসে গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, সাতজনের মধ্যে একাধিক শিশুও রয়েছে। একজনের দেশ প্রায় ৬৫ শতাংশ ঝলসে গিয়েছে বলেও জানা গিয়েছে প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত। জানা গিয়েছে, ঘটনার পরেই স্থানীয়রা তৎক্ষণাৎ জখমদের উদ্ধার করে নিয়ে যান স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতালে।
যদিও, অগ্নিকাণ্ডের কারণ এখনও জানা যায়নি। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, শট সার্কিট থেকে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
এর আগে, জুলাইয়ের শেষ দিকে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছিল মন্দিরে। উত্তরপ্রদেশের বারাবঁকি জেলার আওসানেৎশ্বর মহাদেব মন্দিরে ভয়াবহ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় অন্তত দুই জন ভক্তের। আহত হন আরও ১৯ জন। পুলিশ ও জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সকাল ৩টা নাগাদ মন্দিরে জড়ো হওয়া ভক্তদের উপর আচমকা একটি বিদ্যুতের তার পড়ে যায়, যার ফলে হুড়োহুড়ি ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনা প্রসঙ্গে জেলা শাসক শশাঙ্ক ত্রিপাঠী জানিয়েছিলেন, “সোমবার শ্রাবণ মাসের তৃতীয় সোমবারে দর্শনের জন্য ভোর থেকেই ভক্তরা জমা হয়েছিলেন। সেই সময় কিছু বানর ওভারহেড বৈদ্যুতিক তারে লাফাতে থাকে, যার ফলে পুরনো ও ক্ষয়প্রাপ্ত তারটি ছিঁড়ে পড়ে টিনের ছাউনির ওপর। ছাউনিতে কারেন্ট ছড়িয়ে পড়ে এবং বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন অনেকেই।” পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের মধ্যে একজন হলেন মুবারকপুরা গ্রামের বাসিন্দা ২২ বছর বয়সি প্রশান্ত। অপর ব্যক্তির পরিচয় এখনও জানা যায়নি। দু'জনেরই মৃত্যু হয় ত্রিবেদিগঞ্জ কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায়।
এর ঠিক এক দিন আগেই, হরিদ্বারের মানসা দেবী মন্দিরেও ঘটে আরও একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। সেখানে আটজনের মৃত্যু হয় ও ৩০ জন আহত হন মন্দিরে উঠতে গিয়ে হুড়োহুড়ির ফলে। পুলিশ সূত্রে খবর, মন্দিরে প্রবেশপথের সিঁড়ির কাছে কারেন্ট ছড়ানোর গুজব ছড়িয়ে পড়তেই আতঙ্কে মানুষ ছোটাছুটি শুরু করে, যার ফলে এই বিপর্যয় ঘটে।
হরিদ্বারের এসএসপি প্রমেন্দ্র সিং ডোবাল ঘটনা প্রসঙ্গে জানিয়েছিলেন, “সপ্তাহান্তে প্রচুর ভক্ত ভিড় করেছিলেন মানসা দেবী মন্দিরে। এটি ৫০০ ফুট উঁচু শিবালিক পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত। প্রচণ্ড ভিড় এবং গুজবের জেরে হুড়োহুড়ি শুরু হয়।” উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং একটি বিচার বিভাগীয় তদন্তের ঘোষণা করেছেন। এই দুই ঘটনার পর প্রশ্ন উঠছে, বারবার সতর্কতা সত্ত্বেও শ্রাবণের ভিড় সামলাতে প্রশাসন কতটা প্রস্তুত থাকে? বারবার বিদ্যুৎ ও ভিড়জনিত দুর্ঘটনা কেন ঘটছে? প্রশাসনের গাফিলতি নাকি অব্যবস্থাপনাই দায়ী, তা নিয়েও শুরু হয়েছিল চর্চা।
