আজকাল ওয়েবডেস্ক: উত্তরপ্রদেশের হাপুর জেলার সিম্ভাভলি এলাকায় ঘটল চাঞ্চল্যকর এক ঘটনা। এক বিবাহিত মহিলার সঙ্গে ওয়ো হোটেলে আপত্তিকর অবস্থায় ধরা পড়ে এক যুবক নগ্ন অবস্থায় পালিয়ে যায় রাস্তায়। সেই ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়, যা নিয়ে উত্তাল নেটপাড়া। জানা গেছে, মহিলাটি গত কয়েকদিন ধরে গোপনে এক যুবকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করছিলেন। তবে এদিন তাঁর পরিবারের সদস্যরা সন্দেহবশত মহিলাটিকে অনুসরণ করতে শুরু করেন। তাঁরা হোটেলে পৌঁছে দরজা জোর করে খুলে ফেলেন এবং তৎক্ষণাৎ ওই মহিলা ও যুবককে নগ্ন অবস্থায় দেখতে পান। এরপরই ক্ষিপ্ত আত্মীয়রা ভিডিও বানাতে করতে শুরু করেন। ভিডিও ক্যামেরা দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে ওই যুবক। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে নগ্ন অবস্থাতেই তিনি হোটেল থেকে পালাতে শুরু করেন এবং সোজা দৌড়ে জাতীয় সড়কে উঠে পড়েন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নগ্ন অবস্থায় অনেকটা পথ দৌড়ে যান ওই যুবক। তাঁর পিছু নেন মহিলার আত্মীয়রা, কিন্তু কেউই তাকে ধরতে সক্ষম হননি।

রাস্তায় নগ্ন যুবককে দৌড়াতে দেখে অনেক পথচারী হতবাক হয়ে যান। অনেকে আবার মোবাইলে সেই দৃশ্য ভিডিও করে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করেন। ইতিমধ্যেই ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে গেছে। ঘটনার পর পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছে। হাপুর পুলিশ জানিয়েছে, "ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত চলছে। হোটেল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, সে বিষয়ে আমরা সচেতন। ভিডিও শেয়ারকারীদের বিরুদ্ধেও উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।" এদিকে, সমাজের একাংশ এই ঘটনাকে 'নৈতিক পুলিশের' বাড়বাড়ন্ত বলে মনে করছেন। আবার অনেকে বলছেন, ব্যক্তিগত সম্পর্কের এমন প্রকাশ্য বিস্ফোরণ সমাজে অস্থিরতা তৈরি করছে। স্থানীয়দের মতে, এই ঘটনায় শুধুমাত্র ব্যক্তি নয়, হোটেলের গোপনীয়তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। হোটেল কতটা নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছে, তা নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে।

আরও পড়ুন: বাবার নাম 'কুত্তা বাবু' মায়ের নাম 'কুতিয়া দেবী'! কুকুরের নামে আবাসন সার্টিফিকেট! প্রশাসনিক গাফিলতিতে নিন্দার ঝড় বিহারে

এই ঘটনায় হাপুরের সিম্ভাভলি অঞ্চল এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। পুলিশ জানিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং তদন্ত শেষ হলে আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কমেন্ট সেকশনে ঠাট্টা-মশকরা, পরকীয়া ঘিরে সমাজে উদ্বেগ এই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হতেই নেটদুনিয়ায় শুরু হয়েছে চরম হাসাহাসি। কমেন্ট সেকশনে নানান রসিকতা ছড়িয়ে পড়েছে। কেউ লিখছেন, "ওয়াইফাই নেই তো কি হয়েছে, হাইওয়ে তো আছে!" কেউ মজা করে বলেছেন, "ওয়ো হোটেল থেকে সোজা দৌড়ে হাইওয়ে হয়ে গেল!" আরেকজন লিখেছেন, "ইশক ওয়ালা লুঙ্গি তো পরত!" কেউ কেউ তো বলেই ফেলেছেন, "ভাই, প্রেম করো কিন্তু GPS অফ করে!"

অন্যদিকে, অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন পরকীয়া ঘিরে সমাজে ক্রমবর্ধমান অস্থিরতা নিয়ে। বিশেষ করে ডিজিটাল যুগে সোশ্যাল মিডিয়া, গোপন চ্যাটিং অ্যাপ এবং সস্তা হোটেলের সহজলভ্যতা – এই সমস্ত কিছু পরকীয়াকে উসকে দিচ্ছে। এই ঘটনা যেমন কৌতুকের খোরাক, তেমনই এটি এক গভীর সামাজিক সংকেতও। মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, দাম্পত্যে মানসিক দূরত্ব বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরকীয়া অনেক সময় এক ধরনের মানসিক পালানোর পথ হয়ে ওঠে। তবে সমাজে পরকীয়া নিয়ে যে নৈতিক পুলিশিং বা জনসমক্ষে হেনস্থা বাড়ছে, তা নিজেই এক ভয়ংকর প্রবণতা। পরিণামে, এই ধরনের ঘটনা শুধুমাত্র ব্যক্তিগত সম্পর্ক নয়, সামগ্রিক সামাজিক পরিবেশকেও এক অস্থির ও রূঢ় চেহারা দিচ্ছে, যেখানে ‘লজ্জা’ আর ‘আত্মমর্যাদা’র বিভাজনরেখা ক্রমেই অস্পষ্ট হয়ে উঠছে।

?ref_src=twsrc%5Etfw">July 25, 2025