নিতাই দে: এলাকার মানুষের বাড়িঘর সহ মানুষের ধানের খেত ফসলের জমি আর নষ্ট করবে না 'টিউমার'। চার দিন ধরে লড়াইয়ে পর মধ্যে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল আহত সেই বন্য হাতিটি। রেললাইন পার হওয়ার সময় দ্রুত গতিতে থাকা ট্রেনের ধাক্কায় আহত হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছিল 'টিউমার' নামক হাতিটি। চিকিৎসক এবং বনদপ্তরের কর্মীদের সব রকমের প্রচেষ্টার পরও বাঁচানো গেল না তাকে। 

গত শনিবার রাতে খোয়াই জেলার তেলিয়ামুড়া মহকুমার অন্তর্গত শালবাগান এলাকায় লাইন পার হওয়ার ট্রেনের ধাক্কায় গুরুতর আহত হয় হাতিটি। সেই দুর্ঘটনায় তার পিছনের দুটি পা ভেঙে অচল হয়ে গিয়েছিল। ঘটনার দিন রাত থেকেই প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তরের চিকিৎসকরা হাতিটির চিকিৎসা শুরু করেছিল। অক্লান্ত পরিশ্রমেও বাঁচানো গেল না হাতিটিকে। জানা গিয়েছে, বনদপ্তরের পক্ষ থেকে হাতিটিকে আরও উন্নত পরিষেবা দেওয়ার জন্য গুজরাট থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আনা হচ্ছিল। হাতিটিকে গভীর জঙ্গল থেকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে ভালোভাবে যাতে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া যায় তার জন্য হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বনদপ্তরের। আহত 'টিউমার' সেই সুযোগ আর দেয়নি বনদপ্তরকে। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তে বনদপ্তরে কর্মী এবং তেলিয়ামুড়া মহকুমা সহ পশুপ্রেমীদের মধ্যে সুখের ছায়া দেখা দিয়েছে। 

সোমবার সকাল থেকেই আশপাশের এলাকার বহু মানুষ 'টিউমার'কে দেখতে ভিড় জমিয়েছেন এবং শেষ শ্রদ্ধাও জানান অনেকে। বনদপ্তরের পক্ষ থেকে হাতিটিকে পূজা-অর্চনা করে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়। এদিন বনদপ্তরের জেলা আধিকারিক অক্ষয় কুমার রোবদে-র উপস্থিতিতে হাতিটিকে ময়নাতদন্ত করে মাটি চাপা দেওয়া হয়। অক্ষয় কুমার জানান, জঙ্গলের যে জায়গাটিতে দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল সেটি হাতির চলাচলের রাস্তা। ওই এলাকায় ট্রেনের গতি কম থাকার কথা ছিল। কীভাবে ওই এলাকা দিয়ে দ্রুত গতিতে ট্রেন চলাচল করছে তা তদন্ত করে দেখতে আরপিএফ থানাতে বনদপ্তরের তরফ থেকে একটি মামলা করা হয়েছে।