আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভোরের আলো তখনও ঠিক করে ফোটেনি। সোমবার আচমকা কেঁপে উঠল দিল্লি। প্রাণভয়ে রাস্তায় নেমে এলেন দিল্লির মানুষ। ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি জানিয়েছে, ভূমিকম্পের উৎসস্থল দিল্লির ধৌলাকুঁয়া। কেন্দ্রস্থল ভূপৃষ্ট থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার গভীরে ছিল। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৪। কিন্তু কেন বার বার কেঁপে উঠছে দেশের রাজধানী।
ভূমিকম্প অনুভূত হওয়া দিল্লিতে নতুন কিছু নয়। গত মাসে নেপালের কাঠমান্ডুতে কম্পন অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে মাত্রা ছিল ৭.১। নেপালের ভূমিকম্প টের পাওয়া গিয়েছিল দিল্লি-এনসিআর এলাকাতেও। দিল্লি বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ (ডিডিএমএ) জানিয়েছে, দিল্লিতে ঘনঘন ভূমিকম্প বা কম্পন অনুভূত হওয়ার কারণ রাজধানীর ভৌগলিক অবস্থান। দিল্লি-দেহরাদুন ফল্ট লাইনের খুব কাছেই দিল্লির অবস্থান।
ভূমিকম্পের তীব্রতা এবং হার অনুযায়ী ভারতকে চারটি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। দিল্লি চুতর্থ ভাগে অবস্থিত অর্থাৎ ''মোটামুটি উচ্চ ভূমিকম্পপ্রবণ"। এর ফলে ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে দিল্লি "উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা"। সাধারণত, দিল্লিতে ভূমিকম্প ৫-৬ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। তবে, ৭-৮ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে বেশ কয়েকবার। ১৭২০ সাল থেকে দিল্লি বা তার আশেপাশের এলাকায় ৫.৫ থেকে ৬.৭ মাত্রার মাত্র পাঁচটি ভূমিকম্প খতিয়ান রয়েছে। দিল্লি-হরিদ্বার ফল্ট এবং দিল্লি-মোরাদাবাদ ফল্ট হল দু'টি প্রধান লাইন গিয়েছে দিল্লির নীচ দিয়ে। এর ফলে দিল্লিতে রিখটার স্কেলে ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। গোটা হিমালয় অঞ্চলই ভূমিকম্পের দিক থেকে অত্যন্ত সক্রিয়। দিল্লি হিমালয়ে নিকটবর্তী হওয়ায় সেখানে কম্পনের ঝুঁকি রয়েছে। জাতীয় ভূকম্পন কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, দিল্লির কাছে আরও বেশ কিছু দুর্বল অঞ্চল এবং ফল্ট লাইনও রয়েছে। যেমন মহেন্দ্রগড়-দেরাদুন সাবসারফেস ফল্ট, মোরাদাবাদ ফল্ট, সোহনা ফল্ট, গ্রেট বাউন্ডারি ফল্ট, দিল্লি-সারগোধা রিজ ইত্যাদি।
গোটা উত্তর-পশ্চিম ভারত দাঁড়িয়ে রয়েছে এমন একটি ‘কম্পন অধ্যুষিত’ অঞ্চলে যাকে ভূকম্প বিশেষজ্ঞেরা ‘হটস্পট’ বলে অভিহিত করেছেন। অর্থাৎ কি না এই অঞ্চলে প্রতিনিয়তই রিখটার স্কেলে ৪, সাড়ে ৪, ৫ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েই থাকে। বিশেষজ্ঞেরা এই কম্পনে মোটেই বিচলিত নন। তাঁদের পূর্বাভাস, উত্তর-পশ্চিম হিমালয়ে অদূর ভবিষ্যতে রিখটার স্কেলে ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের আশঙ্কা রয়েছে।
