অরিন্দম মুখার্জি: ১০১ বছরে শারদোৎসব পূর্ণ করল ঝাড়খণ্ডের ভোজুডীর বেঙ্গলি ক্লাব। নিয়ম মেনে সাবেককিআনায় নবপত্রিকা স্নানের মাধ্যমে মাতৃ আরাধনার সূচনা হয়। এই শহরে চারটে পুজো হয়। তার মধ্যে বেঙ্গলি ক্লাবের পূজোটাই সবথেকে বড়। পুজোর সময় রেল শহরের বাসিন্দাদের ভিড় পুজোর মণ্ডপে মণ্ডপে ভরে ওঠে। বিশেষত কচিকাচাদের ভিড় পুজোকে অন্য মাত্রায় পৌঁছে দেয়। তারা প্রত্যেকে জাতি নির্বিশেষে এক জায়গায় মিলিত হয়ে আনন্দ ভাগ করে নেয়। 

 

মাঝেমধ্যে রেল ইঞ্জিনের আওয়াজ পুজোকে আরেক অন্য রকমের মাত্রা সংযোগ করে। ঝাড়খণ্ডের এই ভোজুডি রেলওয়ে টাউনশিপটা ছোট্ট নাগপুরের মালভূমি শহর। মূলত ভোজুডি এই শহরটি ঝাড়খণ্ডের বর্ডার। এই স্টেশনের আগের স্টেশনটি পুরুলিয়ার অন্তর্গত সাঁওতালডি। মূলত এই শহরটিতে অধিকাংশ বাঙালির বাস। তাছাড়া ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তের লোক এই রেল শহরে চাকরি করতে আসেন। কিন্তু যেহেতু এটা বাংলার পরের শহর সেজন্য এই অঞ্চলে অন্য জাতির তুলনায় বাঙালি জাতির সংখ্যা অনেক বেশি। সেজন্যই এই রেল শহরে ব্রিটিশ শাসনকালে ১৯২৩ সালে বেঙ্গলি ক্লাব গড়ে উঠেছিল এবং পুজোর সময় বিভিন্ন রকমের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয় বেঙ্গলি ক্লাবে। 

 

পুজোর সময় তার সঙ্গে চার দিন ধরে চলে খাওয়াদাওয়া। ঝাড়খণ্ডের এই ভোজুডি রেলওয়ে শহর চারদিক ঘিরে আছে নদী আর জঙ্গল। ছোট ছোট টিলা। শহরটির একদিকে রয়েছে দামোদর নদী, একদিকে রয়েছে গোয়াই নদী, একদিকে রয়েছে হিজরী নদী। এই রেল শহরে যখন কোনও নতুন পর্যটক ঘুরতে আসেন তখন প্রত্যেকেই মায়া কাটিয়ে এই স্থান ছেড়ে যেতে পারেন না। এই শহরটি ঝাড়খণ্ডের একটি দর্শনীয় স্থানের মধ্যে পরে। এখানে ভৈরব স্থান নামের এক জায়গায় সারা বছর ধরে প্রচুর পর্যটক ঘুরতে আসেন। 

 

রেলওয়ে জংশনের এই স্থান থেকে ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন জেলায় পৌঁছে যাওয়া যায়। কিছুটা গেলেই নেতাজি সুভাষ চন্দ্রের বোসের বাড়ি দেখতে পাওয়া যায় গোমোতে। বেঙ্গলি ক্লাব একদম তিথি এবং নিয়ম মেনে চার দিন ধরে নিষ্ঠার সঙ্গে দুর্গাপুজোর আচার পালন করে। এখন থেকেই তারা আগামী বছরের পুজোর পরিকল্পনা শুরু করে।

 

ছবি গৌরাঙ্গ বাউরী