আজকাল ওয়েবডেস্ক: জেলবন্দি পরিবেশ আন্দোলনকারী সোনম ওয়াংচুকের আটকাদেশ চ্যালেঞ্জ করে তাঁর স্ত্রী গীতাঞ্জলি জে. আংমো দায়ের করা পিটিশন সোমবার সুপ্রিম কোর্টে শুনানি হবে। তিনি দাবি করেছেন, এনএসএ বা জাতীয় নিরাপত্তা আইনের অধীনে তাঁর স্বামীর আটক “বেআইনি” এবং “সংবিধানবিরোধী”, যা মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ।

শুনানি বিচারপতি অরবিন্দ কুমার এবং বিচারপতি এন.ভি. অঞ্জারিয়ার ডিভিশন বেঞ্চের সামনে হওয়ার কথা।

গত ২৪ নভেম্বর কেন্দ্র ও লাদাখ প্রশাসনের আইনজীবী সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা অতিরিক্ত সময় চাওয়ায় শুনানি স্থগিত হয়েছিল। তার আগে, ২৯ অক্টোবর আংমো পরিবর্তিত পিটিশন দায়ের করলে আদালত কেন্দ্র ও কেন্দ্রশাসিত লাদাখ প্রশাসনকে নোটিস জারি করে।

আবেদনপত্রে বলা হয়েছে, ওয়াংচুকের বিরুদ্ধে আটকাদেশ “পুরোনো এফআইআর, অস্পষ্ট অভিযোগ এবং অনুমাননির্ভর ব্যাখ্যার ওপর ভিত্তি করে” এবং এর সঙ্গে কোনও “সরাসরি বা জীবন্ত সংযোগ” নেই। অভিযোগ, এভাবে প্রতিরোধমূলক আটক ক্ষমতা ব্যবহার সংবিধানিক ন্যায়বিচার এবং স্বাধীনতার ওপর “গুরুতর আঘাত”, যা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহারের সমান।

আংমো আরও বলেছেন, তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে শিক্ষা, পরিবেশ এবং সামাজিক উদ্ভাবনে কাজ করা ওয়াংচুক হঠাৎ এমন অভিযোগের মুখে পড়বেন—এই ধারণাই “অবাস্তব ও হাস্যকর”। তিনি দাবি করেছেন, ২৪ সেপ্টেম্বর লেহ-এ যে সহিংসতা হয়েছিল তার সঙ্গে ওয়াংচুকের কোনও সম্পর্ক নেই। বরং তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় সহিংসতার নিন্দা করেছিলেন এবং লিখেছিলেন যে এমন ঘটনা লাদাখের “পাঁচ বছরের অহিংস আন্দোলনকে বিপথে নিয়ে যাবে” এবং সেটি তাঁর জীবনের “সবচেয়ে দুঃখের দিন” বলে উল্লেখ করেছিলেন।

ওয়াংচুককে ২৬ সেপ্টেম্বর এনএসএ-র অধীনে আটক করা হয়, লেহ-এ প্রতিবাদে সহিংসতায় চারজন নিহত এবং ৯০ জন আহত হওয়ার পর। সরকারের অভিযোগ তিনি উত্তেজনা ছড়ানোর ভূমিকা নিয়েছিলেন—যা তাঁর সমর্থকেরা দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেছেন। এনএসএ অনুযায়ী, কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার এমন ব্যক্তিকে আটক রাখতে পারে, যাঁদের কর্মকাণ্ড “দেশের নিরাপত্তা বা প্রতিরক্ষা স্বার্থের বিরুদ্ধে” বলে মনে হয়। এই আটকাদেশ সর্বোচ্চ ১২ মাস পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে।

ওয়াংচুকের দীর্ঘদিনের পরিবেশ আন্দোলন, লাদাখের সাংবিধানিক অধিকার এবং ষষ্ঠ তফসিলের দাবিকে কেন্দ্র করে এই মামলা এখন লাদাখ ছাড়িয়ে জাতীয় স্তরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। আজকের সুপ্রিম কোর্টের শুনানি ঠিক করবে—ওয়াংচুকের আটকাদেশ আইনত যুক্তিসঙ্গত কিনা, নাকি তা কোনওভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অতিরিক্ত প্রয়োগ।