আজকাল ওয়েবডেস্ক: মাদুরাইয়ে আসন্ন ২৪তম পার্টি কংগ্রেসে ‘কট্টরপন্থী’ অবস্থানের দিকে ঝুঁকতে চলেছে সিপি আইএম? অন্তত দলের তরফে প্রকাশিত রাজনৈতিক খসড়া প্রতিবেদনে সেই ইঙ্গিতই মিলেছে। দেশে নয়া উদারবাদ এবং পরিচিতি সত্তা রাজনীতির উত্থানের দায় কংগ্রেস এড়াতে পারে না বলেই মনে করছে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। একই সঙ্গে কংগ্রেসর ‘নরম হিন্দুত্ব’ নিয়েও সমালোচনার উল্লেখ রয়েছে খসড়া প্রতিবেদনে। 

পাশাপাশি পার্টির দলিলে ফিরে এসছে ১৯৯৬ সালে প্রয়াত জ্যোতি বসুকে প্রধানমন্ত্রী না হতে দেওয়ার উল্লেখ। ঘটনাটিকে ‘সঠিক’ বলেই মনে করছে এ কে গোপালন ভবন। যেই জ্যোতি বসুকে সামনে রেখে দীর্ঘ সাড়ে তিন দশক সরকার চালিয়েছে বামেরা, যার নামাঙ্কিত সদ্য উদ্বোধন হওয়া গবেষণা কেন্দ্রের মঞ্চে দাঁড়িয়ে জ্যোতি বসুর অবদানের কথাও স্মরণ করিয়েছেন প্রকাশ কারাট, সেই জ্যোতি বসুকেই কার্যত অস্বীকার করল তাঁর খসড়া দলিল। 

তাহলে কি সদ্য প্রয়াত সীতারাম ইয়েচুরির তৈরি করা লাইন থেকে ফের সরে দাঁড়াতে চাইছে দল? দলের মধ্যে ‘নরমপন্থী’ এবং ‘বাস্তববাদী’ হিসেবে বিবেচিত ইয়েচুরির আকস্মিক প্রয়াণে কো-অর্ডিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক ‘কট্টরপন্থী’ প্রকাশ কারাট। তাঁর সময়েই বিজেপি এবং কংগ্রেসকে এক ব্র্যাকেটে ফেলে ‘সম দূরত্বের’ লাইন নিয়েছিল সিপিআইএম। এমনকি জ্যোতি বসুর প্রধানমন্ত্রীত্ব নিয়েও আপত্তি ছিল তাঁর। এবার সীতারামের অবর্তমানে আপাতত রাশ তাঁর হাতে। যার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে খসড়া প্রতিবেদনে।  তবে প্রতিবেদনে কংগ্রেসের সঙ্গে এখনই দূরত্ব তৈরি করার কথা বলা হয়নি।

কারাটের দায়িত্বে তৈরি সিপিএমের খসড়া রাজনৈতিক প্রতিবেদনে  কংগ্রেসের সঙ্গে সিপিএমের অর্থনৈতিক নীতির প্রশ্নে অবস্থানের তফাৎ উল্লেখ করা হয়েছে।  বলা হয়েছে, কংগ্রেস যদি  হিন্দুত্ববাদের প্রশ্নে নরম অবস্থান নেয় তাহলে কংগ্রেসের সমালোচনা করতে হবে। বিজেপিকে পরাজিত করতে কংগ্রেসের হাত ধরার বিষয়ে রাজ্যের পরিস্থিতি অনুযায়ী নির্বাচনী সমঝোতার দরজা এখনও পর্যন্ত খোলা রাখা হয়েছে। 

এই প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া দিয়ে পার্টির রাজ্য কমটির এক সদস্যর মন্তব্য, “দিল্লির ঠান্ডা ঘরে বসে তত্ব কপচালে মানুষ কী চাইছে তা বোঝা সম্ভব নয়। ওদের তো মাঠেঘাটে নেমে কাজও করতে হয় না। দিল্লিতে পার্টিকে ভোটও দিতে পারে না এরা”।