আজকাল ওয়েবডেস্ক: স্বচ্ছ ভারত মিশন-এর এক দশক পূর্তি উপলক্ষে যখন দেশজুড়ে ‘খোলা স্থানে মলত্যাগ মুক্ত’ ভারতের সাফল্য উদ্যাপন চলছে, তখন নিকাশী ও পয়ঃপ্রণালী পরিস্কারের কাজে যুক্ত শ্রমিকদের দুর্দশা থেকে চোখ ফিরিয়ে রাখা যাচ্ছে না।
গত দশকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অন্তত ৪৫৩ জন শ্রমিক নিকাশী ও সেপটিক ট্যাংক পরিষ্কারের সময় মারা গেছেন। শুধু দিল্লিতেই ২০১৩ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৭২ জনের। এই সব শ্রমিকদের অধিকাংশই দলিত ও প্রান্তিক সম্প্রদায়ভুক্ত এবং তারা বেসরকারি সংস্থার চুক্তিভিত্তিক বা অনানুষ্ঠানিক কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন—যেখানে নিরাপত্তা সরঞ্জাম ও প্রশিক্ষণের অভাব প্রকট।
অক্টোবর মাসেই দক্ষিণ-পশ্চিম দিল্লির একটি নির্মাণস্থলে তিনজন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। মে মাসে নয়ডা ও দিল্লির দুটি পৃথক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে চারজন শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছেন। যদিও ২০১৩ সালের ‘ম্যানুয়াল স্ক্যাভেঞ্জার্স নিষিদ্ধ আইন’ এই ধরণের বিপজ্জনক কাজ নিষিদ্ধ করেছে, বাস্তবে আইনের কার্যকারিতা প্রশ্নবিদ্ধ।
এদিকে, দিল্লি জল বোর্ড সহ নানা পৌর সংস্থায়ও এখন প্রচুর সংখ্যক শ্রমিক চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ হচ্ছেন। তারা নিরাপত্তা, বেতন ও চাকরির স্থায়িত্ব নিয়ে অসন্তুষ্ট। আন্দোলন, বিক্ষোভ চললেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থায়ী সমাধানের উদ্যোগ এখনও নেই।
স্বচ্ছ ভারত মিশনের আওতায় যেখানে ‘আচরণ পরিবর্তন’ প্রচারাভিযান চলছে, সেখানে জাতপাত ভিত্তিক কাজের বিভাজন ও শ্রমিকদের মানবিক মর্যাদার প্রশ্ন উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে। বাস্তবিক অর্থে, ‘পরিচ্ছন্নতা’র এই যাত্রা তখনই সফল হবে যখন যারা শহরের নোংরা সরানোর কাজ করেন, তাদের জীবন ও শ্রমের মূল্য স্বীকৃতি পাবে।
