আজকাল ওয়েবডেস্ক: ১৮ বছর আগে কাকাকে নৃশংসভাবে খুন। চরম প্রতিশোধ নিল কিশোর। কাকার হত্যাকারীকে গুলি করে খুন করল সে। তাও আবার প্রকাশ্য দিবালোকে। ঘটনাটি ঘিরে তুমুল শোরগোল ছড়িয়েছে এলাকায়।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশে। রবিবার পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে মুরাদনগর এলাকায়। ১৮ বছর আগে কাকাকে নৃশংসভাবে খুনের প্রতিশোধ নিতে, এক ব্যক্তিকে গুলি করে খুন করে এক কিশোর। খুনের পর থানায় এসে আত্মসমর্পণ করেছে সে।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, মৃত ব্যক্তির নাম, ইমরান। ৪৯ বছর বয়সি ওই ব্যক্তি এলাকায় দুধ বিক্রি করতেন। ২০০৭ সালে খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন এবং জেলবন্দি ছিলেন। হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করার পর ২০১৭ সালে জেল থেকে ছাড়া পান তিনি। শনিবার ইমরানকে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে খুন করে ওই কিশোর।
১৮ বছর আগে কাকাকে খুনের প্রতিশোধ নিতেই ইমরানকে খুন করেছে বলে জানিয়েছে সে। গতকাল সকালে চায়ের দোকানে বসেছিলেন ইমরান। আচমকাই সেখানে এসে ইমরানকে লক্ষ্য করে গুলি চালাতে শুরু করে কিশোর। তিনবার গুলি করে বলে জানা গেছে। রক্তাক্ত অবস্থায় ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন ইমরান। তড়িঘড়ি করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে, চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এই ঘটনায় ওই কিশোর ছাড়া আরও চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। কে তাকে বন্দুক দিয়ে সাহায্য করেছিল, ঘটনায় আর কে কে জড়িত রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
গত জুলাই মাসে এমন আরেকটি ঘটনা ঘটেছিল এই রাজ্যেই। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছিল উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত তরুণের নাম সোনু কাশ্যপ। মনোজ নামের ডাব বিক্রেতাকে খুনের ঘটনায় তিনি মূল অভিযুক্ত। এই হত্যাকাণ্ডে তাঁকে সাহায্য করেছিলেন আরও চার বন্ধু। মোট পাঁচজন মিলে নৃশংস হত্যাকাণ্ডটি ঘটান। সকল ধৃতেরা হলেন, সোনু, রঞ্জিত, আদিল, সালামু, রেহমাত আলি।
দশ বছর আগে ঠিক কী ঘটেছিল?
পুলিশ জানিয়েছে, সোনু কাশ্যপ তখন ছোট। ভরা রাস্তায় তার মাকে কয়েকজন লোক বেধড়ক মারধর করেছিল। সোনুর মায়ের সঙ্গে মনোজের বচসা হয়েছিল। সেই ঝামেলার জেরেই সোনুর মাকে মারধর করে মনোজ পালিয়ে গিয়েছিলেন। মারধরের ঘটনাটি ঘটেছিল সোনুর চোখের সামনে। বয়সে ছোট হলেও, মায়ের অপমান টের পেয়েছিল। ছোট বয়স থেকে মনের মধ্যে ক্ষোভ পুষে রেখেছিল সে।
গত দশ বছর ধরে মনোজের খোঁজে লখনউয়ের পথে পথে ঘুরতে থাকেন সোনু। অবশেষে তিন মাস আগে মনোজের দেখা পান। এরপর টানা তিন মাস মনোজের গতিবিধি লক্ষ করেন। তিনি কখন দোকানে আসেন, কখন দোকানে থেকে বের হন, কোথায় থাকেন, কাদের সঙ্গে মেলামেশা, সবটাই খতিয়ে দেখেন সোনু। পাশাপাশি খুনের ছক কষতে থাকেন।
মনোজকে খুনের জন্য চার বন্ধুকে ডাকেন সোনু। তাঁদের জানান, নিশ্চুপে এই খুনটি করতে পারলেই, সকলকে নিয়ে পার্টি করবেন। দেদার মদ্যপান করাবেন। গত ২২ মে মনোজ রাতে দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফেরার তোড়জোড় করছিলেন। সেই সময়েই তাঁর উপর হামলা করেন সোনু ও তাঁর বন্ধুরা। লাঠি দিয়ে মারতে মারতে মনোজকে অচৈতন্য করে পালিয়ে যান তাঁরা। হাসপাতালে পরদিন মনোজের মৃত্যু হয়।
এই ঘটনার তদন্তে নেমে এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশ। কিন্তু অভিযুক্তদের মুখ স্পষ্টভাবে দেখা যায়নি। এদিকে মনোজের মৃত্যুর পর পার্টিতে মেতে ওঠেন সোনু ও তাঁর বন্ধুরা। সেই পার্টির ছবি সোশ্যাল মিডিয়াতেও পোস্ট করেন তাঁরা। সেই ছবিটি পুলিশের হাতে পৌঁছয়। একজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই, বাকিদের খোঁজ পায় পুলিশ। অবশেষে খুনের তিন মাস পর পুলিশি হেফাজতে অভিযুক্ত পাঁচ তরুণ।
