আজকাল ওয়েবডেস্ক: আজ সকালে রাজধানী দিল্লির মহিপালপুর এলাকায়, ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছাকাছি অবস্থিত র‍্যাডিসন হোটেলের পাশে হঠাৎ এক বিস্ফোরণ-সদৃশ শব্দ শোনা যায়। ঘটনাটি ঘিরে মুহূর্তের মধ্যে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। আতঙ্কে স্থানীয় মানুষজন ও হোটেল কর্মীরা বাইরে বেরিয়ে আসেন।

দিল্লি ফায়ার সার্ভিস (DFS) সূত্রে জানা গিয়েছে, সকাল প্রায় ৯টা ১৮ মিনিট নাগাদ এক মহিলার কাছ থেকে PCR কল পাওয়া যায় যে তিনি একটি “বিস্ফোরণ”এর শব্দ শুনেছেন। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলের উদ্দেশে তিনটি দমকল ইঞ্জিন পাঠানো হয়। পাশাপাশি দিল্লি পুলিশের একাধিক টিম ও বোমা  নিষ্ক্রিয়করণ দলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়,র‍্যাডিসন হোটেলের চারপাশ ঘিরে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়। এলাকাটি ঘিরে ফেলা হয় এবং প্রতিটি কোণায় খুঁটিনাটি অনুসন্ধান করা হয়। তবে দীর্ঘ তল্লাশির পরও কোনও  বিস্ফোরক বস্তু বা সন্দেহজনক কিছুই পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় অনুসন্ধানের সময় এক নিরাপত্তা রক্ষী জানান যে, ঘটনাস্থলের কাছ দিয়ে যাওয়া একটি দিল্লি ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন (DTC)-এর বাসের পিছনের চাকা হঠাৎ ফেটে যায়, আর সেই শব্দকেই স্থানীয়রা বিস্ফোরণ বলে ভুল করেন।

উল্লেখযোগ্য যে, গত ১০ নভেম্বর দিল্লির লালকেল্লা মেট্রো স্টেশন (গেট নং ১)-এর কাছেই একটি ভয়াবহ গাড়ি বিস্ফোরণ ঘটে, যাতে অন্তত ১২ জন প্রাণ হারান এবং বহু মানুষ আহত হন। পুলিশ তদন্তে জানা যায়, সেই গাড়িটি চালাচ্ছিলেন আত্মঘাতী হামলাকারী ডাঃ উমর উন নবী, যিনি কাশ্মীরের বাসিন্দা ছিলেন।

তৎপরবর্তীতে দেশজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে এবং রাজধানী দিল্লিসহ একাধিক রাজ্যে কড়া তল্লাশি চলছে। এই প্রেক্ষিতেই আজকের ঘটনাটি স্বাভাবিক আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল। তবে পুলিশ ও দমকলের দ্রুত পদক্ষেপে পরিস্থিতি সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণে আসে।

দিল্লি পুলিশের এক সিনিয়র অফিসার বলেন, “আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। কোনো সন্দেহজনক বস্তু বা কার্যকলাপের প্রমাণ মেলেনি। স্থানীয়ভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে শব্দটি ছিল একটি বাসের টায়ার ফাটার ফল।” বর্তমানে এলাকায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং পুলিশ নজরদারি অব্যাহত রেখেছে।

প্রসঙ্গত, দিল্লির ঐতিহাসিক লালকেল্লা সংলগ্ন এলাকায় হওয়া ভয়াবহ বিস্ফোরণ মামলার তদন্তে এক বড় অগ্রগতি হয়েছে। তদন্তকারী সংস্থাগুলি জানিয়েছে, গ্রেপ্তার  হওয়া সন্দেহভাজনদের সঙ্গে তুরস্কের আঙ্কারা থেকে পরিচালিত এক বিদেশি হ্যান্ডলারের যোগসূত্র পাওয়া গিয়েছে। পুলিশের সূত্রে খবর, ওই হ্যান্ডলারের কোডনেম “উকাসা”, যার অর্থ আরবি ভাষায় ‘মাকড়সা’।

তদন্তকারীদের মতে, এই নামটি আসল পরিচয় গোপন করার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট হ্যান্ডলারের অবস্থান চিহ্নিত হয়েছে তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায়। তিনি ভারতের একাধিক সন্দেহভাজনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন ‘Session’ নামের একটি উচ্চমানের এনক্রিপ্টেড মেসেজিং অ্যাপের মাধ্যমে। এই অ্যাপটি ব্যবহারকারীর পরিচয় গোপন রাখতে সক্ষম হওয়ায় নিরাপত্তা সংস্থার নজর এড়াতে এটি ব্যবহার করা হয়েছিল বলে জানা গেছে।