আজকাল ওয়েবডেস্ক: বঙ্কিমচন্দ্র চট্টপাধ্যায়কে সংসদে 'বঙ্কিমদা' বলে সম্বোধন করেছিলেন খোদ দেশের প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর পর, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত বলেছিলেন, 'বন্দে মাতরম যখন মহান কবি বঙ্কিম দাস চ্যাটার্জি লিখেছিলেন...'।

 এবার ফের সংসদে দাঁড়িয়ে মাতঙ্গিনীর নাম ভুল বললেন বিজেপির সাংসদ। কী বলেন তিনি? বীরাঙ্গনা মাতঙ্গিনী হাজরার নাম উচ্চারণই সঠিকভাবে বলতে পারেননি তিনি। তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, 'মাতা গিনি হাজরা'। শুধু তাই নয়, বিজেপি সাংসদ দীনেশ শর্মাকে বলতে শোনা যায়- "ভারত ছাড়ো" আন্দোলনের সময়ে 'বন্দেমাতরম' স্লোগান দিয়েছিলেন মাতঙ্গিনী। তিনি মুসলিম ছিলেন বলেও মন্তব্য করেন নিজের বক্তব্যের মাঝেই। বাঙালি বীরাঙ্গনার অপমানে ক্ষোভে ফুঁসছে বাংলার শাসকদল। 

 

শীতকালীন অধিবেশনেই যদিও জোর চর্চা হয়েছে খোদ মোদির 'বঙ্কিমদা' মন্তব্য নিয়ে। রাজ্যের শাসকদল-সহ সাধারণ মানুষ ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন।

'বন্দে মাতরম' রচনার ১৫০ বছর পূর্তি। নভেম্বরেই প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, 'বন্দে মাতরম'-এর ১৫০ বছরে, বছরভর নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উদযাপন করা হবে তা। সংসদে শীতকালীন অধিবেশনের মাঝে, সোমবার লোকসভায় 'বন্দে মাতরম' নিয়ে বলতে শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, 'এই গান শক্তির মন্ত্র দিয়েছিল। স্বাধীনতা সংগ্রামে গোটা দেশের অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছিল বন্দে মাতরম। বন্দে মাতরম বহু প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করেছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকেও অনুপ্রাণিত করবে।' 

 

সোমবার, একটা বড় সময় প্রধানমন্ত্রী বাংলা, বাঙালি নিয়ে কথা বলেছেন। সেখানেই,  বাঙালি বঙ্কিমচন্দ্রকে নিয়ে বলার সময়, মোদির কথায় শোনা যায় 'বঙ্কিমদা'। তিনি বলেন, 'বঙ্কিমদা এমন একটা সময় এই গান লিখেছিলেন, যখন ভারতকে নিচু করে দেখানোটাই ফ্যাশন ছিল।' যদিও তাঁর বক্তব্যের মাঝেই ভুল শুধরে দেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সৌগত রায়। তিনি মোদির ভাষণ শুধরে দিয়ে বলেন, 'অন্তত বাবু বলুন।' সৌগত রায়ের বক্তব্যের পরেই, প্রধানমন্ত্রী দ্রুত উত্তর দেন, 'আমি বঙ্কিম বাবু বলব। ধন্যবাদ, আমি আপনার অনুভূতিকে সম্মান করি।' এরপর তিনি হালকা স্বরে বলেন, 'আমি আপনাকে দাদা বলতে পারি, তাই না? নাকি এতেও আপনার আপত্তি আছে?'

 

আবার বুধবার সংসদে কথা বলার সময়, প্রধানমন্ত্রীর পদবিই ভুল বলেন বিজেপির সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বাংলার সাংসদ বলেন, 'আমাদের দেশে এখনও একজন প্রধানমন্ত্রী আছেন, তাঁর নাম...'। বিভ্রাট ঘটে মূলত তার পরেই। নরেন্দ্র বলার পর, মুহূর্ত থেমে তিনি বলে বসেন বাজপেয়ী। যদিও আবার পরক্ষণেই সংশোধন করে বলেন, 'নরেন্দ্র মোদি'।  স্বাভাবিকভাবেই, সংসদে দাঁড়িয়ে গেরুয়া শিবিরের নেতার মুখেই প্রধানমন্ত্রীর নাম ভুল উচ্চারিত হওয়ায়, চর্চা শুরু। তার পরেই আবার বীরাঙ্গনা মাতঙ্গিনী হাজরার নাম ভুল বললেন বিজেপি সাংসদ।