আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিয়েবাড়িতে হুল্লোড়ের মাঝেই চলল গুলি। মজার ছলে গুলি ছুড়তেই ঘটল বিপত্তি। গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়লেন কনের তুতো দাদা। বিয়েবাড়ির আনন্দ নিমেষে বদলে যায় আতঙ্ক ও বিষাদে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে বিহারে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রোহতাস জেলার শিবসাগর থানা এলাকায় থানুয়া গ্রামে এক বিয়ের আসরেই গুলি চলে। হামলা চালানোর উদ্দেশ্যে নয়, নিছক হুল্লোড়ের মাঝেই গুলি চালানো হয় বিয়ের অনুষ্ঠানে। সোমবার দুপুরে সেই বিয়েবাড়িতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন কনের তুতো দাদা।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত যুবকের নাম, নন্দন কুমার সিং। বক্সার জেলার বাসিন্দা ছিলেন তিনি। বিশ্রামপুর এলাকায় এক স্কুলের শিক্ষক ছিলেন ওই যুবক। সোমবার বেলা একটা নাগাদ ওই বিয়ের অনুষ্ঠানে এসেছিলেন। সেই সময় বিয়ের আসরে এক নিমন্ত্রিত শূন্যে গুলি চালান। সেই গুলি লাগে যুবকের গায়ে। গুরুতর আহত হন তিনি।
তড়িঘড়ি করে জামুহারে নারায়ণ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যুবককে নিয়ে যাওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হতেই শশরাম সদর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় তাঁকে। সেখানে চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয়েছে তাঁর। পরিবারের তরফে এই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে তুমুল ক্ষোভ উগরে দেওয়া হয়েছে।
পরিবারের দাবি, মূল অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। উল্টে কনের পরিবারের কমপক্ষে দশজন সদস্যকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। সেখানে সকলের ফোন হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের বদলে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার জন্য জোর করে পুলিশ। ঘটনাটি ঘিরে বিক্ষোভ দেখানোর পর তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁদের থেকে একটি পিস্তল হেফাজতে নিয়েছে তারা।
প্রসঙ্গত, গত জুলাই মাসেই কর্ণাটকে আরও এক ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছিল। বন্ধুর বিয়েতে ধুমধাম আয়োজন। নিমন্ত্রণ পেয়েই ছুটে গিয়েছিলেন এক যুবক। দিনরাত হুল্লোড়ে মেতেছিলেন সকলের সঙ্গে। নাচগান, খাওয়াদাওয়ায় কেটে গিয়েছিল বিয়ের দিনটি। কে জানত এই বিয়েবাড়িতে এসেই মর্মান্তিক পরিণতি হবে তাঁর! কব্জি ডুবিয়ে খেতে গিয়েই প্রাণ গেল তাঁর।
খাবারে বিষক্রিয়ায় নয়। বন্ধুর বিয়েতে এসে, আরেক বন্ধুর হাতে খুন হলেন এক যুবক। কারণ? কষা মুরগির মাংস ছিল তাঁর প্রিয়। বাড়তি এক টুকরো মাংস চেয়েছিলেন খেতে বসে। মাংসের টুকরো দেওয়া তো দূরের কথা, এত দাবি ঘিরেই সকলের সামনে তাঁকে কটুক্তি করেন এক বন্ধু।
কষা মাংসের টুকরোকে ঘিরেই শুরু হয় সামান্য ঝামেলা। সেই অশান্তি শেষমেশ গড়ায় হাতাহাতিতে। রক্তবন্যায় ভেসে যায় বিয়ের আসর। গুরুতর চোট নিয়ে বিয়েবাড়িতেই লুটিয়ে পড়েন যুবক। সেখানেই তাঁর মর্মান্তিক পরিণতি হয়। ঘটনাটি ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে কর্ণাটকের বেলাগাভি জেলায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত যুবকের নাম, বিনোদ মালাশেট্টি। তিনি ইয়ারাগাট্টি তালুকের বাসিন্দা ছিলেন। গত সপ্তাহান্তে তাঁর বন্ধু অভিষেক কোপ্পাড়ের বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। বিয়ের পরদিন রবিবার আরও একটি বিশেষ পার্টির আয়োজন করা হয়েছিল। সেই পার্টিতে অন্য এক বন্ধুর হাতে খুন হন বিনোদ।
পুলিশ জানিয়েছে, রাতের পার্টিতে বন্ধুবান্ধব মিলে হুল্লোড় করছিলেন। গানবাজনার মাঝেই চলছিল খাওয়াদাওয়া। সেই পার্টিতে ডিনারের সময় গণ্ডগোল হয়। বন্ধুদের খাবার পরিবেশন করছিলেন ভিত্তাল নামের এক যুবক। মেন কোর্স খাওয়ার সময় বিনোদ বলেন কষা মুরগির মাংসের টুকরোগুলি খুব ছোট ছোট। ভিত্তাল ঠিক মতো পরিবেশন করছেন না। তাঁকে আরেক টুকরো মাংস দিতে বলেন।
ইচ্ছা করে ছোট মাংসের টুকরো পরিবেশন করার অভিযোগ ঘিরে ভিত্তাল রেগে লাল হয়ে যান। তখন বিনোদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি শুরু হয় তাঁর। বাকি বন্ধুরা সমস্যা মেটানোর জন্য হস্তক্ষেপ করেন। দু'জনকেই থামানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে বিশেষ লাভ হয়নি।
সামান্য বচসার পর বিনোদ আর ভিত্তালের মধ্যে মারামারি শুরু হয়। রাগের মাথায় হঠাৎ পেঁয়াজ কাটার ধারালো ছুরি দিয়ে বিনোদের উপর হামলা করেন ভিত্তাল। বন্ধুদের মাঝেই পরপর ছুরির কোপ বসান বিনোদের শরীরে। রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি বিয়ের আসরে লুটিয়ে পড়েন।
বিনোদকে উদ্ধার করে দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ধারালো ছুরির একাধিক কোপে অতিরিক্ত রক্তপাত হয় তাঁর। তার জেরেই ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় যুবকের।
বিনোদের মৃত্যুর খবর পেয়েই দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ বাহিনী। ঘটনার বিবরণ শুনে খুনের মামলা রুজু করেছে তারা। ভিত্তালের খোঁজে শুরু হয়েছে তল্লাশি অভিযান। ৩০ বছর বয়সি মৃত যুবকের পরিবারের তরফেও অভিযুক্ত বন্ধুর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এই ঘটনায় শোকের ছায়া তাঁর পরিবারে। ভিত্তালের কীর্তিতে স্তম্ভিত বন্ধুরাও। বিয়েবাড়ির আনন্দ মুহূর্তের মধ্যে বিষাদে পরিণত হয়। বিয়ের অনুষ্ঠানে খুনের ঘটনায় তাজ্জব বনে গেছেন নিমন্ত্রিতরাও। প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশকে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ দিয়ে তদন্তে সাহায্য করছেন।
