আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিহারে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে ২৪ জুন ২০২৫ তারিখে নির্বাচন কমিশন (ECI) ঘোষণা করেছে বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR) প্রক্রিয়া। এর আওতায় রাজ্যের ৭.৮৯ কোটি ভোটারের নাগরিকত্ব যাচাই চলছে বাড়ি বাড়ি গিয়ে, যা নজিরবিহীন পদক্ষেপ। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুসারে, ভোটারদের নিজে থেকে নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র সহ একটি ফর্ম পূরণ করে জমা দিতে হবে ২৫ জুলাইয়ের মধ্যে। যে ভোটার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এই ফর্ম জমা দিতে ব্যর্থ হবেন, তাঁদের নাম খসড়া ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়বে। আগামী ১ আগস্ট খসড়া তালিকা প্রকাশ ও ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দাবি ও আপত্তির সুযোগ থাকছে।
বিশেষভাবে বিতর্কিত হয়েছে যে, ২০০৩ সালের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA) অনুসারে এই যাচাই করা হচ্ছে। ১৯৮৭ সালের পরে জন্মানো ভোটারদের বাবা-মায়ের জন্মস্থানের প্রমাণ চাওয়া হচ্ছে, যা সাধারণ মানুষের জন্য অত্যন্ত কঠিন কাজ। বিহারের বাস্তবতা আরও জটিল। ইসির নিজস্ব সমীক্ষা বলছে, রাজ্যের ৩৩% মানুষ নিরক্ষর, ৪১% ইন্টারনেট ব্যবহার করেন না, ৫৩% খবরের কাগজ পড়েন না। BLO-দের এক মাসের মধ্যে প্রায় ৮০০ জন ভোটারের তথ্য সংগ্রহ ও আপলোড করতে বলা হয়েছে। ফলে ভুল-ত্রুটির আশঙ্কা প্রবল। উপরন্তু, বিহার থেকে সর্বাধিক পরিযান হওয়ায় বহু বাইরের রাজ্যে থাকা ভোটার এই প্রক্রিয়া থেকে বাদ পড়ার ঝুঁকিতে আছেন।
নাগরিকত্ব যাচাইয়ের নামে এমন বিরাট এক্সক্লুশন প্রক্রিয়া ভোটাধিকারের সঙ্গে সাংবিধানিক অধিকারকেই প্রশ্নের মুখে ফেলছে। ২০২৪ লোকসভা ভোটে বিহারে ভোটার উপস্থিতি ছিল মাত্র ৫৬%, যা জাতীয় গড়ের নিচে। সেই প্রেক্ষিতে এই উদ্যোগ গণতন্ত্রকে মজবুত করার পরিবর্তে দুর্বলই করছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
