আজকাল ওয়েবডেস্ক: অপারেশন সিঁদুর। কোন কৌশলে পাক-মাত। একের পর এক তথ্য উঠে আসছে সামনে। এবার সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী মাদ্রাজ আইআইটির এক অনুষ্ঠানে খোলসা করলেন গোপন কথা। পাকিস্তানকে মাত দেওয়ার গোপন কৌশলকে তিনি দাবার ঘুঁটি সাজানোর সঙ্গে তুলনা করেছেন। 

 

আইআইটি মাদ্রাজের ভারতীয় সেনা গবেষণা সেল 'অগ্নিষোধ'-এর উদ্বোধনকালে তিনি এই বিষয়ে আলোকপাত করেন। সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে জেনারেল দ্বিবেদী অপারেশনের কৌশলকে দাবা খেলার মতো বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, অপারেশন সিন্দুর একটি "ধূসর অঞ্চলে" পরিচালিত হয়েছিল, যা অপ্রত্যাশিত এবং সম্পূর্ণ প্রচলিত সামরিক অভিযানের চেয়ে কিছুটা আলাদাই ছিল। তাঁর মতে,  অপারেশন সিঁদুরের সময়, ভারত পদক্ষেপ নিয়েছে, ঘুঁটি সাজিয়েছে যেমন ঠিক, তেমনি শত্রুপক্ষ কী করছে, করতে চলছে, তা সম্পর্কে ধারণা ছিল না বিন্দুমাত্র। তাঁর মতে, উরি, বালাকোটের চেয়ে এই অভিযান চজিল একেবারে আলাদা। 

বায়ুসেনা প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল অমরপ্রীত সিং জানিয়েছিলেন, ভারতীয় বায়ুসেনা 'অপারেশন সিঁদুর'-এর সময় ছয়'টি পাকিস্তানি বিমান ধ্বংস করেছে। তিনি জানিয়েছিলেন, এর মধ্যে পাঁচটি পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান এবং একটি পাক সামরিক বাহিনীর বড় বিমান। বায়ুসেনা প্রধানের কথায়, 'অপারেশন সিঁদুর'-এর সময়ে ভারতের আকাশসীমা রক্ষার কাজে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে এস-৪০০ সুদর্শন চক্র। এই এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমই ছয়'টি পাকিস্তানি যুদ্ধবিমানকে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। বায়ুসেনা প্রধান জানান, এখন পর্যন্ত ভূমি থেকে আকাশে হামলা চালিয়ে ধ্বংস করার দিক থেকে এই প্রতিআক্রমণই সবচেয়ে বড় রেকর্ড।

শনিবার বেঙ্গালুরুতে এক অনুষ্ঠানে এয়ার চিফ মার্শাল অমরপ্রীত সিং বলেছেন, "আমাদের এয়ার ডিফেন্স দুরন্ত কাজ করেছে। রাশিয়ার তৈরি এস-৪০০ সিস্টেম, যেটা আমরা সম্প্রতি মোতায়েন করেছিলাম সেটা খেলা ঘুরিয়ে দিয়েছিল। ওই সিস্টেমের শক্তি ওদের বিমানগুলিকে সত্যিই দূরে রেখেছিল। যেমন ওদের কাছে থাকা দূরপাল্লার গ্লাইড বোমাগুলির মতো অস্ত্রকে ওরা ব্যবহারই করতে পারেনি। কারণ এই সিস্টেমটাকে ওরা ভেদই করতে পারেনি।" তিনি বলেন, "অন্তত পাঁচটি যুদ্ধবিমান আমরা নিশ্চিত ভাবে ধ্বংস করেছি। এ ছাড়া একটি বড় (সামরিক) বিমান রয়েছে। প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূর থেকে হামলা করা হয়েছিল।" 

বায়ুসেনা প্রধানের দাবি, যে বড় যুদ্ধবিমান ধ্বংস করা হয়েছিল তা ছিল একটি এয়ারবর্ন ওয়ার্নিং অ্যান্ড কন্ট্রোল সিস্টেম। এই ধ্বংস পাকিস্তানের বায়ুসেনার উপর একটি বিরাট আঘাত।

এই ছয়'টি পাকিস্তানি বিমান ধ্বংসের সঙ্গেই আকাশপথে পাক সামরিক ঘাঁটিতে হামলার সময়েও বেশ কিছু পাক বিমানে ক্ষতি হয়েছে বলে জানান বায়ুসেনা প্রধান অমরপ্রীত। বিশেষ করে পাকিস্তানের জাকোবাবাদে সামরিক ঘাঁটির কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি। সেখানে এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের হ্যাঙ্গার ছিল। ওই হ্যাঙ্গারটির অর্ধেকই ধ্বংস হয়ে গিয়েছে বলে জানান বায়ুসেনা প্রধান। 

গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও-তে জহ্গি হামলার পর পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে চিহ্নিত কিছু জঙ্গিঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছিল ভারত। সেই আক্রমণেরই নাম দেওয়া হয়েছে 'অপারেশন সিঁদুর'। ভারতীয় বায়ুসেনার দাবি, ওই সময় পাকিস্তানের কোনও সামরিক ঘাঁটিতে হামলা হয়নি। কিন্তু ভারতের অভিযানের পরে পাকিস্তানি বাহিনী ভারতের উপর হামলা শুরু করে। জবাব দেয় ভারতও। ওই সংঘাত পরিস্থিতিতে অন্তত ছয়'টি পাকিস্তানি বিমান ধ্বংস করেছে বায়ুসেনা।