আজকাল ওয়েবডেস্ক: কেন্দ্রের পিএম পোষণ প্রকল্প (পুরোনো মিড-ডে মিল স্কিম)-এর আওতাভুক্ত স্কুলের সংখ্যা গত পাঁচ বছরে উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। সংসদে পেশ করা তথ্য অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবর্ষে যেখানে এই প্রকল্পের আওতায় ছিল ১১.১৯ লক্ষ স্কুল, সেখানে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে সেই সংখ্যা নেমে এসেছে ১০.৩৫ লক্ষে। অর্থাৎ, পাঁচ বছরে মোট ৮৪,৪৫৩টি স্কুল এই প্রকল্পের আওতা থেকে বাদ পড়েছে, যা প্রায় ৭.৫ শতাংশ কমে যাওয়া।

বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের পক্ষ থেকে এই তথ্য তুলে ধরা হয়। হিন্দুস্তান টাইমস-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই তথ্য সংসদে পেশ করা হয় আম আদমি পার্টির সাংসদ সঞ্জয় সিংয়ের প্রশ্নের উত্তরে। লিখিত উত্তরে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জয়ন্ত চৌধুরী এই পরিসংখ্যান তুলে ধরেন।

বর্তমানে পিএম পোষণ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশজুড়ে সরকারি ও সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত স্কুলগুলিতে প্রথম শ্রেণির আগে থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের জন্য প্রতিদিন এক বেলা গরম রান্না করা খাবার সরবরাহ করা হয়। শিশুদের পুষ্টি নিশ্চিত করা এবং স্কুলে উপস্থিতি বাড়ানোই এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য।

সংসদে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রকল্পের আওতায় স্কুলের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি কমেছে ২০২০-২১ থেকে ২০২১-২২ অর্থবর্ষের মধ্যে। মাত্র এক বছরের ব্যবধানে ওই সময়কালে ৩৫,৫৭৪টি স্কুল এই প্রকল্পের তালিকা থেকে বাদ পড়ে।

রাজ্যভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, উত্তরপ্রদেশে সবচেয়ে বড় ধস নেমেছে। সেখানে ২০২০-২১ সালে যেখানে পিএম পোষণ প্রকল্পের আওতায় ছিল ১.৬৭ লক্ষ স্কুল, ২০২৪-২৫ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১.৪১ লক্ষে। অর্থাৎ, পাঁচ বছরে উত্তরপ্রদেশে ২৫,৩৬১টি স্কুল এই প্রকল্পের আওতা থেকে বাদ গিয়েছে।

উত্তরপ্রদেশের পরেই উল্লেখযোগ্য হ্রাস দেখা গেছে মধ্যপ্রদেশ ও আসামে। মধ্যপ্রদেশে ২৪,৭০৪টি এবং আসামে ৯,৩২১টি স্কুল প্রকল্পের তালিকা থেকে বাদ পড়েছে বলে সংসদে জানানো হয়েছে।

যদিও এই হ্রাসের নির্দিষ্ট কারণ ব্যাখ্যা করেননি শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জয়ন্ত চৌধুরী, তবে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “যোগ্য শিশুদের জন্য গরম ও পুষ্টিকর খাবার সরবরাহের সামগ্রিক দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির প্রশাসনের উপরই বর্তায়।”

শিক্ষাবিদ ও সামাজিক সংগঠনগুলির মতে, পিএম পোষণ প্রকল্পের আওতায় স্কুলের সংখ্যা কমে যাওয়া শিশুদের পুষ্টি, স্কুলে উপস্থিতি এবং প্রাথমিক শিক্ষার উপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে। এই পরিস্থিতিতে প্রকল্পের আওতা ক্রমশ কমে যাওয়ার পেছনে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত, স্কুল একত্রীকরণ নীতি, ছাত্রসংখ্যা হ্রাস নাকি অন্য কোনও পরিকাঠামোগত সমস্যা রয়েছে তা স্পষ্ট করা প্রয়োজন বলেই মত বিশেষজ্ঞ মহলের।