আজকাল ওয়েবডেস্ক: শারীরিক অসুস্থতার কথা বলে ইস্তফা দিয়েছেন সোমবার রাতে। কিন্তু এক সময়ের বাংলার রাজ্যপাল, দেশের উপরাষ্ট্রপতির ইস্তফার ঘটনায় দেশের রাজনীতিতে একপ্রকার তোলপাড়। কেউ কেউ একাধিক বিষয় পরপর সাজিয়ে বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন, নিছক শারীরিক অসুস্থতার কারণে এই ইস্তফা নয়। অন্যদিএক ধনখড়ের ইস্তফার পরে, নতুন উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু করার কথা জানাল নির্বাচন কমিশন।

বুধবার জাতীয় নির্বাচন কমিশন বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে, একে একে প্রস্তুতি ধাপ সনপন্ন হওয়ার পর, ঘোষণা করা হবে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সূচি। কী কী ধাপ সম্পন্ন করতে হবে তার আগে? জানা গিয়েছে, নির্বাচনের আগে রাজ্যসভা এবং লোকসভা সদস্যদের নিয়ে তৈরি করা হবে ইলেক্টোরাল কলেজ। নিয়োগ করা হবে রিটার্নিং এবং সহকারী রিটার্নিং অফিসার এবং প্রস্তুত করতে হবে অতীতের সমস্ত উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সামগ্রিক তথ্য। 

 

আরও পড়ুন: ‘আমিই রাষ্ট্রদূত’, তুরুপের তাস মোদির ছবি! দিল্লিতে ভাড়া বাড়িতে বছরের পর বছর যেভাবে ভুয়ো দূতাবাস চালালেন ব্যক্তি

 ২০১৭ সালে বিজেপি সভাপতি ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থাকাকালীন ভেঙ্কাইয়া নাইডু-কে উপ-রাষ্ট্রপতির পদে বসানো হয়েছিল। ধনখড় ছিলেন তাঁর উত্তরসূরি। ধনখড়ের অবসরের পর এক শীর্ষ বিজেপি নেতা বলেন, ‘আমরা এখনও গোটা বিষয়টি নিয়ে ভাবছি। তবে আমি বিশ্বাস করি দল এমন কাউকে বেছে নেবে যিনি অভিজ্ঞ এবং গ্রহণযোগ্য’। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যসভার উপ-সভাপতি হরিবংশ নারায়ণ সিংহের নামও আলোচনায় উঠে আসছে। জেডিইউ (জনতা দল ইউনাইটেড)-এর সাংসদ হরিবংশ ২০২০ সাল থেকে রাজ্যসভার উপ-সভাপতি পদে রয়েছেন এবং সরকারের পূর্ণ আস্থাভাজন বলেই পরিচিত। 

অন্যদিকে, একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, ধনখড়ের উত্তরসূরি হতে পারেন বিহারের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। চলতি বছরেরে শেষে বিহারে নির্বাচন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ৭৪ বছরের নীতীশকে এবার তরুণ প্রজন্মের জন্য জায়গা ছেড়ে দিতে হতে পারে। সেক্ষেত্রে তাঁর নাম ভাবা হচ্ছে ধনখড়ের উত্তরসূরি হিসেবে। তালিকায়  জম্মু ও কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা এবং দিল্লির ভিকে সাক্সেনার নামও। 

প্রসঙ্গত, সোমবার রাতে হঠাৎই ইস্তফার কথা জানান জগদীপ ধনখড়। পদত্যাগের কারণ হিসেবে নিজের স্বাস্থ্যের কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। চিঠিতে লিখেছেন, পরামর্শ মেনে নিজের স্বাস্থ্যে নজর দেওয়ার জন্যই উপরাষ্ট্রপতি পদে ইস্তফা দিয়েছেন। দায়িত্বে থাকাকালীন কীভাবে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও অন্যান্য মন্ত্রীদের সমর্থন পেয়েছেন, সে কথা চিঠিতে উল্লেখ করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘যে আন্তরিকতা পেয়েছি, যেভাবে আমার উপর আস্থা রাখা হয়েছে, তা আমার সারাজীবন মনে থাকবে।’ রাষ্ট্রপতিকে লেখা চিঠিতে ধনখড় জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যের কারণে চিকিৎসকদের পরামর্শেই উপরাষ্ট্রপতি পদ থেকে তিনি ইস্তফা দিচ্ছেন। একই সঙ্গে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং সাংসদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ধনখড়।


তিনি জানিয়েছেন, তাঁর মেয়াদকালে প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা, সমর্থনের এবং দায়িত্বপালন করতে গিয়ে অনেক কিছু শিখেছেন। ৭৪ বছর বয়সি ধনখড় আরও জানান, উপরাষ্ট্রপতি থাকাকালীন তিনি ভারতের অসাধারণ অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং তাৎপর্যপূর্ণ উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করেছেন। এই উন্নয়নে যোগদান করতে পেরে তিনি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করেন বলে জানিয়েছেন ধনখড়। ২০২২ সালে আগস্ট মাসে উপরাষ্ট্রপতি হিসাবে দায়িত্বগ্রহণ করেছিলেন জগদীপ ধনখড়। বিরোধী শিবিরের প্রার্থী মার্গারেট আলভাকে ৩৪৬ ভোটে হারিয়ে দেশের উপরাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন। সোমবারও রাজ্যসভায় অধ্যক্ষ হিসাবে অধিবেশন পরিচালনা করেন ধনখড়।