আজকাল ওয়েবডেস্ক:  ভুয়ো চিকিৎসক, ভুয়ো ইঞ্জিনিয়ার, ভুয়ো কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়। সাম্প্রতিক সময়ে একে একে সামনে এসেছে যা তথ্যও। তাতে রমরমা ভুয়ো-বিষয়ের। এবার প্রকাশ্যে গোটা ভুয়ো দূতাবাস। ঘটনাস্থল খাস দিল্লির। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই চোখ কপালে সাধারণ মানুষের। সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের তথ্য, গাজিয়াবাদের এক ব্যক্তি দিনের পর দিন এই ভুয়ো দূতাবাস চালাচ্ছেন। 

ওই ব্যক্তির নাম হর্ষ বর্ধন জৈন। ভুয়ো দূতাবাস চালানোর জন্য তিনি ব্যবহার করতেন  জাল কূটনৈতিক প্লেট। ব্যবহার করেছিলেন মোদির সঙ্গে তাঁর ছবি এবং সেই ছবি দিয়েই তিনি সাধারণ মানুষকে বিশ্বাস করিয়েছিলেন বলে তথ্যও।

আরও পড়ুন: বাংলার রাজ্যপাল হোক বা দেশের উপরাষ্ট্রপতির আসন, জগদীপ ধনখড় ‘লক্ষ্মণরেখা’ পার করেছেন বার বার

জানা গিয়েছে,  ওই  ব্যক্তি নেতাদের নানা ছবি ব্যবহার করে মানুষের মনে বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করতেন। বিদেশে চাকরির টোপও দিতেন সাধারণ মানুষকে। 

উত্তর প্রদেশ স্পেশাল টাস্ক ফোর্স-এর নয়ডা ইউনিটের তথ্য, গাজিয়াবাদের ওই ব্যক্তি কবি নগর এলাকায় ভাড়া বাড়িতেই দিনের পর দিন অবৈধ দূতাবাস চালিয়েছেন। সাধারণ মানুষের কাছে নিজেকে বেশকিছু ক্ষুদ্র দেশের অর্থাৎ মাইক্রোনেশনগুলির রাষ্ট্রদূত বলেও দাবি করতেন তিনি। তিনি বলতেন, পশ্চিম আর্কটিকা, সাবোরগা, পুলভিয়া এবং লোডোনিয়ার মতো দেশগুলির রাষ্ট্রদূত পদে রয়েছেন তিনি। এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, মাইক্রোনেশন আদতে কী? মাইক্রোনেশন হল, হল একটি ছোট, স্ব-ঘোষিত সত্তা যা একটি স্বাধীন দেশ বলে দাবি করে কিন্তু কোনও সরকার বা আন্তর্জাতিক সংস্থা কর্তৃক স্বীকৃত নয়। ওইসব মাইক্রোনেশনগুলির রাষ্ট্রদূত তিনি, তেমনটাই বলতেন। 


 জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তি নিজের ভুয়ো কার্যকলাপ জনগনের কাছে আরও বেশি করে বিশ্বাসযোগ্য করে তোলার জয় তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন কয়েকটি ছবি। একদিকে যেমন তিনি জাল কূটনৈতিক নম্বর প্লেটযুক্ত যানবাহন ব্যবহার করতেন অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, রাষ্ট্রপতি এবং অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিজের ছবি দেখাতেন। যাতে মানুষের, তাঁর কার্যকলাপ নিয়ে সন্দেহ না জাগে। 

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তি ভুয়ো পদ ব্যবহার করে শেল কোম্পানির মাধ্যমে হাওলা র‍্যাকেট (অবৈধ অর্থ স্থানান্তর)ও চালাতেন। প্রাথমিক তদন্তের পর, এসটিএফ জানিয়েছে যে ওই ব্যক্তি মূলত একজন দালাল হিসেবে কাজ করতেন, কোম্পানি এবং ব্যক্তিদের বিদেশে চাকরি খুঁজে পেতে সাহায্য করতেন, এবং একই সঙ্গে গোপনে হাওলা র‍্যাকেটও চালাতেন। সেটাই ছিল তাঁর মূল কাজ এবং এই কাজ সফল সুষ্ঠভাবে সম্পন করার জন্যই বাইরে থেকে লোকেজ নজর ঘোরাতে একগুচ্ছ ভুয়ো কার্যকলাপ চালিয়েছিলেন তিনি।

এই প্রথম পুলিশের নজরে ওই ব্যক্তি এমনটা নয়। এর আগে, ২০১১ সাল নাগাদ তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশে মামলা দায়ের হয়েছে। একটি অবৈধ স্যাটেলাইট ফোন-সহ পুলিশ তাঁকে আটক করেছিল। জানা গিয়েছে, নিজের কাজ হাসিল করার জন্য যোগাযোগ ছিল আদনান খাশোগি এবং চন্দ্রস্বামীর সঙ্গে। খাশোগি ছিলেন ছিলেন একজন সৌদি আরবের ব্যবসায়ী এবং পশ্চিমা প্রতিরক্ষা ঠিকাদার এবং মধ্যপ্রাচ্যের সরকারগুলির মধ্যে, বিশেষ করে সৌদি আরবের মধ্যে অস্ত্র চুক্তির একজন গুরুত্বপূর্ণ মধ্যস্থতাকারী। ২০১৭ সালে লন্ডনে মৃত্যু হয় তাঁর।