আজকাল ওয়েবডেস্ক: মনে হতে পারে সামান্য দেড় টাকার (১.৫০ টাকা) জন্য আইনি লড়াই! কিন্তু এই লড়াই ছিল আসলে ক্রেতার অধিকার সুনিশ্চিৎ করার, অসৎ ব্যবসায়ীদের সতর্ক করার। শেষে মামলাকারী জয় পেলেন আইনিযুদ্ধে। দেড় টাকার বদলে তার কয়েক শো গুণ খসল অভিযুক্ত সংস্থার।

ঘটনা মধ্যপ্রদেশের। ২০১৭ সালের ১৪ নভেম্বর চক্রেশ জৈন ভারত গ্য়াস এজেন্সি থেকে সিলিন্ডার বুক করেন। সেই সিন্ডারের দাম তখন ছিল ৭৫৩.৫০ টাকা। চক্রেশ গ্যাস সিলিন্বাডার হককে দিয়েছিলেন ৭৫৫ টাকা। অর্থাৎ ফেরৎ হত দেড় টাকা। কিন্তু খুচরো নেই বলে সামান্য ওই অর্থ আর চক্রেশকে ফেরৎ দেননি গ্যাস বাহক। চক্রেশ চাইলে তাঁকে সরাসরি এজেন্সিতে অভিযোগ দায়ের করতে বলা হয়। দেরি না করে প্রতারিত চক্রেশ জৈন সংশ্লিষ্ট এজেন্সি এবং জাতীয় ভোক্তা ফোরামে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ দায়ের করেন। 

প্রায় দু'বছর কাটলেও চক্রেশের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলে অভিযোগ। শেষে ২০১৯ সালের ১৫ জুলাই প্রতারিত ব্যক্তি জেলা গ্রাহক ফোরামে একটি মামলা দায়ের করেন। তখন গ্যাস এজেন্সি গ্রাহকের পদক্ষেপকে মসকরা করে উড়িয়ে দিয়েছিল। অনেকেই চক্রেশ জৈনকে উপহাসও করেন। কিন্তু ছাড়বার পাত্র নন এই গ্রাহক। আইনজীবীর রাজেশ সিংয়ের সহায়তায় ন্যায়বিচারের লড়াইয়ে অনড় ছিলেন চক্রেশ।

এই মামলা চলে দীর্ঘ পাঁচ বছর। কনজিউমার বা ভোক্তা ফোরাম শেষেপর্যন্ত মামলাকারী চক্রেশ জৈনের অভিযোগের মান্যতা দেয়। গ্যাস এজেন্সির গাফিলতি ও দোষ বলে জানায় আদালত। যুগান্তকারী নির্দেশে বলা হয়, অভিযুক্ত গ্য়াস এজেন্সিকে বার্ষিক ৬ শতাংশ সুদ-সহ দু'মাসের মধ্যে দেড় টাকা ফেরৎ দিতে হবে। এছাড়া, চক্রেশ জৈনকে মানসিক, আর্থিক এবং পরিষেবা-সম্পর্কিত কষ্ট দেওয়ার জন্য ক্ষতিপূরণবাবদ ২০০০ টাকা এবং তাঁর আইনি খরচ মেটাতে আরও ২০০০ টাকা দিতে হবে। 

এই মামলা ভোক্তার অধিকারের গুরুত্ব তুলে ধরেছিল। চক্রেশ জৈনের লড়াই ব্যবসাদারদের জন্যও সতর্কতা। আইনি লড়াইয়ে জয়ের পর চক্রেশ জৈন বলেছেন, "এটা শুধু দেড় টাকা ফেরতের লড়াই ছিল না। এটি ছিল যেকোনও ক্রেতা বা ভোক্তার অধিকার এবং আত্মসম্মানের জন্য লড়াই।"