আজকাল ওয়েবডেস্ক: ওড়িশায় ফের এক ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে। মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটে ওড়িশার জগৎসিংহপুর জেলায়। খবর অনুযায়ী অভিযুক্ত দুই বৃদ্ধ ভাই। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রথমে তারা ১৫ বছর বয়সী এক তরুণীকে গণধর্ষণ করে। এরপর তরুণী গর্ভবতী হওয়ার পর তাঁকে জীবন্ত কবর দেওয়ার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ উঠেছে দুই বৃদ্ধের বিরুদ্ধে। তরুণীর এহেন পরিস্থিতিতে স্থানীয়রা তীব্র ক্ষোভ উগড়েছেন। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, গত প্রায় এক বছর ধরে লাগাতার ওই নাবালিকাকে ধর্ষণ করা হয়। ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত দুই ভাই ভাগ্যধর দাস (৬০) এবং পঞ্চানন দাস (৫৮) কে পুলিশ ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করেছে। অন্যদিকে এই ঘটনায় আরেক অভিযুক্ত তৃতীয় সন্দেহভাজন টুলু এখনও নিখোঁজ। কর্তৃপক্ষ তাকে খুঁজে বের করার জন্য তল্লাশি শুরু করেছে বলে জানা গিয়েছে। 

সূত্রে জানা গিয়েছে, কুজাং থানায় নির্যাতিতার বাবা ঘটনার জেরে মামলা দায়ের করে। তাঁরঅভিযোগ অনুসারে, দুই ভাই এক বছর ধরে নাবালিকাকে যৌন নির্যাতন করে গিয়েছে।  বর্তমানে এখন তরুণী সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা।

অভিযোগ অনুসারে, অভিযুক্ত ভাইয়েরা একটি মঠে (আশ্রম) কাজ করত। সেই মঠে এই নাবালিকা প্রায়শই যেতেন। নির্যাতিতার বাবা অভিযোগ করেছেন, দুই ব্যক্তি দীর্ঘ সময় ধরে নাবালিকাকে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে। এখানেই থেমে নেই৷ যখন তারা তরুণীর গর্ভবতী হওয়ার বিষয়টি জানতে পারে, তখন তারা তাদের অপরাধ লুকানোর জন্য তরুণীকে জীবন্ত কবর দেওয়ার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ রয়েছে। সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। 

নির্যাতিতার বাবা আরও দাবি করেছেন যে তিনি প্রথমে স্থানীয় পঞ্চায়েতের এক কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানান। তিনি ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য তাঁকে অর্থের প্রস্তাব পর্যন্ত দেন। এমনকি পুলিশের কাছে এই খবর না জানানোর জন্য তাঁকে হুমকিও দিয়েছিলেন পঞ্চায়েত কর্মকর্তা।

খবর অনুসারে, অভিযুক্ত ভাইয়েরা ভুক্তভোগীকে গর্ভপাতের জন্য অর্থ প্রদানের প্রস্তাব দিয়ে প্রথমে তাঁকে ফাঁদে ফেলে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে তারা প্রথমে তরুণীকে একটি স্থানে ডেকে পাঠায়। তরুণী এরপর রাজি হয়। সেখানে পৌঁছানোর পর তিনি দেখতে পান যে মাটিতে একটি খাদ খনন করা হয়েছে। এরপর অভিযুক্তরা তাঁকে হুমকি দেয় যে যদি তিনি গর্ভপাত না করান,তাহলে তারা তরুণীকে জীবন্ত খাদে পুঁতে ফেলবে। সৌভাগ্যবশত তরুণী অভিযুক্তের হাত থেকে পালাতে সক্ষম হয়। ফিরে এসে তাঁর বাবাকে সমস্ত ঘটনার বর্ণনা করেন।

বর্তমানে ঘটনার জেরে, তিনজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং পকসো আইনের ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুই ভাইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানা যায়। আর তৃতীয় অভিযুক্তকে এখনও পলাতক। তার তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ, এমনটি জানিয়েছেন তিরতোলের এসডিপিও চিন্ময় রাউত।

আরও পড়ুনঃ 'সুখ দিতে পারো না বেঁচে থেকে লাভ কী?' শরীরী খিদে মেটাতে ব্যর্থ স্বামীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়লেন স্ত্রী

অন্যদিকে জগৎসিংহপুরে ১৮ বছর বয়সী এক তরুণীর গণধর্ষণের মাত্র চার দিন পর ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে। বর্তমানে ভুক্তভোগী গুরুতর অবস্থায় জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

প্রসঙ্গত, ওড়িশায় সম্প্রতি ভয়াবহ আরেক ঘটনা। এক তরুনী প্রকাশ্যে গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়। বালাসোরে তরুণীর নিজের কলেজের সামনে এই ঘটনা ঘটেছে। পরে ওই ছাত্রীর ভাই জানান যে তাঁর বোনের দেহের ৯৫% অংশ পুড়ে গিয়েছে। বোনের এই পরিণতির জন্য তিনি অধ্যক্ষ ও প্রশাসনকে দায়ী করেছেন। দিনের পর দিন তরুণী তাঁর শিক্ষকের যৌন নির্যাতনের শিকার হন। বালাসোরের এই নির্মম ঘটনায় চমকে উঠেছে গোটা দেশ৷