আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভয়াবহ দুর্ঘটনা রাজস্থানে।‌ চলন্ত বাসে দাউদাউ আগুন। নতুন বাসটি নিমেষের মধ্যে পুড়ে খাক। সেই বাসেই আটকে পড়েন যাত্রীরা। জীবন্ত দগ্ধ হয়ে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও বহু যাত্রী। 

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে রাজস্থানে। মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দুর্ঘটনাটি ঘটেছে আজ বিকেলে জয়সালমের - যোধপুর হাইওয়েতে। বাসটি জয়সালমের থেকে যোধপুরের দিকে যাচ্ছিল। মাঝ পথেই চলন্ত বাসে দাউদাউ করে আগুন জ্বলে ওঠে। পালানোর সুযোগ পাননি বহু যাত্রী। বাসের মধ্যেই অগ্নিদগ্ধ হয়ে ১৯ জন যাত্রী প্রাণ হারিয়েছেন। 

 

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বাসটি জয়সালমের থেকে দুপুর তিনটে নাগাদ যোধপুরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল। বাসে মোট ৫৭ জন যাত্রী ছিলেন। জয়সালমের - যোধপুর হাইওয়েতে চলন্ত বাসের পিছনের দিকে কালো ধোঁয়া দেখা গিয়েছিল প্রথমে। কালো ধোঁয়া নজরে পড়তেই বাসটি হাইওয়ের একপাশে থামান চালক। নিমেষের মধ্যে গোটা বাসে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। 

 

বাসটি দাউদাউ করে জ্বলতে দেখেই স্থানীয়রা ও পথচলতি মানুষ উদ্ধারকাজে ছুটে আসেন। খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকলের একাধিক ইঞ্জিন ও বিশাল পুলিশ বাহিনী। দ্রুত আগুন নেভানোর কাজ শুরু হয়। কিন্তু ততক্ষণে বাসের মধ্যেই আটকে পড়েন বহু যাত্রী।‌ জীবন্ত দগ্ধ হন ১৯ জন যাত্রী। আহতদের তড়িঘড়ি করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। 

 

আরও পড়ুন: কে কে ভালবাসে, মারা গেলে কষ্ট পাবে? জানার জন্য 'মৃত' সেজে অভিনয়! চিতায় আগুন দেওয়ার আগেই নাটকীয় মোড়

 

পুলিশ ও দমকলের প্রাথমিক অনুমান, শর্ট সার্কিট থেকেই বাসটিতে আগুন ধরে যায়। এমনকী জানা গেছে, বাসটি মাত্র পাঁচদিন আগেই কেনা হয়েছিল। মঙ্গলবার রাতেই জয়সালমেরে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ভজন লাল শর্মা। পুড়ে খাক হয়ে যাওয়া বাসটি ও দুর্ঘটনাস্থল তিনি পরিদর্শন করেছেন। 

 

সর্বশেষে পাওয়া খবর অনুযায়ী, অগ্নিদগ্ধ হয়ে আরও ১৫ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁরা সকলেই হাসপাতালে যমে-মানুষে টানাটানি অবস্থায় রয়েছেন। গুরুতর আহতদের মধ্যে চারজন মহিলা ও দু'জন শিশু রয়েছে। বাকিদের শরীরের ৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তিনটি অ্যাম্বুল্যান্সে করে প্রথমে জয়সালমেরের জহর হাসপাতালে আহতদের নিয়ে যাওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হতেই তাঁদের যোধপুরের হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। 

 

জয়সালমের জেলা শাসকের দপ্তর জানিয়েছে, 'দুর্ঘটনার খবর পেয়েই উদ্ধারকাজে ছুটে যান সকলে। তড়িঘড়ি করে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যথাযথ চিকিৎসার আওতায় আনা হয়েছে।' ১২৫ নম্বর জাতীয় সড়কে গ্রিন করিডোর করে আটটি অ্যাম্বুল্যান্সকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। সেই সময় পুলিশের গাড়িও ছিল সঙ্গে। 

 

যোধপুর থেকে ফরেন্সিক টিম ও ডিএনএ টেস্টের টিম ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নমুনা সংগ্রহ করেছে। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের নমুনা সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মৃতদেহগুলির ডিএনএ পরীক্ষার পরেই পরিচয় জানা যাবে। এই টেস্টের পরেই দেহগুলি পরিবারের হাতে তুলে দেবে পুলিশ। 

 

রাজস্থানে বাস দুর্ঘটনার খবর পেয়েই এক্স হ্যান্ডেলে শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আহত ও নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের তরফে মৃতদের পরিবার পিছু দুই লক্ষ টাকা এবং আহতদের চিকিৎসার জন্য ৫০ হাজার টাকা আর্থিক ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করা হয়েছে।