আজকাল ওয়েবডেস্ক: একাধিক সাইবার অপরাধ ও অবৈধ মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে পরপর অভিযানে তৎপর হয়েছে ঝাড়খণ্ড পুলিশ। তার ফলও মিলেছে হাতেনাতে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাসের মধ্যে মোট ১,২০০ সাইবার অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই একই সময়ের মধ্যে ৪৮৪ জন মাদক ব্যবসায়ীকেও পুলিশের জালে ফেলা হয়েছে। শুক্রবার স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রাজ্য পুলিশ সদর দপ্তরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পুলিশের ডিজিপি অনুরাগ গুপ্তা এই তথ্য সামনে আনেন। তিনি বলেন, অবৈধ ভাবে প্রচুর জায়গায় আফিম চাষ হত। ইতিমধ্যেই ২৭ হাজার একর জমিতে চাষাবাদ করা গাঁজা-আফিম ধ্বংস করা হয়েছে। এছাড়াও ৩৪ কোটি টাকারও বেশি মাদক বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।

ডিজিপি আরও জানান, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত ৭০০-এরও বেশি সাইবার অপরাধীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পাশাপাশি, অপরাধীদের ডেরায় অভিযান চালিয়ে ৫০ লক্ষ টাকারও বেশি নগদ ও অবৈধ জিনিস বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া ‘প্রতিবিম্ব’ অ্যাপের মাধ্যমে ৪৭৪ জন সাইবার অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সাইবার হেল্পলাইন নম্বর ১৯৩০-এ প্রাপ্ত অভিযোগের ভিত্তিতে প্রায় ১৬ কোটি টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে, যার মধ্যে আদালতের নির্দেশে প্রায় ৮০ লক্ষ টাকা সরাসরি ভুক্তভোগীদের অ্যাকাউন্টে ফেরত দেওয়া হয়েছে। নারী সুরক্ষার ক্ষেত্রে পুলিশের উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে গুপ্তা বলেন, ‘মহিলা শক্তি কমান্ডো’ বাহিনী গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিটি জেলায় মহিলা হেল্প ডেস্ক খোলা হয়েছে, চালু হয়েছে আলাদা মহিলা হেল্পলাইন নম্বর এবং মহিলা থানাও সক্রিয় রয়েছে। নকশাল দমনের প্রসঙ্গে ডিজিপি জানান, গত ছয় মাসে ১৭ জন নকশালবাদী পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছে। ১৯৭ জনকে গ্রেপ্তার এবং ১০ জন আত্মসমর্পণ করেছে।

এই অভিযানে চারজন পুলিশকর্মী প্রাণ হারিয়েছেন, যাদের মধ্যে রয়েছেন সিআরপিএফের এসআই সুনীল কুমার মণ্ডল, এসআই সত্যবান কুমার সিং, কনস্টেবল পারনেশ্বর কচ এবং ঝাড়খণ্ড জ্যাগুয়ারের সুনীল ধান। এছাড়াও, অ্যান্টি টেররিস্ট স্কোয়াড (এটিএস) ১২ জন গ্যাংস্টার এবং নিষিদ্ধ সংগঠন ‘হিজব উত-তাহিরির’-এর ৫ জন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে বলে জানিয়েছেন রাজ্য পুলিশের ডিজি। জনগণের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখতে ঝাড়খণ্ড পুলিশের তরফে ‘পাবলিক গ্রিভান্স রেজোলিউশন প্রোগ্রাম’-এর আয়োজন করা হয়, যেখানে ৪০০০ অভিযোগের মধ্যে ৩৫০০টির নিষ্পত্তি হয়েছে। পুলিশের সহায়তা ও কল্যাণ তহবিল থেকে মোট ১৫ কোটিরও বেশি টাকা ৬২২ জন সুবিধাভোগীর হাতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে, এবং ১০৮ জন নির্ভরশীলকে সহানুভূতির ভিত্তিতে চাকরি দেওয়া হয়েছে। পুলিশকর্মীদের পদোন্নতিও হয়েছে। ৬৪ জন ইন্সপেক্টরকে ডিএসপি পদে, ৯ জন এএসআইকে এসআই পদে এবং ৯১ জন এসআইকে ইন্সপেক্টর পদে উন্নীত করা হয়েছে।