আজকাল ওয়েবডেস্ক: যাঁর মল তাঁর হুঁশ নেই, পাড়াপড়শির ঘুম নেই! বিষয়টি কিছুটা তেমনই, মানুষের মল অনেকের কাছেই মূল্যহীন। কিন্তু সেই বর্জ্যই হয়ে উঠতে পারে অন্যের প্রাণরক্ষার চাবিকাঠি। এমনই এক অভাবনীয় পদ্ধতি আবিষ্কার করলেন ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা। অন্ত্রের মারাত্মক সংক্রমণ, যা অ্যান্টিবায়োটিক দিয়েও সারানো দুঃসাধ্য, তার চিকিৎসায় তাঁরা তৈরি করেছেন ‘পু পিল’ বা মলের বড়ি। সম্প্রতি ব্রিটেনের স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাও এই পদ্ধতিকে ছাড়পত্র দিয়েছে।

বিষয়টি ঠিক কী?
এই ট্যাবলেট বা ক্যাপসুল আসলে ‘ফিক্যাল মাইক্রোবায়োটা ট্রান্সপ্লান্ট’ (এফ এম টি) পদ্ধতির একটি ক্ষুদ্র সংস্করণ। অনেকেই দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে অন্ত্রের সমস্যায় ভোগেন। বার বার ফিরে আসা ‘ক্লস্ট্রিডিওইডিস ডিফিসিল’ (সি.ডিফ) নামক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণই এর জন্য দায়ী। অনেক সময় রোগীর জীবন সংশয়ও দেখা দেয়। এই পরিস্থিতিতে, একজন সুস্থ মানুষের মল থেকে উপকারী ব্যাকটেরিয়াগুলিকে আলাদা করে পরীক্ষাগারে প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে ক্যাপসুলের মধ্যে ভরা হয় এবং সেই উপকারী ব্যাকটিরিয়া ট্যাবলেট বা ক্যাপসুল হিসাবে রোগীকে দেওয়া হয়।

রোগী সেই ক্যাপসুল সেবন করলে, সুস্থ ব্যক্তির অন্ত্রের জীবাণু রোগীর অন্ত্রে পৌঁছে যায়। সেখানে তারা ক্ষতিকর সি.ডিফ ব্যাকটেরিয়াকে প্রতিহত করে এবং অন্ত্রের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনে। বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের নেতৃত্বে হওয়া পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, এই পদ্ধতির সাফল্যের হার ৯০ শতাংশেরও বেশি। আগে এই রোগে আক্রান্ত হলে অ্যান্টিবায়োটিক বা কোলনোস্কোপি ছাড়া গতি ছিল না। কিন্তু এখন তা টুক করে গিলে ফেলা যায়, এমন ক্যাপসুল আকারে আসায় রোগীদের জন্য এটি অত্যন্ত সুবিধাজনক হয়েছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই ‘পু পিল’ এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।