নিউইয়র্ক সিটির নতুন নির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানিকে নিয়ে সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় এক মজার ঘটনাকে কেন্দ্র করে হইচই পড়ে গেছে। এক নারী জানিয়েছেন, তিনি কয়েক বছর আগে একটি ডেটিং অ্যাপে মামদানির সঙ্গে ম্যাচ হয়েছিলেন, কিন্তু তাঁর উচ্চতা দেখে কথা না বলার সিদ্ধান্ত নেন! এখন সেই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই সেটি ভাইরাল হয়েছে।
2
10
ঘটনাটি শুরু হয় ওই নারীর টিকটক পোস্ট থেকে। সেখানে তিনি বলেন, “একদিন হঠাৎ মনে পড়ল, কয়েক বছর আগে এনওয়াইসি-র হিঞ্জ ডেটিং অ্যাপে জোহরান মামদানির সঙ্গে আমার ম্যাচ হয়েছিল। কিন্তু আমি উত্তর দিইনি, কারণ তাঁর প্রোফাইলে উচ্চতা লেখা ছিল হয় ৫’১১’’ বা ৫’১০’’—আর আমি জানতাম, এর মানে প্রায়ই বাস্তবে ৫’৯’’ হয়। এখন বুঝি, ওঁর সততাই ছিল প্রশংসনীয়—অন্তত অন্য অনেক পুরুষের চেয়ে তিনি বেশি সৎ ছিলেন।”
3
10
ওই পোস্টটি পরে এক্স-এ শেয়ার করেন এক ব্যবহারকারী, ক্যাপশনে লেখেন “Fumble of the century” — অর্থাৎ শতাব্দীর সবচেয়ে বড় ‘ভুল’! মুহূর্তেই পোস্টটি ভাইরাল হয়ে যায়, এখন পর্যন্ত প্রায় ৪০ লক্ষেরও বেশি মানুষ এটি দেখেছেন।
4
10
ভিডিওর মন্তব্য বিভাগে একের পর এক মজার প্রতিক্রিয়া আসছে। অনেক নারী লিখেছেন, “আমরা সবাই এই পরিস্থিতির সঙ্গে সম্পর্ক অনুভব করতে পারি!” কেউ কেউ আবার মজা করে বলেছেন, “উচ্চতা সবকিছু নয়, কিন্তু এবার তো ইতিহাসের সবচেয়ে বড় মিস।”
5
10
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল জোহরান মামদানির নিজের প্রেমের গল্পও শুরু হয়েছিল সেই একই অ্যাপে! তিনি তাঁর স্ত্রী, ইলাস্ট্রেটর রামা দুয়াজির সঙ্গে হিঞ্জেই পরিচিত হন। এক পডকাস্টে মামদানি হেসে বলেন, “আমি আমার স্ত্রীর সঙ্গে হিঞ্জে পরিচিত হয়েছিলাম, তাই বলব—ডেটিং অ্যাপে এখনও আশা আছে।”
6
10
চলতি বছরের শুরুতেই মামদানি ও দুয়াজি নিউইয়র্ক সিটি ক্লার্ক অফিসে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তবে এই ব্যক্তিগত গল্পের বাইরে, মামদানির বিজয় নিজেই এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। জোহরান কওমে মামদানি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম ও প্রভাবশালী শহর নিউইয়র্কের ইতিহাসে প্রথম মুসলিম, প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত এবং প্রথম আফ্রিকা-জন্মা মেয়র হিসেবে ইতিহাস গড়েছেন। তাঁর বিজয় প্রগতিশীল রাজনীতির জন্য এক নতুন অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
7
10
একসময় যিনি ছিলেন আন্ডারডগ প্রার্থী, সেই মামদানি নিজের ক্যারিশমা, কর্মজীবী শ্রেণির জন্য লড়াই এবং প্রগতিশীল নীতির মাধ্যমে ভোটারদের মন জয় করেন। শহরের পাঁচটি বরোর মানুষই তাঁর বার্তায় সাড়া দিয়েছেন।
8
10
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, তাঁর এই জয় শুধু নিউইয়র্কের নয়, বরং মার্কিন রাজনীতির বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে এক গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত। এটি প্রমাণ করে যে, প্রগতিশীল ডেমোক্র্যাটদের জন্য এখনও শহরজুড়ে গভীর সমর্থন রয়েছে—বিশেষ করে যখন দলটি অভ্যন্তরীণ বিভাজনের মুখে পড়েছে এবং প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাজনৈতিক প্রভাব মোকাবিলার উপায় খুঁজছে।
9
10
তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু এখন সেই নারী, যিনি একসময় তাঁর উচ্চতা নিয়ে ‘না’ বলেছিলেন। নেটিজেনদের রসিক মন্তব্য—“ওই উত্তর না দেওয়া, হয়তো জীবনের সবচেয়ে বড় সুযোগ হারানো!”
10
10
যাই হোক, ইতিহাস এখন বলছে—যাঁকে তিনি একসময় উপেক্ষা করেছিলেন, তিনিই আজ আমেরিকার সবচেয়ে শক্তিশালী শহরের নেতৃত্বে।