মুম্বইয়ের বোরিভালি এলাকায় এক প্রবীণ আইনজীবীর জীবনে ঘটেছে এক অবিশ্বাস্য ঘটনা। ৬৩ বছরের ওই আইনজীবী অনলাইনে মাসাজ সার্ভিস খুঁজতে গিয়ে পড়েন এক প্রতারণা চক্রের ফাঁদে। প্রথমে তাঁকে আরাম দেওয়ার নামে ঘরে এসে পরিষেবা দিলেও, পরে একই পরিষেবার অজুহাতে তাঁকে ব্ল্যাকমেল করা হয় নগ্ন ভিডিও দেখিয়ে। সম্মানরক্ষার তাগিদে প্রাথমিকভাবে অভিযুক্তদের ৫০ হাজার টাকা দেন তিনি।
2
6
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি বোরিভালিতে একটি নতুন ফ্ল্যাট কেনেন ওই আইনজীবী। গত জুলাই মাসে তিনি অনলাইনে ‘হোম মাসাজ সার্ভিস’ খুঁজতে গিয়ে কানহাইয়া নামে এক ব্যক্তির সংস্পর্শে আসেন। এক ঘণ্টা মাসাজের জন্য কানহাইয়া ৭ হাজার টাকা দাবি করে। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, ১১ জুলাই ওই ব্যক্তি আইনজীবীর ফ্ল্যাটে গিয়ে সার্ভিসও দেন। প্রথম সাক্ষাতে কোনও অস্বাভাবিকতা না থাকায় বৃদ্ধও তাঁর উপর আস্থা রাখেন।
3
6
এরপর ৭ সেপ্টেম্বর ফের মাসাজ নেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন ওই আইনজীবী। কিন্তু এবার কানহাইয়া নিজের সহকারী মুন্না নামে এক যুবককে পাঠায়। অভিযোগ, মাসাজ চলাকালীন মুন্না বৃদ্ধকে পোশাক খুলে ফেলতে বলেন এবং গোপনে তাঁর ভিডিও মোবাইলে রেকর্ড করতে শুরু করেন। আচমকা পরিস্থিতির অস্বাভাবিকতা টের পেয়ে আইনজীবী মাসাজ বন্ধ করে দেন, কিন্তু ততক্ষণে তাঁর অজান্তেই রেকর্ড হয়ে যায় আপত্তিকর ভিডিও।
4
6
এরপর শুরু হয় হুমকি ও ব্ল্যাকমেল। পুলিশ জানিয়েছে, ওই ভিডিও প্রকাশ করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মুন্না ও কানহাইয়া দুইজনে মিলে বৃদ্ধের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে। সম্মানহানির ভয়ে প্রথমে ৫০ হাজার টাকা দিতে বাধ্য হন ওই আইনজীবী। তবে, এর কিছুদিন পরেই দুজন ফের হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করে আরও ৬ লক্ষ টাকা দাবি করতে থাকে এবং তাঁর আত্মীয়স্বজনদের কাছে ভিডিও পাঠানোর হুমকি দেয়।
5
6
প্রবীণ আইনজীবী এরপর আর নীরব থাকেননি। হুমকি ও মানসিক যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে তিনি বোরিভালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পাওয়ার পরই পুলিশ তদন্তে নামে এবং ফোন নম্বর ও ডিজিটাল ট্রেইল অনুসরণ করে অভিযুক্তদের খোঁজ শুরু করে। একাধিক সূত্র ধরে তদন্ত চালিয়ে শেষ পর্যন্ত মুম্বইয়ের খেরওয়াড়ি ও অন্ধেরি অঞ্চল থেকে দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়।
6
6
ধৃতদের নাম সমীর আলি (২১) ও ভূপেন্দ্র সিং (২৫)। পুলিশ জানিয়েছে, এরা পেশাদার প্রতারক এবং আগে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে একই কৌশলে অর্থ আদায় করেছে। ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে একাধিক মোবাইল ফোন, যেগুলিতে বিভিন্ন ভুক্তভোগীর আপত্তিকর ভিডিও রয়েছে বলে জানা গেছে। তদন্তকারীরা মনে করছেন, এই ঘটনাটি শহরে সক্রিয় এক বৃহৎ অনলাইন ব্ল্যাকমেল চক্রের সঙ্গে যুক্ত, যার জাল গোটা মুম্বইজুড়ে বিস্তৃত। পুলিশ এখন কানহাইয়া নামে মূল অভিযুক্তকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছে।