পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা জেলে প্রায় দু’বছর ধরে বন্দি ইমরান। গত সপ্তাহেই শোনা গিয়েছিল পাকিস্তানের জেলে বন্দি প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের নাকি মৃত্যু হয়েছে! ঝড়ের গতিতে নেটপাড়ার মাধ্যমে গোটা বিশ্বে এই খবর ছড়িয়ে পড়ে। যদিও জেল কর্তৃপক্ষের তরফে ইমরানের মৃত্যুর খবর ভুয়ো ঘোষণা করা হয়। এরপরেই পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) এর সমর্থকরা প্রবল বিক্ষোভ শুরু করেছিলেন। দাবি একটাই, জেলবন্দি ইমরানের খানের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দিতে হবে। অবশেষে সেই অনুমতি মেলে। জেলে গিয়ে প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলেন তাঁর বোন উজমা খানুম। মঙ্গলবার দাদার সঙ্গে দেখা করিয়ে বেরিয়েই তাঁর দাবি, সুস্থই আছেন ইমরান! তবে, জেলের মধ্যে তাঁকে মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে। এহেন আবহে ইমরান খানকে নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করলেন তাঁর পুরনো বন্ধু মুনমুন সেন।
গত আট ও নয়ের দশকে ইমরান-মুনমুনের সম্পর্ক নিয়ে বিস্তর চর্চা চলেছিল সংবাদপত্র থেকে চায়ের কাপের তর্কে। যদিও সেই মুচমুচে গুঞ্জনে পাত্তা দেননি ইমরান-মুনমুনের কেউই। অভিনেত্রী সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক স্রেফ বন্ধুত্বের। অন্যদিকে, ইমরানের মুখেও একাধিকবার শোনা গিয়েছে তাঁর বন্ধুর প্রশংসা। জেলে বন্দি বন্ধুর জন্য খানিক উদ্বিগ্ন এই বর্ষীয়ান অভিনেত্রী। আজকাল ডট ইন-এর সঙ্গে সেই বিষয়ে কথা বলাকালীন তা ফুটে উঠল তাঁর গলায়। অল্প কথায় মুনমুন সেন বললেন, “দেখুন, আমি ইমরানের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে কোনওরকম মন্তব্য করব না। পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর আগে আমার কাছে ইমরানের পরিচয় একজন ক্রিকেট কিংবদন্তি, ভাল মানুষ এবং আমার বন্ধু।”

খানিক থেমে মুনমুন ফের বলে উঠলেন, “আমি আশা করি, ইমরান ভাল আছে। ওকে একটু ঠিকমতো খেতে দেওয়া হোক। ঠিকমতো খাওয়ার অর্থ কিন্তু রাজকীয় ভোজ নয়, ইমরান যে বেসিক ডায়েটটা মেনে চলতেন, সেটুকু, সেরকম খাবারই ওকে খেতে দেওয়া হোক না। আর ব্যায়াম। শারীরিকভাবে ফিট থাকতে ইমরানের জন্য ব্যায়াম করার ব্যবস্থা করা হোক।”
সুচিত্রা-কন্যা আরও বললেন, “ইমরান আমার বন্ধু। যদিও এইমুহূর্তে আমরা একে অপরের সঙ্গে কোনওভাবেই যুক্ত নই। ক্রিকেটের পাশাপাশি রাজনীতিতেও সে এত বড় নাম অর্জন করেছে। যতদিন আমি তাকে চিনি, সে সবসময় তার দেশের জন্য ভাল চেয়েছে। তাই এটা খুবই মর্মান্তিক যে আজ তাকে তার নিজের মাতৃভূমিতে এরকম পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে। বহু বছর দেখা হয়নি ইমরানের সঙ্গে। ওর জন্য চিন্তা হচ্ছে, খুব খারাপ লাগছে, ওর পরিবারের জন্যও। কিন্তু ওই যে যখন আপনি রাজনীতিতে প্রবেশ করবেন, তাতে ঝুঁকি তো থাকেই, সেটাও তো অস্বীকার করা যায় না। তাই না?”
ইমরান খানের জেলজীবন ঘিরে আন্তর্জাতিক স্তরে ইতিমধ্যেই উদ্বেগ বাড়ছে। সেই তালিকায় এবার যুক্ত হল এক পুরনো বন্ধুত্বের মানবিক কণ্ঠও।
